SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - পোশাকের যত্ন ও পারিপাট্য | NCTB BOOK

পোশাক ব্যক্তিসত্তার একটা অপরিহার্য অঙ্গ। পোশাক পরিধান মানুষর মৌলিক, মানবিক অধিকার। আর ব্যক্তিত্ব শব্দটির মনোবৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ হলোসামাজিক অবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য ব্যক্তির গঠন, আচরণের ধরন, আগ্রহ, ভাবভঙ্গি, সামর্থ্য এবং প্রবণতার সংহতি এবং ঐক্য।' অর্থাৎ ব্যক্তিত্ব দেহ মনের জীবন্ত ঐক্য বিশেষ

পোশাকের মাধ্যমে ব্যক্তি তার মনের অন্তর্নিহিত অনুভূতিকে প্রকাশ করে থাকে। ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পোশাকের সুনিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। পোশাক ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশের মাধ্যম বা হাতিয়ার। যেমন

  • পুরানো পোশাক বদলিয়ে নতুন পোশাক পরলে মন প্রফুল্লতায় ভরে উঠে। চেহারায়ও উজ্জ্বলতা দেখা যায়
  • পোশাক পরিবেশের সাথে মানানসই হলে মনে কোনো সংশয় থাকে না, নিজেকে নিঃসংকোচে প্রকাশ করাযায়। ব্যক্তিত্বে সাবলীল ভাব ফুটে উঠে।
  • পরিবেশ অনুযায়ী সঠিক পোশাক না হলে মনে অস্বস্থি সৃষ্টি হয় এবং জড়তা তৈরি হয়। ফলে শরীর, মন আড়ষ্ঠ হয়ে ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশে বাধা সৃষ্টি হয়। নিজেকে আড়াল করার প্রবণতা দেখা যায়
  • পোশাকের আকার, নকশা, জমিন, রং ইত্যাদি ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব ফেলে। জাঁকজমকপূর্ণ নকশা বহুল, বড় ছাপা ভারী জমিনের বস্ত্রের পোশাকে মোটা মেয়েদের আরও মোটা দেখায়। কম নকশাযুক্ত ছোট ছোট ছাপা এবং হালকা জমিনের বস্ত্রের তৈরি পোশাক খাটো মোটা দেহাকৃতির মেয়েদের জন্য উপযোগী। পাতলা মেয়েদের জন্য ঢিলেঢালা, পুরো হাতা, বড় ছাপা, গাঢ় রং ছোট গলার পোশাক উপযোগী। চেক বা ডুরে কাপড় ব্যবহারেও দেহের উপর প্রভাব পড়ে। যেমন, লম্বা বা খাড়া রেখার পোশাকে খাটো মেয়েদের দেহাকৃতি কিছুটা লম্বা দেখায়। অপর দিকে আড়াআড়ি রেখায় অতিরিক্ত লম্বা মেয়েদের কিছুটা খাটো দেখায়
  • দেহের ত্বক, চুল, চোখের রঙের সাথে মানানসই পোশাকের রং নির্বাচন করে দেহের ক্ষীণতা স্থূলতা ঢাকা যায়। নীল, সবুজ, নীলাভ সবুজ ইত্যাদি স্নিগ্ধ রঙের পোশাকগুলো স্থূল দেহের মেয়েদের আপাতভাবে হালকা দেখায়। অন্যদিকে লাল, হলুদ, কমলা ইত্যাদি প্রখর রংগুলো খাটো পাতলা মেয়েদের জন্য উপযোগী। যাদের দেহের বর্ণ উজ্জ্বল তাদের সব রকমের রঙের পোশাকে মানায়। শ্যামলা অনুজ্জ্বল বর্ণের মেয়েদের জন্য হালকা প্রতিফলনকারী কমলা, হলুদ, গোলাপি ইত্যাদি রঙের প্রতিফলনে দেহের বর্ণ কিছুটা উজ্জ্বল দেখায়।
  • উজ্জ্বল রংকে আনন্দদায়ক রং বলা হয়। বিভিন্ন আনন্দ উৎসবে এই রংগুলো পোশাকে ব্যবহার করা হলে ব্যক্তিত্বেও তার প্রভাব পড়ে। আবার কোনো শোক অনুষ্ঠানে হালকা রং, সাধাসিধে ডিজাইনের পোশাক পরা হলে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটে।
  • সামাজিক রীতি-নীতি সংস্কৃতির প্রতি লক্ষ রেখে পোশাক পরিধান করা হলে অধিক ব্যক্তিত্বপূর্ণ মনেহয়। উগ্র, অমার্জিত পোশাক সুন্দর ব্যক্তিত্বের পরিপন্থী
  • পোশাক ব্যক্তিত্বের পারস্পরিক ঐক্য স্থাপনের জন্য সাজসজ্জার আনুষঙ্গিক উপকরণগুলোর যেমন - জুতা, ব্যাগ, বেল্ট, কেশ বিন্যাস ইত্যাদির সমন্বয় ঘটাতে হয়।
  • পোশাকের মাধ্যমে সামগ্রিক সাজসজ্জায় পারিপাট্য সৃষ্টি করার একটা অন্যতম শর্ত হলো পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা। এলোমেলো চুল, ময়লা যুক্ত বড় বড় নখ পোশাকের মাধ্যমে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে বাধা সৃষ্টি করে

অন্তর্মুখী, বহির্মুখী এবং উভয়মুখী ব্যক্তিত্বের লোক রয়েছে। ব্যক্তিত্বের ভিন্নতা রুচিতে প্রভাব ফেলে। কিন্তু যে ধরনের ব্যক্তিত্বেরই হোকনা কেন সুরুচিপূর্ণ মানানসই পোশাক ব্যক্তিত্বকে উজ্জ্বল করে। কুরুচিপূর্ণ উদ্ভট, বেখাপ্পা পোশাক ব্যক্তিত্বকে ম্লান করে দেয়।

কাজপোশাকের মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের প্রকাশ কীভাবে ঘটে বুঝিয়ে লেখ।

Content added By
Promotion