Job

'রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান' শির্ষক শিরোনামে ৫০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রতিবেদন রচনা করুন।

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

বিশেষ প্রতিবেদন
'রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান” 

রোহিঙ্গাদের শরনার্থী শিবির পরিদর্শন ২৫/০৩/২০১৮ হতে ২৮/০৩/২০১৮ পর্যন্ত সময় জরিপ চালানো হয়েছে।
২৮/০৩/২০১৮
১৮টি ছবির সংযুক্তি

‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান'

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের সামরিক অভিযান, নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ও পোড়ামাটি নীতির মতো করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার কারণে লাখ লাখ মানুষ এখন বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে। জীবনরক্ষার তাগিদে পালিয়ে আসা এসব মানুষের নিরাপত্তা, খাদ্য ও আশ্রয়ের প্রশ্নটিই এখন আশু বিবেচেনার বিষয়। আশ্রয় শিবিরে খাদ্যাভাবের আশঙ্কা এবং শরণার্থীদের যথাযথভাবে তালিকাভূক্তির অনুপস্থিতি একাদিক্রমে আশু ও দীর্ঘমেয়াদি সংকটের ইঙ্গিত বহন করে। শুরুতে দ্বিধান্বিত বাংলাদেশ সরকারে অপরিকল্পিত পদক্ষেপ শরণার্থী পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে ।

 বিশ্বের অনেক দেশে এই সামরিক অভিযানকে ‘গণহত্যা' বলে চিহ্নিত করে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। কিন্তু মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারের অবস্থানে সামান্য পরিবর্তন ঘটেনি; উপরন্তু অং সান সু চি দাবি করেছেন, তাঁর সরকার সবাইকে ‘নিরাপত্তা' দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সব স্বাভাবিক থাকলে যে মানুষ ‘শরণার্থী’' জীবন বেছে নেয় না, এটা বোঝার জন্য কাণ্ডজ্ঞানই যথেষ্ট। তদুপরি মিয়ানমার সরকারের আমন্ত্রণে ও তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের যেসব সাংবাদিক রাখাইন সফরের সুযোগ পেয়েছেন, মিয়ানমার থেকে তাঁদের পাঠানো প্রতিবেদনেই দেখা যাচ্ছে যে পুলিশের উপস্থিতিতেই বেসামরিক ব্যক্তিরা ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে (জোনাথন হেডের প্রতিবেদন, “বিবিসি রিপোর্টার ইন মিয়ানমার - আমুসলিম ভিলেজ ইন ওয়াজ বার্নিং', বিবিসি, ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭)। মিয়ানমার সরকার এসব ধ্বংসযজ্ঞের দায় তাদের ভাষায় ‘জঙ্গি’দের ওপরই কেবল চাপাচ্ছে না তা নয়, একই সঙ্গে শরণার্থীদের ভবিষ্যতে দেশে ফেরার ওপর কিছু শর্ত আরোপ করতেও শুরু করেছে।

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন রাজ্য পরিস্থিতি উন্নয়নে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সূচী ২৪ আগষ্ট ২০১৬ গঠন করেন Advisory commission on Rakhine State. জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও নোবেল শান্তিপুরস্কার জয়ী ঘানার নাগরিক কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত ৯ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিশন বিশ্বব্যাপী ‘আনান কমিশন' নামে পরিচিত পায়। উক্ত কমিশন রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি তদন্ত করে ২৪ আগষ্ট ২০১৭ রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানকল্পে ৮৮টি সুপারিশ সম্বলিত এক প্রতিবেদন পেশ করে। এরপর কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে দেয়া এক বিবৃতির মাধ্যমে গঠন করা হয় ১৯ সদস্যের Committee for Implementation of the Recommendations on Rakhine State, আনান কমিশনের সুপারিশ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কি-না এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে সর্বশেষ ৮ ডিসেম্বর ২০১৭ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন কিয়াও পাঁচ বিদেশি মধ্যস্থতাকারীর সমন্বয়ে গঠন করেন ১০ সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি Advisory Team for the Committee for the Implementation of Recommendations of Rakhine State এ উপদেষ্টা কমিটিতে কোনো রাখাইন প্রতিনিধি রাখা হয়নি। 

রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানঃ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনে এবং রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ৫ দফা প্রস্তাবনা রাখেন। এগুলো হলোঃ

  • মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক রাখাইনে সহিংসতা এবং জাতিগত নিধন বন্ধ করতে হবে। 
  • জাতিসংঘের মহাসচিব কর্তৃক মিয়ানমারের রাখাইনে এই ঘটনার সত্যতা যাইচায়ের জন্য কমিটি গঠন করে একটি মিশন পাঠাতে হবে ।
  • জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য মিয়ানমারে একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলতে হবে। 
  • রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবর্তনের জন্য কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
  • কফি আনান কমিশন কর্তৃক প্রদত্ত সুপারিশ গুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। 

এছাড়া বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২৪-২৭ অক্টোবর ২০১৭ মিয়ানমারে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের জন্য ফলপ্রসু আলোচনা করেন এবং দুইটি চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রত্যাবাসিত সকল রোহিঙ্গাদের সঠিক ও সুষ্ঠুভাবে পূনর্বাসনের জন্য একটি সুসমন্বিত প্রক্রিয়া চলছে।

প্রতিবেদক
নামঃ সাইফুল ইসলাম

1 year ago

বাংলা

Please, contribute to add content.
Content
Promotion