দুই বা ততোধিক জোড়া বিপরীত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীবের মধ্যে ক্রস ঘটালে F2 জনুতে কোন ধরনের ফিনোটাইপিক অনুপাত পাওয়া যাবে? (What type of phenotypic ratio will be found in F2 generation when organisms having two or more contrasting characteristics are crossed?)
জীনতত্ত্বঃ জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জিনের গঠন, কাজ, বংশপরম্পরায় সঞ্চারণের ধরণ ও ফলাফল সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় তাকে বংশগতিবিদ্যা বা জিনতত্ত্ব বা জেনেটিক্স (Genetics) বলে)। উইলিয়াম বেটসন (William Bateson, 1861–1926) ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে সর্বপ্রথম Genetics শব্দ প্রচলন করেন।
জিনতত্ত্বের জনক হিসেবে স্বীকৃত গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল (Gregor Johann Mendel, 1822–1884) ছিলেন বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্রবাসী একজন ধর্মযাজক। দীর্ঘ সাত বছর তিনি বিভিন্ন ধরনের মটর শুঁটি (Pea, Pisum sativum) গাছের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে বংশগতি সম্পর্কিত দুরকম ধারণা আহরণ করেন। এ ধারণাসহ তাঁরনিবন্ধ Experiments in Plant Hybridization (উদ্ভিদ সংকরায়ণের পরীক্ষা), ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে Proceedings of the Natural History Society in Brünn নামক জার্নালে প্রকাশিত হয় কিন্তু নিবন্ধটি মেন্ডেলের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লোকচক্ষুর অগোচরেই রয়ে যায়। ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দের ৬ জানুয়ারি মেন্ডেল মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর ১৬ বছর পর অর্থাৎ ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে তিন ভিন্ন দেশের তিন বিজ্ঞানী পৃথকভাবে কিন্তু একই সময়ে মেন্ডেলের গবেষণার ফলাফল পুনরাবিষ্কার করেন। বিজ্ঞানীরা হলেন :
নেদারল্যান্ডসের উদ্ভিদবিজ্ঞানী হিউগো ডে ত্রিস (Hugo de Vrics, 1848–1935),
জার্মানির উদ্ভিদবিজ্ঞানের অধ্যাপক কার্ল করেন্স (Carl Correns, 1864–1933) এবং অস্ট্রিয়ার কৃষিবিজ্ঞানী এরিক শ্চেমেক (Erich Tschermak, 1871-1962)।
আশ্চর্যের বিষয় হলো এ বিজ্ঞানীরা তাঁদের সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ করেই মেন্ডেলের গবেষণা সম্পর্কে অবহিত হয়েছিলেন। এভাবে মেন্ডেলের গবেষণার মাধ্যমে বংশগতির মৌলিক সূত্রের আবিষ্কার ও প্রকাশের মাধ্যমে যে ভিত্তি রচিত হয় তার উপর নির্ভর করে জীববিজ্ঞানে বংশগতিবিদ্যা বা জিনতত্ত্ব নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখার বিকাশ ঘটে । কারণে মেন্ডেলকে বংশগতিবিদ্যার জনক (Father of Genetics) বলে অভিহিত করা হয় ।