নিউটনীয় বলবিজ্ঞান থেকে আমরা জানি যে, বস্তুর ভর একটি ধ্রুবক। স্থান, কাল ও বেগের পরিবর্তনের ওপর এটি নির্ভরশীল নয় বা এটি পরিবর্তিতও হয় না। কিন্তু আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্বের মতে বস্তুর ভর কোনো ধ্রুবক নয়, আপেক্ষিক। বস্তুর বেগের সাথে ভরের একটি সম্পর্ক আছে এবং বস্তুর চলমান বা গতিশীল ভর ও নিশ্চল ভর সমান নয়। বস্তুর বেগ বৃদ্ধির সাথে সাথে ভর বৃদ্ধি পায়। পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে কোনো বস্তু যদি v দ্রুতিতে গতিশীল হয়।
তাহলে এর গতিশীল ভর পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে এর নিশ্চল ভরের চেয়ে গুণ বেশি হবে।
মহাশূন্যে চলমান কোনো মহাশূন্যযানের ভর পৃথিবী থেকে মাপা হলে এর ভর পৃথিবীতে অবস্থিত এর নিশ্চল ভরের পরিমাপের চেয়ে বেশি হবে, কিন্তু একে দেখতে ছোট দেখাবে। মহাশূন্যবানের কোনো যাত্রী যদি পৃথিবীর নিশ্চল অবস্থার মহাশূন্যযানের দৈর্ঘ্য ও ভর মাপেন তাহলে তিনি গতিশীল মহাশূন্যযানের চেয়ে নিশ্চল মহাশূন্য যানের দৈর্ঘ্য ছোট কিন্তু ডর বেশি মাপবেন (রকেটের যে দ্রুতি রয়েছে সে দ্রুতিতে এই প্রভাব অবশ্য পর্যবেক্ষণযোগ্য নয়)।
কোনো বস্তুর নিশ্চল অবস্থায় ভর যদি mo, হয় এবং এর চলমান অবস্থায় ভর যদি m হয় এবং বস্তুটি যদি v দ্রুতিতে গতিশীল হয় তাহলে mo ও m এর সম্পর্ককে নিচের সমীকরণ দিয়ে লেখা যায়,
... (8.29)
বস্তুর দ্রুতি আলোর দ্রুতির যত কাছাকাছি পৌঁছাতে থাকে এর ভর ভত তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। বস্তুর দ্রুতি যখন আলোর এক-দশমাংশ অর্থাৎ, 0.1 c তখন এর ভর বৃদ্ধি মাত্র শতকরা 0.5, দ্রুতি যখন আলোর দ্রুতির নয় দশমাংশ অর্থাৎ 0.9 c তখন এর ভর বৃদ্ধি শতকরা 100 ভাগেরও বেশি। পারমাণবিক কণিকা ইলেক্ট্ৰন, প্রোটন, নিউট্রন, মেসন ইত্যাদির দ্রুতি এত বেশি যে এদের গতির বেলায় আপেক্ষিকতা প্রভাব বিবেচনায় আনতে হয় এবং এদের গতির ক্ষেত্রে পদার্থবিজ্ঞানের সাধারণ সূত্রগুলো খাটে না।