50 mL 0.18 M CH3COOH দ্রবণে 60 mL 0.10 M NaOH দ্রবণ যোগ করা হল। pKa = 4.76.
উদ্দীপক দ্রবণে সামান্য পরিমাণ যোগ করলে কী ঘটবে?
যে পরিবর্তনে কোন বস্তু বা পদার্থের আণবিক গঠন সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে একটি নতুন পদার্থ তৈরি হয়, তাকে রাসায়নিক পরিবর্তন বলে। অর্থাৎ রাসায়নিক পরিবর্তন এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে এক বা একাধিক পদার্থ এক বা একাধিক নতুন এবং ভিন্ন পদার্থে পরিবর্তিত হয়।
রাসায়নিক পরিবর্তন একটি অপরিবর্তনীয় এবং স্থায়ী প্রক্রিয়া। পরিবর্তনের সময় পদার্থের ভর পরিবর্তিত হয়, হয় ভর যোগ করা হয় বা সরানো হয়। এছাড়া রাসায়নিক পরিবর্তনে শক্তিরও পরিবর্তন ঘটে। রাসায়নিক পরিবর্তনে তাপ শোষণ বা উৎপন্ন হতে পারে। এতে পরমাণুর সংখ্যা এবং ধরন স্থির থাকলেও তাদের বিন্যাস পরিবর্তিত হয়।
যেকোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া রাসায়নিক পরিবর্তনের উদাহরণ। নিম্মে রাসায়নিক পরিবর্তনের উদাহরণসমূহ দেওয়া হল,
অ্যাসিড-ক্ষার বিক্রিয়া
রাসায়নিক পরিবর্তনগুলো নিম্মোক্ত বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত করা যেতে পারে:
তাপমাত্রা পরিবর্তন: যেহেতু রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শক্তির পরিবর্তন হয়, তাই প্রায়ই পরিমাপযোগ্য তাপমাত্রা পরিবর্তন হয়। তাপ শোষণ বা উৎপন্ন হতে পারে।
আলো তৈরি: কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া আলো তৈরি করে।
বুদবুদ: কিছু রাসায়নিক পরিবর্তন গ্যাস উৎপন্ন করে যা তরল দ্রবণে বুদবুদ হিসেবে দেখা যায়।
রঙ পরিবর্তন: রাসায়নিক পরিবর্তনে রঙ পরিবর্তন হয়ে ভিন্ন কালার সৃষ্টি হয়।
গন্ধ পরিবর্তন: রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় উদ্বায়ী রাসায়নিক নির্গত করতে পারে যা গন্ধ তৈরি করে।
অপরিবর্তনীয়: রাসায়নিক পরিবর্তনগুলো প্রায়শই অপরিবর্তনীয় এবং এটিকে পূর্বাস্থায় ফেরানো অসম্ভব।
গঠনে পরিবর্তন: যখন কাঠ জ্বালানো হয়, তখন এটি ছাই এ পরিণত হয়। যখন খাদ্য পচে যায়, তখন এর গঠন দৃশ্যমানভাবে পরিবর্তিত হয়। এসব গঠন পূর্বাস্থায় আনা অসম্ভব।
১. এক টুকরো লোহাকে দীর্ঘদিন বাতাসে রেখে দিলে, এটির ওপর মরিচার (ফেরিক অক্সাইড) আবরণ তৈরি হয়। লোহার সাথে বাতাসে বিদ্যমান অক্সিজেন ও জলীয়বাষ্প বিক্রিয়া করে পানিযুক্ত ফেরিক অক্সাইড (Fe2O3) উৎপন্ন করে যা মরিচা নামে পরিচিত। মরিচা লোহা হতে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং এটি একটি রাসায়নিক পরিবর্তন। মরিচার রাসায়নিক বিক্রিয়া হল,
4Fe(s) + 3O2(g) + 6H2O(l)→ 4Fe (OH)3(s)
২. সূর্যালোকের উপস্থিতিতে, উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পানি বিক্রিয়া করে খাদ্য (গ্লুকোজ) এবং অক্সিজেন উতপন্ন করে যা সালোকসংশ্লেষণ নামে পরিচিত। এটি দৈনন্দিন রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এইভাবে গাছপালা নিজেদের এবং প্রাণীদের জন্য খাদ্য তৈরি করে এবং কার্বন ডাই অক্সাইডকে অক্সিজেনে রূপান্তর করে। বিক্রিয়ার সমীকরণ হল:
6 CO2 + 6 H2O + আলো → C6H12O6 + 6 O2
৩. খাদ্য হজমের সময় রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। মুখের মধ্যে খাবার দেওয়ার সাথে সাথে লালার মধ্যে থাকা অ্যামাইলেজ নামক একটি এনজাইম শর্করা এবং অন্যান্য কার্বোহাইড্রেটগুলিকে আপনার শরীর শোষণ করতে পারে এমন সহজ আকারে ভেঙে দিতে শুরু করে।
আপনার পাকস্থলীতে থাকা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড খাবারের সাথে বিক্রিয়া করে এটিকে আরও ভেঙে দেয়। সবশেষে, এনজাইমগুলো প্রোটিন এবং চর্বি বিচ্ছিন্ন করে এবং রক্তের মাধ্যমে শরীরে শক্তি সঞ্চয় করে।
৪. অ্যাসিড (যেমন, ভিনেগার, লেবুর রস, সালফিউরিক অ্যাসিড) এবং ক্ষারক (যেমন, বেকিং সোডা, সাবান, অ্যামোনিয়া বা অ্যাসিটোন) একত্রিত করলে, একটি অ্যাসিড-ক্ষার বিক্রিয়া শুরু হয়। অ্যাসিড-ক্ষারকের বিক্রিয়ায় লবণ (KCl) ও পানি (H2O) উৎপাদন হয়। তাই এটি একটি রাসয়নিক পরিবর্তন। অ্যাসিড-ক্ষারকের বিক্রিয়ার সমীকরণটি হল,
HCl + KOH → KCl + H2O
৫. মোমবাতির দহন একটি রাসায়নিক পরিবর্তন। কারণ মোমবাতি জ্বলার সময় তাপে কিছু মোম গলে যায়, এটি ভৌত পরিবর্তন। কিন্তু অধিকাংশ মোম বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) ও জলীয় বাষ্প (H2O) উৎপন্ন করে। কার্বন ডাই অক্সাইড ও জলীয় বাষ্পের ধর্ম মোমের ধর্ম থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং মোমবাতির দহন একটি রাসায়নিক পরিবর্তন।