মালপিজিয়ান কণিকা বা Corpuscles পাওয়া যায় ?

Created: 2 years ago | Updated: 2 years ago
Updated: 2 years ago

ঘাসফড়িং এর রেচনতন্ত্রঃ আমিষজাতীয় খাদ্য বিপাকে সৃষ্ট নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের প্রক্রিয়ার্কে রেচন (excretion) বলে। 
রেচন তন্ত্র (Excretory System ) অন্যসব পতঙ্গের মতো ঘাসফড়িং-এর প্রধান রেচন অঙ্গ ও ম্যাসপিজিয়ান নালিকা (malpighian tubule)। তবে কিছু কোষ অর্থাৎ ইউরেট কোষ, ইউরিকোজ গ্রন্থি, নেফোসাইট এবং কিউটিকল অতিরিক্ত রেচন অঙ্গ হিসেবে কাজ করে।

নামকরণ: Marvello Malpighi | 1628-1694) নামক এক ইতালীয় চিকিৎসক ও জীববিজ্ঞানী সর্বপ্রথম ১৬৬৯ সালে এ নালিকা আবিষ্কার করলে তার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়।

অবস্থান: মধ্য ও পশ্চাৎ- পৌষ্টিকনালির সংযোগস্থলে অসংখ্য সুতার মতো ম্যালপিজিয়ান নালিকা হিমোসিলে থাকে। এগুলোর মুক্ত প্রাপ্ত বন্ধ এবং হিমোসিল গহ্বরে হিমোলিখের মধ্যে নিমজ্জিত থাকে। অন্যপ্রান্ত পৌষ্টিকনালি র গহ্বরে উন্মুক্ত।


গঠনঃ ম্যালপিজিয়ান নালিকা একস্তরবিশিষ্ট এপিথেলিয়াম কোষে গঠিত। বাইরের দিকে একটি বেসমেন্ট পর্দা (basement membrane) - এবং ভিতরের দিকে অসংখ্য মাইক্রোভিলাই (microvilli) দিয়ে আবৃত। মাইলো ওলাই বলা সম্মিলিতভাবে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ব্রাশ কার (brush border) গঠন করে নালিকাগুলো নিজে অতটা নড়নক্ষম নয় বরং হিমোসিলে হিমোলিক্ষের আন্দোলনে এরা রেচন সম্পন্ন করে।

রেচন প্রক্রিয়া : ম্যালপিজিয়ান নালিকার বন্ধ প্রান্ত হিমোলিম্ফে ভাসমান অবস্থায় থেকে রক্ত হতে পানি ও কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করে। অতঃপর পটাসিয়াম ইউরেট নালিকার কোষের মধ্যে পানি ডাইঅক্সাইডের সাথে বিক্রিয়া করে, পটাসিয়াম বাই-কার্বনেট ও ইউরিক এসিড তৈরি করে। পটাসিয়াম বাইকার্বনেট ও পানি পুনঃশোষিত হয়ে হিমোলিক্ষে ফিরে আসে। কিন্তু ইউরিক এসিড নালিকার গহ্বর বা লুমেন (lumen)-এ থেকে এই ইউরিক এসিড সিলিয়ার আন্দোলনের ফলে ম্যালপিজিয়ান নালিকার গোড়ার অংশ হয়ে পৌষ্টিকনালিতে প্রবেশ করে এবং পশ্চাৎঅস্ত্রে গমন করে। মলাশয়ে অবস্থানকালে- ইউরিক এসিড থেকে অতিরিক্ত পানি পরিশোষণের ফলে বিশুষ্ক ইউরিক এসিড দানী হিসাবে মলের সাথে বেরিয়ে যায়।

অতিরিক্ত বা আনুষাঙ্গিক রেচন অঙ্গ (Accessory Excretory Organ)

১. ফ্যাটবডি কোষ (Fatbody cell) : হিমোসিলের অধিকাংশ স্থান জুড়ে মেদপুঞ্জ বা ফ্যাটবডি থাকে। কয়েক ধরনের কোষ থাকলেও ইউরেট কোষ (urate cell) হিমোসিল থেকে রেচন দ্রব্য শোষণ করে আজীবন এতেকোষাভান্তরে জমা রাখতে সক্ষম।

২. ইউরিকোজ গ্রন্থি (Uricose glands) : পুরুষ ঘাসফড়িংয়ের মাশরুম গ্রন্থিতে ইউরিকোজ গ্রন্থি অবস্থান করার হিমোসিল থেকে রেচন দ্রব্য শোষণ করে ইউরিক এসিডরূপে জমা করে। সংগমের সময় এসব বর্জ্য শুক্রাণুর সাথে বাইরে নিক্ষিপ্ত হয়।

৩. নেফ্রোসাইট (Nephrocyte) : পেরিকার্ডিয়াল সাইনাসে হৃদ্যন্ত্রের পার্শ্বদেশে অবস্থিত নেফ্রোসাইট রেচন দ্রব্য সংগ্রহ করে রক্তের মাধ্যমে নিষ্কাশন করে।

৪. কিউটিকল (Cuticle) : লিম্ফ দশায় হিমোসিলে ভাসমান অ্যামিবা সদৃশ কিছু অ্যামিবোসাইট কোষ রক্ত থেকে রেচন দ্রব্য সংগ্রহ করে কিউটিকলের নিচে সঞ্চয় করে। খোলস মোচনের সময় পুরাতন কিউটিকলসহ সঞ্চিত রেচন দ্রব্য পরিত্যক্ত হয়।

Content added || updated By
Promotion