সরল দোলকের সাহায্যে g-এর মান নির্ণয়

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ১ম পত্র | | NCTB BOOK
39
39

মূলতত্ত্ব (Theory): সরল দোলকের সাহায্যে কোনো স্থানের অভিকর্ষজ ত্বরণ নির্ণয় করা যায়। এর জন্য সমীকরণটি হলো,

T=2πLg

এখানে, T= দোলন কাল L কার্যকর দৈর্ঘ্য এবং g- অভিকর্ষজ ত্বরন।

উপরের সমীকরণের উভয় পার্শ্বকে বর্গ করে পাই,

T2=4π2Lg

বা, g = 4π2LT2

π একটি ধ্রুব রাশি ও একটি নির্দিষ্ট মানে খুব। কাজেই ঐ স্থানে L/T2-এর একটি নির্দিষ্ট মান পাওয়া যাবে এবং গড় L/T2-এর মান সমীকরণে বসিয়ে g-এর মান নির্ণয় করা যাবে।

পরীক্ষা: 

প্রথনে একটি স্ট্যান্ড হতে হুকের সাহায্যে সুতা খুলিয়ে সুতার হাতে বরকে আটকে সরল দোলক তৈরি করা হয় [চিত্র ৮.৩] এরপর মিটার স্কেলের সাহায্যে একটি সরল দোলকের সুতার দৈর্ঘ্য এবং স্লাইড ক্যালিপার্সের সাহায্যে দোলকের গোলাকার পিন্ডের ব্যাস হতে ব্যাসার্ধ। জেনে দোলকের কার্যকর দৈর্ঘ্য, L = l+r নির্ণয় করা হয়। এরপর পর্যবেক্ষণ স্থানে দোলকটিকে 4° অপেক্ষা কম কৌণিক বিস্তারে দুলতে দিয়ে একটি স্টপ ওয়াচের সাহায্যে তার ১০টি পূর্ণদোলনের সময় কাল নির্ণয় করে 20 দ্বারা ভাগ করে দোলন কাল T =t/20 বের করা হয় এবং দোলনকালের বর্গ নির্ণয় করা হয়। সুতরাং দৈর্ঘ্য I পরিবর্তন করে অনুরূপভাবে বিভিন্ন কার্যকর দৈর্ঘ্যে নোলকের দোলনকাল নির্ণয় করা হয় এবং প্রত্যেক ক্ষেত্রে দোলনকালের বর্ণ বের করা হয়।

চিত্র :৮.৩

 

(২) পাহাড়ের উচ্চতা নির্ণয়

সরল দোলকের সাহায্যে কোনো পাহাড়ের উচ্চতা অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠ হতে পাহাড়ের চূড়া বিন্দুর মধ্যবর্তী দূরত্ব নির্ণয় করা যায়। চিত্র[ ৮.৪]। প্রথমে পাহাড়ের পাদদেশে অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠে সরল দোলকের সাহায্যে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান উপরের নিয়মে নির্ণয় করা হয়। মনে করি এই মান -g

চিত্র : ৮.৪

এর পর পাহাড়ের চূড়ার অভিকর্ষজ ত্বরণের মান অনুরূপভাবে নির্ণয় করা যায়। 

ধরি এই মান = g

হিসাব ও গণনা : নিউটনের মহাকর্ষজ সূত্রানুসারে পাহাড়ের পাদদেশে,

g=GMR2…. (8.11)  

এবং পাহাড়ের চূড়ায়,

g1=GMR+h2… (8.12) 

এখানে, M = পৃথিবীর ভর, G = মহাকর্ষীয় ধ্রুবক, R = পৃথিবীর ব্যাসার্ধ এবং h  = পাহাড়ের উচ্চতা

সমীকরণ (8.11)-কে সমীকরণ (8.12) দ্বারা ভাগ করে আমরা পাই,

gg1=R+h2R2=1+hR2

h=g1g-1R

সুতরাং R. g এবং g1-এর মান জেনে h এর মান নির্ণয় করা যায়।

সময় নির্ণয় 

  দোলক ঘড়িতে দোলকের সাহায্যে সময় মাপা হয়। এ সব দোলক সাধারণত ধাতুর দ্বারা নির্মিত। শীতকালে তারের দৈর্ঘ্য কমে যায় এবং গ্রীষ্মকালে দৈর্ঘ্য বেড়ে যায়। সুতরাং শীতকালে ঘড়ির দোলন কাল কমে যায় এবং ঘড়ি দ্রুত চলে। গ্রীষ্মকালে ঘড়ির দোলন কাল বেড়ে যায় এবং ঘড়ি ধীরে চলে। সাধারণ দোলক ঘড়ির পিণ্ডের নিচের একটি স্ক্রুকে প্রয়োজনমতো ঘুরিয়ে পিণ্ডকে উঠা-নামা করিয়ে দোলন কাল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। 

মাটির নিচে বা উঁচু পাহাড়ের উপর g-এর মান কম। কাজেই উঁচু পাহাড়ে বা মাটির নিচে দোলকের দোলন কাল বেশি হয়। এর অর্থ ঘড়ি ধীরে চলে। বিষুব অঞ্চলে g-এর মান কম এবং মেরু অঞ্চলে g-এর মান বেশি। অতএব একটি দোলক ঘড়িকে বিষুব অঞ্চল হতে মেরু অঞ্চলে নিলে ঘড়িটি দ্রুত চলে।

Content added || updated By
Promotion