"স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল'- একটি সুপরিচিত ও জনপ্রিয় প্রবচন । আগে সাধারণ মানুষের চোখে স্বাস্থ্যবান মানুষ বলতে দীর্ঘকায় ও মোটা-সোটা ব্যক্তিকে বোঝাত। জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোকে আমরা জানতে পেরেছি যে 'মোটা-সোটা' অতি ব্যক্তি মানেই স্বাস্থ্যবান মানুষ নয়। স্বাস্থ্যের আধুনিক সংজ্ঞা হচ্ছে : রোগ-ব্যাধি বা অন্যান্য অস্বাভাবিক পরিস্থিতিমুক্ত শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক মঙ্গলকর অবস্থাকে স্বাস্থ্য বলে (Mosby's Medical Dictionary, 8th edition ব 2009)) এ সংজ্ঞা অনুযায়ী, স্থূলতাকে স্বাস্থ্যের পরিবর্তে অসুস্থতা হিসেবে বিবেচনা করে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন
শাখার সৃষ্টি হয়েছে। আদর্শ দৈহিক ওজনের ২০% বা তারও বেশি পরিমাণ মেদ দেহে সঞ্চিত হলে তাকে স্থূলতা বলে। স্থূলতার ফলে দেহের ওজন স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে যায় পূর্ণবয়ষ্ক মানুষে দেহের মাত্রাতিরিক্ত ওজন নির্ধারণের জন্য উচ্চতা ও ওজনের যে আনুপাতিক হার উপস্থাপন করা হয় তাকে দেহের ওজন সূচক বা বডি মাস ইনডেক্স (Body Mass Index = BMI) বলে । যদি কারও BMI ২৫ কেজি/ বর্গমিটার থেকে ৩০ কেজি/বর্গ মিটারের মধ্যে থাকে তখন তাকে স্থূলকায় বা মোটা বলা যায়। BMI ৩০ কেজি/m-এর বেশি হলে তাকে অতিস্থূলকায় বলে ।
BMI = দেহের ওজন (কিলোগ্রাম) ব্যক্তির উচ্চতা (মিটার২)
স্থূলতার ব্যাপকতায় সারা পৃথিবীর চিকিৎসা ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দুতে আজ স্থূলতা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি শাখাও সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের যে শাখায় সুলতার কারণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার সম্বন্ধে আলোচনা করা হয় তাকে বেরিয়াট্রিকস (Bariatrics) বলে। স্থূলতার কারণে যে সব রোগ হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে-করোনারি হৃদরোগ, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার (স্তন, কোলন), উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, যকৃত ও পিথেলির অসুখ, স্লিপ অ্যাপনিয়া, অস্টিও-আর্থাইটিস, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।