SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

ষষ্ঠ শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ইসলাম শিক্ষা - কুরআন ও হাদিস শিক্ষা | NCTB BOOK

পরিচয়

সূরা আল-ফালাক পবিত্র কুরআন মাজিদের ১১৩ নম্বর সূরা। এই সূরার আয়াত সংখ্যা এটি। সুরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সূরায় ব্যবহৃত আল-ফালাক শব্দ থেকে সুরাটির নামকরণ করা হয়েছে।

সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস এর মাঝে বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। এই সূরা দুটি একসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে। হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, লাবিদ ইবন আসিম নামক এক ইয়াহনি তার কন্যার মাধ্যমে মহানবি (সা.) এর উপর যাদু করেছিল। তারা গোপনে মহানবি (সা.) এর একটি চুল সংগ্রহ করে তাতে এগারোটি গিরা দিয়ে যাদু করে। মহানবি (সা.) যাদুর প্রভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং খুব কষ্ট পান। তখন আল্লাহ তা'আলা এই সূরা দুটি একসঙ্গে অবতীর্ণ করেন। মহানবি (সা.) কে নির্দেশ দেয়া হয় যেন তিনি সূরা দু'টির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে যাদু থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। সূরা দুটিতে মোট এগারোটি আয়াত রয়েছে। এক একটি আয়াত পাঠ করে গিরাতে ফুঁক দিলে যাদুর প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়। মহানবি (সা.) যাদুর ক্রিয়া থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং পূর্ণ সুস্থ হয়ে যান।

হাদিসে আছে- এই সূরা দুটি পড়ে ফুঁক দিলে যাদুর ক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। আর যে নিয়মিত সূরা দুটি পাঠ করে তাকে কোন যাদু ক্ষতি করতে পারে না। মহানবি (সা.) রাতে ঘুমানোর সময় সূরা দুটি পড়ে দু'হাতে ফুঁক দিয়ে পুরো শরীর মুছে নিতেন।

 

ব্যাখ্যা

সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস সূরাদ্বয়ের উপকারিতা ও কল্যাণ অপরিসীম। এই সূরা দুটিতে কীভাবে বিভিন্ন ক্ষতিকর জিনিস থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে হবে তা শেখানো হয়েছে। সূরা আন-নাস এ বিশেষভাবে শয়তানের কুমন্ত্রণা ও অনিষ্ট থেকে বাঁচার পদ্ধতি শেখানো হয়েছে। আর সূরা আল-কালাকে শেখানো হয়েছে বিভিন্ন মাখলুকের অনিষ্ট থেকে বাঁচার উপায়। আকাশ এবং পৃথিবীর সবকিছুই মহান আল্লাহ তা'আলার সৃষ্টি। কোনো কিছুই তিনি অনর্থক সৃষ্টি করেননি। তাঁর প্রতিটি সৃষ্টির পিছনেই রয়েছে হিকমত এবং কল্যান।

আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য কিছু ক্ষতিকর জিনিস সৃষ্টি করেছেন, যেন বান্দা সেসবের ক্ষতির ভয়ে পৃথিবীর সবকিছু থেকে অমুখাপেক্ষি হয়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে। এই সূরায় অন্ধকার রাতের বিপদ থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। কারণ রাতের অন্ধকারেই অধিকাংশ খারাপ কাজ সংঘটিত হয়ে থাকে। আর যাদুকররা তাদের ক্ষতিকর যাদুর কাজ সাধারণত রাতের বেলায় করে থাকে। সূরার চার নং আয়াতে নারী যাদুকরের কথা বলা হলেও এখানে নারী ও পুরুষ উভয় প্রকার যাদুকর উদ্দেশ্য। কারণ যাদুকর পুরুষ হতে পারে আবার মহিলাও হতে পারে। উভয় প্রকার যাদুকরের অনিষ্ট থেকে পানাহ চাওয়া হয়েছে। এছাড়াও সূরার শেষ আয়াতে হিংসুকের হিংসা থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। সূরা আল-ফালাক এবং সূরা আন-নাস পাঠ করে শরীরে ফুঁক দিলে আল্লাহ তাআলা সব ধরনের অনিষ্ট থেকে মানুষকে আশ্রয় প্রদান করেন।

 

সূরা আল-ফালাক-এর নৈতিক শিক্ষা

পৃথিবীতে ভালো-মন্দ, ক্ষতিকর, উপকারী সবকিছুর স্রষ্টা মহান আল্লাহ তা'আলা। সবই তাঁর অধীন। তাই এসবের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য এবং এগুলোর উপকার লাভ করার জন্য আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইতে হবে।

Content added By

Promotion

Promotion