কালাম পাঠ্যবইয়ের পাশাপশি বিভিন্ন বই পড়তে ভালোবাসে। অবসর সময়ে সে নানা রকম বই পড়ে। সে মনে করে অন্যান্য বই পড়লে তার জ্ঞানের রাজ্য অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে। সে বই পড়ার আগ্রহ থেকে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সদস্য হয়। তার মা কখনো তাকে বাধা না দিলেও বাবাসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন বিষয়টি ভালো চোখে দেখে না। তাঁরা মনে করে ভালো ফলাফল করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে শুধুমাত্র পাঠ্যবই পড়াই বাঞ্ছনীয়।
দৃশ্যপট-১:
"তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়
গাছের ছায়ায় বনের লতায় উদাসী বনের বায়;
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি।"
দৃশ্যপট-২:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর "পুরাতন ভৃত্য" কবিতায় পুরাতন ভৃত্য কেষ্ট সম্পর্কে বলেছেন -
"বড় প্রয়োজন ডাকি প্রাণপণ চীৎকার করি 'কেষ্টা'
যত করি তাড়া নাহি পাই সাড়া, খুঁজে ফিরি সারা দেশটা।
তিনখানা দিলে একখানা রাখে, বাকি কোথা নাহি জানে;
একখানা দিলে নিমেষ ফেলিতে তিনখানা করে আনে।"
সৈকতের বাবা খাগড়াছড়ি জেলার বন বিভাগের কর্মকর্তা। এসএসসি পরীক্ষা শেষে সে বাবার কাছে খাগড়াছড়ি বেড়াতে যায়। সেখানে জঙ্গলাবৃত্ত পাহাড়ি পরিবেশ। বিকাল হতে না হতেই বুনো মশাদের উপদ্রব শুরু হয়। চারদিকে ডেঙ্গু জ্বরের ছড়াছড়ি যেন নৈমিত্তিক ব্যাপার। রাতের অন্ধকার নামলেই শোনা যায় বিভিন্ন বন্য প্রাণীর ডাক। ভয়ে গা ছম ছম করে তার। আছে সাপের ভয়ও। দিনের বেলাতেও একাকী বাইরে বেড়ানো যায় না। এ অবস্থা ভালো লাগে না তার। তাই কয়েক দিন যেতে না যেতেই সে নিজ বাসা ঢাকায় ফিরে আসতে চায়।
শফিক ঢাকায় একটি কোম্পানিতে নাইটগার্ডের চাকরি করে। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত তার ডিউটি। সারারাত কোম্পানির মালামালের পাহাড়াদারীর গুরুদায়িত্ব সে বিশ্বস্ততার সাথে পালন করে। ছয় মাস পর পর সে ছুটিতে বাড়ি আসে। এ দিকে তার স্ত্রী- সন্তানেরা তার পথ চেয়ে বসে থাকে। কবে সে ফিরবে। স্বামীর কথা ভাবতে ভাবতে তার স্ত্রীর কতো নির্ঘুম রাত কাটে।
ডাকাতিয়া নদীতে ট্রলার ডুবে মারা যায় আলমের মা-বাবা। ঘটনাক্রমে বাড়িতে থাকায় বেঁচে যায় আলম ও তার ছোট বোন সাদিয়া। অসহায় আলম বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে মোটর গ্যারেজে কাজ নেয়। ঘটনা শুনে গ্যারেজের মালিকের স্ত্রী তাদেরকে বাড়িতে ডেকে নেয়। তাদের আর গ্যারেজে কাজ করতে হয়নি। মালিক ও তাঁর স্ত্রীর স্নেহাদরে তারা দুজনেই এখন লেখাপড়া শিখছে।
পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ থেকে নিচিন্তপুরবাসীকে রক্ষার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন স্কুল শিক্ষক জালাল মিয়া। তিনি গেরিলা বাহিনী গঠন করে পাক সেনাদের চেকপোষ্ট ও ক্যাম্প ইত্যাদিতে ঝটিকা আক্রমণ করে সরে পড়তেন। গেরিলা বাহিনীর দুঃসাহসিক বিভিন্ন অপারেশন পাক সেনাদের ঘুম হারাম করে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাক হানাদার বাহিনী জালাল মিয়ার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। এমন কি তাঁর বৃদ্ধ পিতা-মাতাসহ স্বজনদের গুলি করে হত্যা করে। স্বজন হারানোর ব্যথা নিয়ে জালাল মিয়া সিদ্ধান্ত নেন যে, বিজয়ের নিশান উড়িয়েই তিনি গ্রামে ফিরবেন।
আলী সাহেব বিয়ে করেছেন দশ বছর হলো। কিন্তু তিনি এখনও নিঃসন্তান। সাত পাঁচ ভেবে আলী সাহেবের মা ফকিরের কাছ থেকে পানি পড়া আনেন। এতে আলী সাহেব রাগ করলে তাঁর মা বলেন, এরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা, সকল অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। বাবা চাইলে নিশ্চয়ই ঘর আলোকিত করে সন্তান আসতে পারে। কিন্তু আলী সাহেব পড়া পানি না খেয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যান।
কলির মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে। কলি পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। কিন্তু কলির সৎ মা ও তার বাবা জোর করে এক বৃদ্ধের সাথে বিয়ে ঠিক করে। কিশোরী কলি বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষককে জানায়। শিক্ষক আইনের আশ্রয় নিয়ে কলির বিয়ে বন্ধ করেন। তাকে নতুন জীবনের সন্ধান দেন। কলির বাবা ও তার ভুল বুঝতে পারে।