পদার্থের তাপমাত্রা, চাপ ও আয়তন একে অপরের উপর নির্ভরশীল এবং প্রভাব বিস্তার করে। ফলে এমন চক্রে রেফ্রিজারেন্টের ঘনীভবন ও বাষ্পীভবন কাজে চাপের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, যা নিম্নরূপ-
ঘনীভবনের (Condensation) সময় চাপের প্রভাব
যে প্রক্রিয়ায় বাষ্পীয় পদার্থ ঘনীভূত হয় তাকে ঘনীভবন বলে। ঘনীভবনের সময় উচ্চ চাপের গ্যাস তাপ ছেড়ে দেয় এবং ঘনীভূত হয় । বৈশিষ্ট্যানুযায়ী ঘনীভবনের জন্য প্রয়োজন বাষ্পীয় রেফ্রিজারেন্টকে উচ্চ চাপে সংকুচিত হওয়া। কম্প্রেসরের সাহায্যে উচ্চ চাপে তা সংকুচিত হয় এবং চাপ অপরিবর্তিত রেখে কম্প্রেসরের মাধ্যমে তাপ অপসারণ করে তরলে রূপান্তরিত হয়।
বাষ্পীভবনের (Evaporation) সময় চাপের প্রভাব
যে পদ্ধতিতে তরল পদার্থ বাষ্পে পরিণত হয় তাকে বাষ্পীভবন বলে। বাষ্পীভবন কালে তরল পদার্থ নিম্নচাপে প্রচুর সুপ্ততাপ/ ল্যাটেন্ট হিট শোষণ করে। ফলে ঐ এলাকা শীতল হয়। বাষ্পীভবনের জন্য প্রয়োজন তরল রেফ্রিজারেন্টকে নিম্নচাপে সম্প্রসারিত হওয়া। নিয়ন্ত্রকের সাহায্যে নিম্নচাপে তা ইভাপোরেটরে সম্প্রসারিত হয় এবং প্রচুর সুপ্ততাপ শোষন করে সম্পৃক্ত বাষ্পে রূপান্তরিত হয়। তরলের ওপর চাপ কমালে তার স্ফুটনাংক কমে। রেফ্রিজারেন্ট তরলে রূপান্তরের জন্য উচ্চচাপ এবং বাস্পে রূপান্তরের জন্য নিম্নচাপের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।
তাপমাত্রা, চাপ এবং বাষ্পীভবনের সম্পর্ক
পানি ও অন্যান্য আদর্শ গ্যাসের তাপমাত্রা, চাপ ও বাষ্পীভবনের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সমুদ্র সমতলে স্বাভাবিক বায়ুর চাপ সবচেয়ে বেশি (1.03 Kg/cm2 ) এবং এখানে পানি 100°C তাপমাত্রায় ফুটে। সমুদ্র সমতল হতে ১০০০ মিটার উপরে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায় (0.1 Kg/cm) এবং বয়েলিং পয়েন্ট 40°C কমে যায়। পক্ষান্তরে চাপ বেড়ে গেলে বাষ্পীভবনের তাপমাত্রাও বেড়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ৩০০০ মিটার উপরে বায়ুর চাপ 0.7 Kg/cm2 । উক্ত চাপে 440°C তাপমাত্রায় পানি বাষ্পীভূত হয়। অপরদিকে চাপ দ্বিগুণ হলে পানি 120°C তাপমাত্রায় বাষ্পীভূত হবে । বায়ুশূন্য/ভ্যাকুয়াম অবস্থায় 0.00952 PSI চাপে পানি 5°C উষ্ণতায় বাষ্পীভূত হয়।
আরও দেখুন...