জনাব হক ছোট ব্যবসায় দিয়ে শুরু করে এখন অনেক বড় ব্যবসায় গড়ে তুলেছেন । এখন অনেক মানুষ তার প্রতিষ্ঠানে কাজ করে । কারখানায় নতুন নতুন মেশিন বসিয়েছেন । প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রতিটা মানুষ যাতে সর্বোচ্চ দক্ষতার সাথে কাজ করতে পারে সেজন্য তিনি সদা সচেষ্ট থাকেন । তিনি কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও নানান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের উৎসাহ ধরে রাখতে চেষ্টা করেন । প্রতিটা কাজ আগেই ঠিক করে সবাইকে বুঝিয়ে দেন । কাজের খোঁজ-খবর রাখেন ও ভুল হলে তা শুধরে দেন। এরপরও কাজে সমস্যা হলে তা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করেন । তার এই চেষ্টা-প্রচেষ্টাই তাকে সফলতা দিয়েছে । তিনি একজন সফল ব্যবস্থাপক । এক্ষেত্রে লক্ষ্যার্জনে গৃহীত জনাব হকের সকল কর্মপ্রয়াস ব্যবস্থাপনা নামে পরিচিত ।
ব্যবস্থাপনা শব্দটি ইংরেজি 'Management' শব্দের প্রতিশব্দ । ইংরেজি 'Management' শব্দটির সমার্থক শব্দ গণ্য করা হয় ‘to handle'- অর্থাৎ চালনা করা বা পরিচালনা । ইংরেজি এ শব্দটি অধিকাংশের মতে ল্যাটিন বা ইতালীয় ‘Maneggiare' শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ হলো 'to trained up the horses'-অর্থাৎ অশ্বকে প্রশিক্ষিত করে তোলা বা পরিচালনার উপযোগী করে তোলা । যা কালের বিবর্তনে মানুষকে প্রশিক্ষিত করে তার নিকট থেকে কাজ আদায়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়েছে ।
সহজ অর্থে, প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য এতে নিয়োজিত উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহারের সকল প্রয়াস- প্রচেষ্টাকে ব্যবস্থাপনা বলে। এরূপ প্রয়াস-প্রচেষ্টার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে ব্যবস্থাপক বলা হয়ে থাকে । সঠিকভাবে সবকিছু চালাতে পারার উপরই উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার ও লক্ষ্যার্জন নির্ভর করে। একটা প্রতিষ্ঠানে দু'ধরনের উপকরণ থাকে; মানবীয় ও বস্তুগত । মানবীয় উপকরণ বলতে মানুষ বা জনশক্তিকে বুঝায়। আর বস্তুগত উপকরণ বলতে যন্ত্রপাতি, মালামাল, অর্থ, বাজার ও পদ্ধতিকে বুঝানো হয়ে থাকে এদেরকে সংক্ষেপে 6'M (Men, Machine, Materials, Money, Market ও Method) বলে। এ সকল উপকরণের কার্যকর ব্যবহার সম্ভব হলেই একটা প্রতিষ্ঠান তার কাঙ্খিত ফললাভ করতে পারে । তাই এদের কার্যকর ব্যবহারের জন্য ব্যবস্থাপকগণ প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক ও সুশৃঙ্খল কর্মপ্রয়াস চালান। যাকে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া নামে অভিহিত করা হয়। এরূপ প্রক্রিয়ার সাথে পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্য সম্পৃক্ত । তাই প্রকৃত অর্থে, উপকরণাদির কার্যকর ব্যবহার করে লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকে ব্যবস্থাপনা বলা হয়ে থাকে । নিম্নে এ সংক্রান্ত একটা ধারণা চিত্র প্রদত্ত হলো: