১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে 'ছায়ানট' নববর্ষের যে উৎসব শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশের বাধাহীন পরিবেশে এখন তা জনগণের বিপুল আগ্রহ-উদ্দীপনাময় অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। রাজধানী ঢাকার নববর্ষ উৎসবের দ্বিতীয় প্রধান আকর্ষণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ছাত্র-ছাত্রীদের বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় মুখোশ, কার্টুনসহ যে-সব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকধর্মী চিত্র বহন করা হয়, তাতে আবহমান বাঙালিত্বের পরিচয় এবং সমকালীন সমাজ-রাজনীতির সমালোচনাও থাকে।
'সামাজিক প্রকৌশলীদের আজ বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে।' লেখকের এই প্রত্যাশাই যেন উদ্দীপকটি ধারণ করছে- মূল্যায়ন কর।
(উচ্চতর দক্ষতা)সামাজিক প্রকৌশলীদের আজ বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে। লেখকের এই প্রত্যাশাই যেন উদ্দীপকটি ধারণ করেছে। মন্তব্যটি যথার্থ।
বাংলা নববর্ষ উৎসব বাঙালির প্রাণের উৎসব। পয়লা বৈশাখে প্রতিবছর বাংলা নববর্ষ উৎসব পালিত হয়। এই দিনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ- গোত্র-উঁচু-নিচু, ধনী-দরিদ্র ইত্যাদির বৈষম্য ভুলে সব বাঙালি আনন্দে মেতে ওঠে। ফলে নববর্ষ উদ্যাপনের চেতনা তাদের ঐক্যবদ্ধ করে উজ্জীবিত করে তোলে।
উদ্দীপকে শহরকেন্দ্রিক মানুষের জীবনধারায় বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের নানা বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার বটমূলে 'ছায়ানট'-এর উদ্যোগে নববর্ষ উৎসব পালনের ঐতিহাসিকতা তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমানে এটি সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণে দেশের সর্ববৃহৎ জাতীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং তাতে বিশেষ বিশেষ সামাজিক বিষয় ও অসংগতি নির্দেশ করে মুখোশ পরিধান করা হয়। এর মধ্য দিয়ে সমকালীন সমাজ- রাজনীতি সম্পর্কে মানুষ ধারণা লাভ করে। এই বিষয়টি 'পয়লা বৈশাখ' প্রবন্ধে সচেতনতার দিকটিকে নির্দেশ করে। উদ্দীপকেও তার পরিচয় পাওয়া যায়।
'পয়লা বৈশাখ' প্রবন্ধে বাংলা নববর্ষে বাঙালির অংশগ্রহণ ও সচেতনতাবোধের বিকাশ বিশেষভাবে চোখে পড়ে। এতে বাঙালির লোকসংস্কৃতি, ঐতিহ্য অত্যন্ত গৌরবমণ্ডিত হয়ে উপস্থিত হয়। এখানে সমাজ নির্মাণের কারিগররা নিজস্ব চিন্তা-চেতনায় সাধারণকে উন্নত জীবনমানের সন্ধান দিতে পারেন। তাতে পয়লা বৈশাখ আরও মূল্য ও মর্যাদা লাভ করবে। আর ধর্মীয় সংস্কৃতির সংকীর্ণতার গণ্ডি যত ক্ষুদ্র হয়ে আসবে, জাতীয় চৈতন্য তত বেড়ে যাবে। বাঙালি তাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির মাধ্যমে আরও বেশি আত্মবিকাশের সুযোগ পাবে। আর এ কারণেই বলা হয়েছে- সামাজিক প্রকৌশলীদের আজ বাংলা নববর্ষের মধ্যে সচেতনভাবে নতুন মাত্রিকতা যোগ করতে হবে।