উদ্দীপকে সালমা বেগমের ক্ষেত্রে যে বিবাহ ব্যবস্থা লক্ষ করা যায় তা হলে বিধবা বিবাহ।
স্বামীর মৃত্যুর পর কোনো বিধবা মহিলার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াকে বিধবা বিবাহ বলে। বাংলাদেশের মুসলিম সমাজে বিধবা বিবাহের স্বীকৃতি রয়েছে। পক্ষান্তরে হিন্দু সমাজে বিধবা বিবাহ অদ্যবধি সামাজিকভাবে নিরুৎসাহিত রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় উপমহাদেশের একজন সফল সমাজ সংস্কারক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালে তৎকালীন গভর্নর জেনারেলের সম্মতিক্রমে বিধবা বিবাহ আইন পাস হয়। এর ফলে বিধবা নারীরা সমাজে বেঁচে থাকার অধিকার লাভ করে। হিন্দু সমাজে নারীদের অবস্থা এমন ছিল যে, স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকেও তার সাথে সহমরণে যেতে হতো। কিন্তু এ আইনের ফলে তা রহিত হয়। অর্থাৎ সতিদাহ প্রথা বিলুপ্ত হয়। বিধবা বিবাহের কারণে অনেক নারীই নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে তারা নিজেদেরকে নতুনভাবে সাজিয়ে সমাজের উপযোগী করে তৈরি করছে। সতিদাহ প্রথা ছিল একটি কুসংস্কার। আজকের সমাজ সেখান থেকে বেরিয়ে বিধবা বিবাহের মাধ্যমে সমাজকে কুসংস্কারমুক্ত করেছে। বিধবা বিবাহের কারণে নারীরা এখন আর সমাজে নিজেকে ছোট মনে করছে না। তারা এখন অনেকেই যোগ্যতাবলে অবিবাহিত ছেলেদের বিয়ে করছে। ফলে সামাজিকভাবেও তাদের অবস্থান শক্ত হচ্ছে। তাছাড়া সহমরণ ছিল সমাজের একটা বেদনাবিধুর ঘটনা। কিন্তু বিধবা বিবাহ প্রচলনের মাধ্যমে সমাজ সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে মুক্তি পায়।