নমুনায়ন ত্রুটি ও অনমুনায়ন ত্রুটি

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ২য় পত্র | NCTB BOOK

নমুনায়ন ত্রুটি (Sampling Error) এবং অনমুনায়ন ত্রুটি (Non-Sampling Error) গবেষণা বা জরিপে তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের সময় দেখা দেয়া দুটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি। এগুলো জরিপের ফলাফলে প্রভাব ফেলে এবং গবেষণার সঠিকতা হ্রাস করতে পারে। নিচে এই ত্রুটিগুলোর ব্যাখ্যা করা হলো:


নমুনায়ন ত্রুটি (Sampling Error)

নমুনায়ন ত্রুটি হলো সেই ত্রুটি, যা একটি নির্দিষ্ট নমুনা থেকে প্রাপ্ত ফলাফল এবং পুরো জনসংখ্যার প্রকৃত ফলাফলের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে।

বৈশিষ্ট্য:

  • এটি স্বাভাবিকভাবে ঘটে, কারণ পুরো জনসংখ্যার পরিবর্তে একটি অংশ বিশ্লেষণ করা হয়।
  • নমুনা আকার বড় হলে ত্রুটির সম্ভাবনা কমে।
  • সঠিক নমুনা পদ্ধতি ব্যবহার করে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

উদাহরণ:

  • একটি দেশের শিক্ষার্থীদের উপর জরিপ করতে ১০০ জন শিক্ষার্থী বাছাই করা হয়। তবে এই ১০০ জন সঠিকভাবে পুরো শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব না করলে নমুনায়ন ত্রুটি হবে।

নমুনায়ন ত্রুটি কমানোর উপায়:

  • বড় নমুনা আকার নির্বাচন করা।
  • সঠিক এবং বৈজ্ঞানিক নমুনা পদ্ধতি ব্যবহার করা।
  • পুরো জনসংখ্যার বৈচিত্র্য ধারণ করার মতো নমুনা বেছে নেওয়া।

অনমুনায়ন ত্রুটি (Non-Sampling Error)

অনমুনায়ন ত্রুটি হলো সেই ত্রুটি, যা নমুনা বাছাইয়ের বাইরে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ বা উপস্থাপনার সময় ঘটে।

বৈশিষ্ট্য:

  • এটি জরিপ পরিচালনার পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে ঘটে।
  • ডেটা সংগ্রহ, প্রশ্নপত্র প্রস্তুতি, বা বিশ্লেষণের ভুল থেকে এটি দেখা দিতে পারে।
  • এটি নমুনা আকারের উপর নির্ভর করে না।

উদাহরণ:

  • প্রশ্নপত্রে অস্পষ্ট প্রশ্ন থাকা।
  • জরিপে অংশগ্রহণকারীরা ভুল তথ্য প্রদান করা।
  • ডেটা সংগ্রহের সময় ডেটা এন্ট্রির ভুল।

অনমুনায়ন ত্রুটি কমানোর উপায়:

  • প্রশ্নপত্র স্পষ্ট ও নির্ভুলভাবে তৈরি করা।
  • প্রশিক্ষিত কর্মীদের দ্বারা ডেটা সংগ্রহ করা।
  • ডেটা বিশ্লেষণের সময় ত্রুটি চিহ্নিত ও সংশোধন করা।

নমুনায়ন ত্রুটি ও অনমুনায়ন ত্রুটির পার্থক্য

বৈশিষ্ট্যনমুনায়ন ত্রুটিঅনমুনায়ন ত্রুটি
তথ্যের উৎসনমুনা বাছাই প্রক্রিয়ার ভুল থেকে সৃষ্টি।ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের ভুল থেকে সৃষ্টি।
কন্ট্রোলের উপায়বড় নমুনা এবং সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করে।প্রশিক্ষণ, স্পষ্ট নির্দেশিকা, এবং কার্যকর প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
সংশোধনের সুযোগএটি পরিসংখ্যানিকভাবে হ্রাস করা যায়।এটি ধরা এবং সংশোধন করা কঠিন।
কারণনমুনার আকার ও প্রতিনিধিত্বের অভাব।প্রশ্নপত্র, ডেটা এন্ট্রি, বা বিশ্লেষণের ত্রুটি।

সারসংক্ষেপ

নমুনায়ন ত্রুটি এবং অনমুনায়ন ত্রুটি গবেষণার সঠিকতা হ্রাস করে। নমুনা ত্রুটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হলেও অনমুনায়ন ত্রুটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। উভয় ক্ষেত্রেই পরিকল্পিত পদ্ধতি, প্রশিক্ষণ এবং সতর্কতা অনুসরণ করলে ত্রুটির প্রভাব হ্রাস করা সম্ভব।

Promotion