কার্বক্সিলিক এসিডের সাথে আ্যামোনিয়ার বিক্রিয়ার সময় তাপ প্রয়োগ করলে কী উৎপন্ন হয়?

Created: 2 years ago | Updated: 7 months ago
Updated: 7 months ago

কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid)

কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid)

(কার্বক্সিলিক এসিড এবং এদের জাতক (Carboxylic acids and their derivatives))

প্রশ্ন: অ্যালিফ্যাটিক কার্বক্সিলিক এসিড প্রস্তুতির তিনটি সাধারণ প্রস্তুতি লিখ । (Three general preparations for the preparation of Aliphatic Carboxylic acids)

উত্তর: 

(১) অ্যালকোহল হতে কার্বোক্সিলিক এসিড (Alcohol to Carboxylic acids): প্রাইমারী অ্যালকোহলকে সালফিউরিক এসিডযুক্ত K2Cr207 দ্বারা জারিত করা হলে অ্যালকোহলের সমসংখ্যক কার্বন পরমাণু বিশিষ্ট কার্বক্সিলিক এসিড উৎপন্ন হয়।

R-CH2-OH +OK2Cr207→         H2SO4 R- CHO+H2O

R-CHO + OR→COOH

 

 

 

উদাহরণ:

CH3- CH2 -OH + OK2Cr207→ CH3 – CHO + H2O 

CH3 – CHO + O→ CH3-COOH

কার্বক্সিলিক এসিড 

(২) অ্যালকাইল সায়ানাইড হতে কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid from Alkyl cyanide): অ্যালকেন নাইট্রাইল বা অ্যালকাইল সায়ানাইডকে লঘু খনিজ এসিড। দ্রবণ সহযোগে আর্দ্র বিশ্লেষণ করলে কার্বক্সিলিক এসিড ও অ্যামোনিয়া উৎপন্ন হয়।

RX + KCN∆→R-CN + KX

R– CN + 2H2OHCl→ R-COOH + NH3 

উদাহরণ:

CH3X + KCN ∆→ CH3 – CN + KX

CH3 – CN + 2H2O HCl→ CH3 -COOH + NH3

(৩) গ্রিগনার্ড বিকারক হতে কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid from Grignard reagent): অনাদ্র কঠিন কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রিগনার্ড বিকারক RMgX) যোগ করা হলে প্রথমে যুত যৌগ উৎপন্ন হয়। পরে উৎপন্ন যুত যৌগকে লঘু HCl সহযোগে আর্দ্র বিশ্লেষণ করা হলে কার্বক্সিলিক এসিড উৎপন্ন হয়।

          R- Mg-X+0=C=0→ 0=C|R-0- MgxH2O→R-COOH + Mg(OH)X

উদাহরণ:

     CH3- Mg-I+0=C=0→ 0-C|CH3-0- MglH2O→ >CH3COOH + Mg(OH)I

প্রশ্ন: ইথাইন হতে ইথানয়িক এসিডের শিল্পোৎপাদন পদ্ধতি লিখ। (Method of industrial production of Ethanoic Acid from Ethane)

উত্তর: অ্যাসিটিলিন হতে ইথানয়িক এসিড ও শিল্পক্ষেত্রে বর্তমানে বিশুদ্ধ অ্যাসিটিক এসিড উৎপাদন ইথাইন বা এসিটিলিন থেকে সংশ্লেষণ প্রণালীতে করা হয়। পেট্রোলিয়ামের তাপ বিয়োজন উৎপন্ন ইথাইন গ্যাসকে 60°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত 1% মারকিউরিক সালফেট এবং 20% H2SO4 এসিডের জলীয় দ্রবণে চালনা করা হয়। ফলে ইথান্যাল উৎপন্ন হয়। 

HC≡ CH+H2O1% HgSo4, 20% H2SO4→6O ° CH3CHO 

উৎপন্ন ইথান্যালকে মাঙ্গানাস এসিটেট প্রভাবকের উপস্থিতিতে বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারিত করে ইথানয়িক এসিড উৎপন্ন করা হয়। 

 2CH3CHO + O2CH3COO2Mn,600C)→2CH3COOH

প্রশ্ন: ইথানয়িকের এসিড হতে ইথাননায়িল ক্লোরাইড বা এসিটাল ক্লোরাইড কিভাবে পাওয়া যায়। (How to get Ethanol chloride or Acetyl chloride from Ethanoic acid)

উত্তর: ইথানয়িক এসিড PCI3 বা PCl5 বা SOCl2 (থায়েনিল ক্লোরাইড) এর সাথে বিক্রিয়া করে এসিটাল ক্লোরাইড উৎপন্ন করে। 

CH3COOH + PC13         → CH3COCl        +     H3PO3

                             এসিটাল ক্লোরাইড ফসফরাস এসিড 

বা,  CH3COOH + PCl5     → CH3COCI   + POCl3 + HCI

                                                  ফসফরাস অক্সি ক্লোরাইড 

বা,  CH3COOH + SOCl2 → CH3COCl + SO4 + HCl.

প্রশ্ন: ইথানয়িক এসিড হতে এসিটামাইড বা ইথান্যামাইড কিরূপে পাওয়া যায়? (Acetamide or Ethanamide is derived from Ethanoic acid)

উত্তর: ইথানয়িক এসিড এবং অ্যামোনিয়াম কার্বনেটের মিশ্রণকে উত্তপ্ত করে প্রথমে অ্যামোনিয়াম এসিটেট উৎপন্ন করা হয়। উৎপন্ন অ্যামোনিয়াম লবণকে গ্লাসিয়াল এসিটিক এসিডসহ 100°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হলে ইথান্যামাইড পাওয়া যায়।

CH3COOH + NH42CO3           ∆      →   2CH3COONH4 + CO2 + H2O

CH3COONH4     CH3COOH→                                     1000C    CH3CONH2 + H2O

ইথান্যামাইড 

প্রশ্ন: ইথানয়িক এসিড হতে ইথানল কিরূপে পাওয়া যায়? (Ethanol is obtained from Ethanoic acid)

উত্তর: ইথানয়িক এসিডকে লিথিয়াম অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রেক্সাইড (LiAlH4) দ্বারা বিজারিত করা হলে ইথানল পাওয়া যায়।

CH3COOH +4H          LiAlH     →                    dry ithar    CH3CH2OH + H20

ইথানল 

প্রশ্ন: ইথানয়িক এসিড হতে মিথেন কিরূপে পাওয়া যায়? (Ethanoic Acid to Methane)

উত্তর: ইথানয়িক এসিড বা সোডিয়াম ইথানয়েটকে সোডালাইমের সাথে উত্তপ্ত করা হলে ডিকার্বক্সিলেশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে মিথেন পাওয়া যায়। 

 CH3COOH + 2NaOH.CaO∆→ CH4 + Na2CO3.CaO + H2O

বা, CH3COONa + NaOH.CaO ∆→ CH4+ Na2CO3.CaO 

প্রশ্ন: ইথানয়িক এসিড হতে কিরূপে এসিটিক অ্যানহাইড্রাইড বা ইথানোয়িক অ্যানহাইড্রাইড পাওয়া যায়। (Acetic anhydride or Ethanoic anhydride from Ethanoic acid)

উত্তর: নিরুদক P205 সহ ইথানয়িক এসিডকে পাতন করা হলে দুই অণু ইথানয়িক এসিড থেকে এক অণু পানি অপসারিত হয়ে এসিটিক অ্যানহাইড্রাইড পাওয়া যায়। 

     2CH3COOHP205→∆ CH3CO2O + H2O

এসিটিক অ্যানহাইড্রাইড

অনুরূপে,  

       2RCOOH  P205→ RCO2O + H2O 

অ্যালকানয়িক অ্যানাহাইড্রাইড

প্রশ্ন: ইথানয়িক এসিড হতে কিরূপে ক্লেরো ইথানয়িক এসিড পাওয়া যায়? (Chloro Ethanic acid obtained from Ethanoic acid)

উত্তর: লোহিত ফসফরাসের উপস্থিতিতে ফুটন্ত ইথানয়িক এসিডে ক্লোরিন চালনা করা হলে ক্লোরো ইথানয়িক এসিড উৎপন্ন হয়।               

2CH3COOH + Cl2  লাল P→  CH2CICOOH + HCI 

ক্লোরো ইথানয়িক এসিড এর মধ্যে Cl2গ্যাস চালনা করা হলে ডাই ক্লোরো ইথানয়িক এসিড এবং ট্রাইক্লোরো ইথানয়িক এসিড উৎপন্ন হয়।

CH2Cl.COOH + Cl2লাল P→CHCI2.COOH + HCI 

CHCl2.COOH + Cl2লাল P→CCI3.COOH + HCI 

কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid)

প্রশ্ন: গ্লেসিয়াল এসিটিক এসিড এবং ভিনেগার কী? (Glacial acetic acid and Vinegar)

উত্তর: গ্লেসিয়াল এসিটিক ও অনার্স ও 100% বিশুদ্ধ ইথানয়িক এসিড বা অ্যাসিটিক এসিডকে গ্নেসিয়াল ইথানয়িক এসিড বা অ্যাসিটিক এসিড বলে। এই বিশুদ্ধ ইথানয়িক এসিডকে শীতল করলে তা 17°C তাপমাত্রায় বরফের ন্যায় বর্ণহীন কেলাসরূপে. জমে উঠে। এজন্যই অনার্দ্র ও বিশুদ্ধ ইথানয়িক এসিডকে গ্লেসিয়াল ইথানয়িক এসিড বা অ্যাসিটিক এসিড বলা হয়। 

ভিনেগার: এসিটিক এসিডের 6-10% জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলে। 

প্রস্তুতি: ইথাইল অ্যালকোহলের 10% জলীয় দ্রবণকে মাইকোডার্মা অ্যাসিটি নাম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে বায়ুর অক্সিজেন দ্বারা জারিত করে ভিনেগার প্রস্তুত করা হয়।

CH3 – CH2-OH (aq) +O2→ CH3-COOH(aq) + H2O 

ব্যবহার: মাছ ও মাংসের সংরক্ষণে ভিনেগার নাম এসিটিক এসিড ব্যবহৃত হয়। 

প্রশ্ন: মিথানয়িক এসিড ও ইথানয়িক এসিড এর মধ্যে পার্থক্য লিখ। (Difference between Methanoic Acid and Ethanoic Acid)

উত্তর: 

বিষয়মিথানয়িক এসিডইথানয়িক এসিড
কার্যকরী মূলকমিথানয়িক এসিডে এলডিহাইড এবং কার্বক্সিল উভয়মূলক বিদ্যমান।ইথানয়িক এসিডে শুধু কার্বক্সিল মূলক বিদ্যমান।
টলেন বিকারক পরীক্ষাটলেন বিকারক বিজারিত হয়। ফলে ধাতব সিলভারের কাল অধঃক্ষেপ বা সিলভার দর্পন উৎপন্ন হয়।
H – COOH + 2AgNH32OH→  2Ag↓+NH42CO3+2NH3+H2O
ইথানয়িক এসিড টলেন বিকারকের সাথে বিক্রিয়া দেখায়। উৎপন্ন হয় না।
ফেলিং দ্রবণ পরীক্ষাফেলিং দ্রবণকে বিজারিত করে কিউপ্রাস অক্সাইডের (Cu2 O) লাল বর্ণের অধঃক্ষেপ তৈরি করে।
H – COOH + 2CuOH2 + 2NaOH → Cu2O↓ + Na2CO3 + 4H20
কোন বিক্রিয়া দেখায় না।
অম্লত্বইথানয়িক এসিডের তুলনায় 10 গুণ শক্তিশালী।  এর pka = 3.74মিথানয়িক এসিড এর তুলনায়। দুর্বল। এর pka = 4.74
H2SO4, নিরূদন।এটি নিরুদিত হয়ে কার্বন মনোক্সাইড এবং পানি উৎপন্ন করে। HCOOH∆→ + CO+H20কোন নিরূদন ঘটে না।

প্রশ্ন: বিভিন্ন প্রকার ফলের মধ্যে কি কি এস্টার আছে তা উল্লেখ কর। (Different types of Esters are present in different types of fruits)

উত্তর:

নামউৎস
মিথাইল বিউটানোয়েটআপেল
ইথাইল বিউটানোয়েটআনারস
৩-মিথাইল বিউটাইল ইথানয়েট (আইসোঅ্যামাইল অ্যাসিটেট)নাশপাতি
অকটাইল ইথানোয়েটকমলা
পেন্টাইল ইথানোয়েট (অ্যামাইল অ্যাসিটেট)পাকা কলা
পেন্টাইল বিউটায়েটস্ট্রবেরী
মিথাইল অ্যানথ্রানিলেটআঙ্গুর

প্রশ্ন: কার্বক্সিলিক এসিড এবং অ্যাসাইল ক্লোরাইডের মধ্যে কোনটির রাসায়নিক সক্রিয়তা বেশী- ব্যাখ্যা কর। (Which of the following is more chemically active than Carboxylic acid and acyl chloride?)

উত্তর: অ্যাসাইল ক্লোরাইড (RCOCl) সক্রিয়তা এর কার্যকরী মূলকের আংশিক ধণাত্মক চার্জযুক্ত কার্বন পরমাণুতে নিউক্লিওকাইলের আক্রমণের মাত্রার উপর নির্ভর করে। ROCl এবং RCOOH এর গঠন নিমরূপ-

ক্লোরিনের ঋণাত্মক আবেশ ধর্মের (-l) কারণে এর দিকে বন্ধনের ইলেক্ট্রন ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে কার্বক্সিল কার্বনের আংশিক ধণাত্মক চার্জ আরো বেড়ে যায় । কিন্তু কার্বক্সিলিক এসিডের বেলায় -OH মূলক থেকে ইলেক্ট্রন ঘনত্ব কার্বনিল মূলকের কার্বন পরমাণুর দিকে আকৃষ্ট হয়। আমরা জানি, যেখানে ধণাত্মক চার্জ বেশী হবে সেখানে নিউক্লিওফিলিক প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া বেশী ঘটে। যেহেতু RCOCl এবং RCOOH এর মধ্যে RCOCl এর C পরমাণুতে ধণাত্মক চার্জের পরিমাণ বেশি তাই। অ্যাসাইল ক্লোরাইড এর সক্রিয়তা RCOOH এর তুলনায় বেশী।

প্রশ্ন: কার্বক্সিলিক মূলকের কার্বনিল মূলক ও হাইড্রক্সিল মূলক যথাক্রমে কার্বনাইল যৌগ ও অ্যালকোহলের বিক্রিয়া দেখায় না কেন? (Why carbonyl-based and hydroxyl-based carbonyl compounds and alcohols do not react) 

উত্তর: কার্বক্সিল মূলক একটি কার্বনিল মূলক (C =O) ও একটি হাইড্রক্সিল (OH) মূলকের সমন্বয়ে গঠিত। যুক্ত অবস্থায় মূলকদ্বয় পরস্পরকে এমনভাবে প্রভাবিত করে যে, কার্বক্সিলিক এসিডসমূহ কখনও কার্বনিল বা অ্যালকোহলের সাদৃশ্যপূর্ণ বিক্রিয়া দেখায়। কার্বক্সিলিক এসিড মূলকের গাঠনিক সংকেত নিম্নরূপ-

কার্বক্সিল এসিড মূলকের পোলার কার্বনিল মূলক হাইড্রক্সিল মূলকের অক্সিজেন হতে ইলেক্ট্রন নিজের দিকে টেনে নেয়। ফলে কার্বক্সিল এসিডের 0 – H বন্ধনের H পরমাণু সহজে আয়নিত হতে পারে। ফলে RCOOH সমূহ এসিড ধর্ম প্রদর্শন করে। এরা ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ উৎপন্ন করে এবং পানির সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রোনিয়াম আয়ন (H3O+) ও কার্বক্সিলেট আয়ন উৎপন্ন করে যা অ্যালকোহল প্রদর্শন করে না। অর্থাৎ on মূক প্রতিস্থাপিত না হয় ৬-আমন: হা: ৭৮ সদর প্রবণতা বাড়ে। অর্থাৎ OH মূলক প্রতিস্থাপিত না হয়ে O-H আয়নিত হয়ে দানের প্রবণতা বাড়ে।

আবার হাইড্রক্সিল মূলক হতে কার্বনাইল মূলকের দিকে ইলেক্ট্রন প্রবাহ কার্বনাইল মূলকের কার্বনাইল কার্বনে সৃষ্ট ধণাত্মব চার্জের পরিমাণকে হ্রাস করে। ফলে নিউক্লিওফাইল ঐ মূলকে কার্বনাইল যৌগের বেলায় (অ্যালডিহাইড বা কিটোন) যেভাবে আক্রমণ করতে পারে কার্বক্সিলিক এসিডের বেলায় অনুরূপ আক্রমণ করতে পারে না। তাই কার্বক্সিল এসিডসমূহ কার্বনিল যৌগসমূহের ন্যায় নিউক্লিওফিলিক যুত বিক্রিয়া দেখায় না।

উত্তর: কোন যৌগের অম্লত্ব নির্ভর করে ঐ যৌগ প্রোটন (H+)  দানের প্রবণতার উপর। যে যৌগ যত বেশী প্রোটন দান করতে পারে ঐ যৌগ তত বেশী অম্লীয় হয়। কার্বক্সিলিক (RCOOH) এসিড অণুতে অনুরণের ফলে OH মূলকের 0 পরমাণু ধণাত্মক আধান হওয়ায় 0 – H বন্ধনের ইলেক্ট্রন জোড় H এর চেয়ে O এর অধিকতর নিকটে চলে আসে। ফলে O-H বন্ধন দুর্বল হয় এবং H+ দান করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ফলে কার্বক্সিলিক এসিড অশ্লধর্মী হয়। এর অণুরণন গঠন নিয়ে দেওয়া হল

R –CO- 0- ↔ R -C↿O- = 0 

তাছাড়া RCOOH এসিড প্রোটন দান করার পর সৃষ্ট কার্বক্সিলেট আয়ন (RCOO-) অনুরণন সুস্থিত হয়। কারণ RCOO- আয়নের ঋণাত্মক চার্জ অণুরণনের মাধ্যমে সমভাবে উভয় অক্সিজেন পরমাণুর মধ্যে সমভাবে বণ্টন হয়। যা নিন্মে দেখানো হলো –

কিন্তু অ্যালকোহলের (R- OH) ক্ষেত্রে অনুরণন ঘটে না বলে -OH মূলক থেকে H+ বিমুক্ত করা কষ্টকর। তাছাড়া H+ দানের পর সৃষ্ট অ্যালকক্সাইড আয়ন অণুরণন সুস্থিত না হওয়ায় পশ্চাৎমুখী বিক্রিয়ার কারণে তা সহজে H’ দিতে পারে না। অর্থাৎ 

 R-OH                              ↔R -0-+ H+ 

তাই কার্বক্সিলিক এসিড অ্যালকোহল হতে শক্তিশালী এসিড।

কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid)

প্রশ্ন: কার্বক্সিলিক মূলকের কার্বনিল মূলক ও হাইড্রক্সিল মূলক যথাক্রমে কার্বনাইল যৌগ ও অ্যালকোহলের বিক্রিয়া দেখায় না কেন? (Why carbonyl-based and hydroxyl-based carbonyl compounds and alcohols do not react) 

উত্তর: কার্বক্সিল মূলক একটি কার্বনিল মূলক (C =O) ও একটি হাইড্রক্সিল (OH) মূলকের সমন্বয়ে গঠিত। যুক্ত অবস্থায় মূলকদ্বয় পরস্পরকে এমনভাবে প্রভাবিত করে যে, কার্বক্সিলিক এসিডসমূহ কখনও কার্বনিল বা অ্যালকোহলের সাদৃশ্যপূর্ণ বিক্রিয়া দেখায়। কার্বক্সিলিক এসিড মূলকের গাঠনিক সংকেত নিম্নরূপ-

কার্বক্সিল এসিড মূলকের পোলার কার্বনিল মূলক হাইড্রক্সিল মূলকের অক্সিজেন হতে ইলেক্ট্রন নিজের দিকে টেনে নেয়। ফলে কার্বক্সিল এসিডের 0 – H বন্ধনের H পরমাণু সহজে আয়নিত হতে পারে। ফলে RCOOH সমূহ এসিড ধর্ম প্রদর্শন করে। এরা ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ উৎপন্ন করে এবং পানির সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রোনিয়াম আয়ন (H3O+) ও কার্বক্সিলেট আয়ন উৎপন্ন করে যা অ্যালকোহল প্রদর্শন করে না। অর্থাৎ on মূক প্রতিস্থাপিত না হয় ৬-আমন: হা: ৭৮ সদর প্রবণতা বাড়ে। অর্থাৎ OH মূলক প্রতিস্থাপিত না হয়ে O-H আয়নিত হয়ে দানের প্রবণতা বাড়ে।

আবার হাইড্রক্সিল মূলক হতে কার্বনাইল মূলকের দিকে ইলেক্ট্রন প্রবাহ কার্বনাইল মূলকের কার্বনাইল কার্বনে সৃষ্ট ধণাত্মব চার্জের পরিমাণকে হ্রাস করে। ফলে নিউক্লিওফাইল ঐ মূলকে কার্বনাইল যৌগের বেলায় (অ্যালডিহাইড বা কিটোন) যেভাবে আক্রমণ করতে পারে কার্বক্সিলিক এসিডের বেলায় অনুরূপ আক্রমণ করতে পারে না। তাই কার্বক্সিল এসিডসমূহ কার্বনিল যৌগসমূহের ন্যায় নিউক্লিওফিলিক যুত বিক্রিয়া দেখায় না।

উত্তর: কোন যৌগের অম্লত্ব নির্ভর করে ঐ যৌগ প্রোটন (H+)  দানের প্রবণতার উপর। যে যৌগ যত বেশী প্রোটন দান করতে পারে ঐ যৌগ তত বেশী অম্লীয় হয়। কার্বক্সিলিক (RCOOH) এসিড অণুতে অনুরণের ফলে OH মূলকের 0 পরমাণু ধণাত্মক আধান হওয়ায় 0 – H বন্ধনের ইলেক্ট্রন জোড় H এর চেয়ে O এর অধিকতর নিকটে চলে আসে। ফলে O-H বন্ধন দুর্বল হয় এবং H+ দান করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ফলে কার্বক্সিলিক এসিড অশ্লধর্মী হয়। এর অণুরণন গঠন নিয়ে দেওয়া হল

R –CO- 0- ↔ R -C↿O- = 0 

তাছাড়া RCOOH এসিড প্রোটন দান করার পর সৃষ্ট কার্বক্সিলেট আয়ন (RCOO-) অনুরণন সুস্থিত হয়। কারণ RCOO- আয়নের ঋণাত্মক চার্জ অণুরণনের মাধ্যমে সমভাবে উভয় অক্সিজেন পরমাণুর মধ্যে সমভাবে বণ্টন হয়। যা নিন্মে দেখানো হলো –

কিন্তু অ্যালকোহলের (R- OH) ক্ষেত্রে অনুরণন ঘটে না বলে -OH মূলক থেকে H+ বিমুক্ত করা কষ্টকর। তাছাড়া H+ দানের পর সৃষ্ট অ্যালকক্সাইড আয়ন অণুরণন সুস্থিত না হওয়ায় পশ্চাৎমুখী বিক্রিয়ার কারণে তা সহজে H’ দিতে পারে না। অর্থাৎ 

 R-OH                              ↔R -0-+ H+ 

তাই কার্বক্সিলিক এসিড অ্যালকোহল হতে শক্তিশালী এসিড।

প্রশ্ন: কার্বক্সিলিক এসিডসমূহের অধর্মের কারণ ব্যাখ্যা কর। (The cause of carboxylic acids)

উত্তর: কোন যৌগের অম্লত্ব নির্ভর করে ঐ যৌগ প্রোটন (H+) দানের প্রবণতার উপর। যে যৌগ যত বেশী প্রোটন দান করতে পারে ঐ যৌগ তত বেশী অশ্লীয় হয়। কার্বক্সিলিক (RCOOH) এসিড অণুতে অণুরণনের ফলে OH মূলকের 0 পরমাণু ধণাত্মক আধান হওয়ায় 0 – H বন্ধনের ইলেক্ট্রন জোড় H এর চেয়ে 0 এর অধিকতর নিকটে চলে আসে। ফলে 0- H বন্ধন দুর্বল হয় এবং H+ দান করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। ফলে কার্বক্সিলিক এসিড অশ্লধর্মী হয়। এরা ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ উৎপন্ন করে এবং পানির সাথে যুক্ত হয়ে হাইড্রোনিয়াম আয়ন (H3O+) ও কার্বক্সিলেট আয়ন উৎপন্ন করে।

R -CO – 0 – H + H20↔R – CO – 0-+ H3O+ 

অ্যালকানয়েট আয়ন এর অণুরণন গঠন নিমে দেওয়া হল-

R-CO- 0-                 ↔  R -CO-= 0 

তাছাড়া RCOOH এসিড প্রোটন দান করার পর সৃষ্ট কার্বক্সিলেট আয়ন (RCOO-) অণুরণন সুস্থিত হয়। কারণ RCOO- আয়নের ঋণাত্মক চার্জ অণুরণের মাধ্যমে সমভাবে উভয় অক্সিজেন পরমাণুর মধ্যে সমভাবে বণ্টন হয়। যা নিয়ে দেখানো হলো-

প্রশ্ন: ফেনল এবং কার্বক্সিলিক এসিডের মধ্যে কিরূপে পার্থক্য করা যায়? (Difference between Phenol and Carboxylic acid)

উত্তর: ফেনল এবং কার্বক্সিলিক এসিড উভয়ে অম্লধর্মী যৌগ। তবে কার্বক্সিলিক এসিড কার্বনিক এসিড অপেক্ষা শক্তিশালী কারণ এটি NaHCO3  এর সাথে বিক্রিয়া করে বুদবুদ আকারে CO2 গ্যাস উৎপন্ন করে। যা চুনের পানিকে ঘোলাটে করে।

RCOOH + NaHCO3 → RCOONa + CO2 +H2O

CaOH2 + CO2→ CaCO3 + H2O

কিন্তু ফেনল কার্বনিক এসিড (H2CO3) অপেক্ষা দুর্বল হওয়ায় তা  NaHCO3 এর সাথে বিক্রিয়া করে CO2 উৎপন্ন করে না ।

প্রশ্ন: কিরূপে কার্বক্সিল মূলক সনাক্ত করা যায়? (Way to identify Carboxyl group)

উত্তর: কার্বক্সিলিক এসিড NaHCO3 এর সাথে বিক্রিয়া করে CO2 উৎপন্ন করে যা চুনের পানি ঘোলাটে করে।

RCOOH + NaHCO3 → RCOONa + CO2 +H2O  

CaOH2 CO2 → CaCO3 + H2O

কার্বক্সিলিক এসিডের জাতকসমূহের কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিক্রিয়া

(Some important reactions of Derivative of carboxylic acis)

(ক) এসিড ক্লোরাইড (RCOCI) এর বিজারণ:

  (i) রোজেনমুন্ড বিজারণ:

R-CO-Cl+H2Pd, BaSO4→R-CO-H+ HCl

  উদাহরণ:

CH3-CO-Cl+H2Pd, BaSO4→CH3-CO-H+ HCl

(ii) তীব্র বিজারণ:

R-CO-Cl+4H   LiAlH4→                     শুল্ক ইথার R-CH2OH+HCl

  উদাহরণ:

CH3-CO-Cl+4HLiAlH4→CH3CH2OH+HCl

প্রস্তুতি: R -CNH2O3→H+,H2O RCONH2

(খ) এসিড অ্যামাইড (RCONH2) এর বিক্রিয়া:

(i) P205 দ্বারা নিরুদন:

R-CO- NH2P2O5,∆→  R-C = N + H2O 

উদাহরণ:

CH3 -CO – NH2, P2O5,∆→ CH3-C≡ N + H2O 

(ii) নাইট্রাস এসিডের সাথে বিক্রিয়া :

RCONH2 +HNO2NaNO2+→HCL  RCOOH + N2 + H20

উদাহরণ:   CH3CONH2 +HNO2     CH3COOH + N2 + H20 

(iii) হফম্যান ডিগ্রেডেশন বিক্রিয়া:

CH3CONH2 +Br2+4NaOH∆→ CH3NH2 + 2NaBr + Na2CO3+2H2O

(iv) বিজারণ:

RCONH2 +4HLiAlH4→ RCH2 – NH2 + H2O

                         উদা: CH3CONH2 + 4[H]      CH3CH2NH2 + H2O 

কার্বক্সিলিক এসিড (Carboxylic acid)

প্রশ্ন: কার্বক্সিলিক এসিডের স্ফুটনাংক সমআনবিক ভরের অ্যালকোহল অপেক্ষা বেশী কেন? (The boiling point of carboxylic acid is higher than that of alcohol of homogeneous mass)

উত্তর: কার্বক্সিলিক এসিডসমূহের অণুগুলো H-বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ থাকে। বাষ্পীয় অবস্থায় এবং জৈব দ্রাবকে কার্বক্সিলিক এসিড ডাইমার গঠন করে। 

যে সব জৈব এসিডের প্রতি অণুতে দুটি H-বন্ধন গঠনের সুবিধা আছে। তাদের স্ফুটনাংক সমআণবিক ভরের অ্যালকোহলের ফুটনাংক থেকে বেশী হয়।

প্রশ্ন: CH3COOH, CICH2COOH, CHCl2COOH এবং CCl3COOH এর অম্লত্বের ক্রম আলোচনা কর। (Order of H3COOH, CICH2COOH, CHCl2COOH And CCl3COOH)

উত্তর: যেসব যৌগ পরমাণু বা আয়ন পোটন (H+) দান সক্ষম তাদেরকে এসিড বলে। যে যৌগের H+ দানের প্রবণতা যত বেশী সেটি অধিক শক্তিশালী এসিড হয়।

প্রদত্ত যৌগ সমূহের মধ্যে CH3COOH এবং CICH2COOH এর গঠন হতে দেখা যায় CICH2-COOH এর কার্বনে একটি ইলেক্ট্রন আকর্ষী (ঋণাত্মক আবেশীয় ধর্ম) ক্লোরিন পরমাণু যুক্ত থাকে। ফলে Cl পরমাণু এর আকর্ষণে ইলেক্ট্রন Cl এর দিকে সরে যায় এবং আবেশিত ফলাফল জনিত কারণে কার্বনিল কার্বনের ধণাত্মকতা বেড়ে যাওয়ায় 0 – H বন্ধন দুর্বল হয়ে থাকে। ফলে (H) পরমাণু সহজে প্রোটন হিসেবে আলাদা হতে পারে। কিন্তু CHCOOH এ কার্বনিল কার্বনের সাথে একটি ইলেক্ট্রন দানকারী মূলক (ধণাত্মক আবেশীয় ধর্ম)-CH3 যুক্ত থাকায় কার্বনের ধণাত্মক চার্জ কিছুটা হ্রাস পায়। ফলে H+ ত্যাগের প্রবণতা CICH2COOH এর মতে সহজে হয় না।

আবার কার্বক্সিলেট এসিডের ৫-কার্বনে ইলেক্ট্রনগ্রাহী প্রতিস্থাপক (Cl) এর সংখ্যা যত বাড়ে উপরোক্ত কারণে অম্লত্বও তত বৃদ্ধি পায়। তাই প্রদত্ত যৌগসমূহকে তাদের অম্লত্বের বৃদ্ধির ক্রমানুসারে নিমরূপে সাজনো যায়।

CCl3 COOH > CHCI2COOH > CICH2COOH > CH 3COOH 

pKa = 0.64   (pKa = 1.26)    (pKa = 2.85)     (pKa = 4.74) 

প্রশ্ন: মিথানয়িক এসিড এবং ইথানয়িক এসিডের মধ্যে কোনটি অধিক শক্তিশালী ব্যাখ্যা কর। 

উত্তর: মিথানয়িক এসিড (HCOOH) এবং ইথানয়িক এসিড (CH3COOH) এর গঠন নিমরূপ:

যে যৌগের প্রোটন দানের প্রবণতা যত বেশী সে যৌগ তত বেশী অম্লধর্মী হবে। উপরোক্ত দুই গঠন হতে দেখা যায় CH3COOH এর কার্বনিল কার্বনের সাথে একটি ইলেক্ট্রন দানকারী মূলক (ধণাত্মক আবেশীয় ধর্ম) -CH, যুক্ত আছে। ফলে কার্বনিল কার্বনের ধণাত্মক চার্জ কিছুটা হ্রাস পায়। ফলে H+  দান করার প্রবণতা কম। কিন্তু মিথানয়িক এসিডের কার্বনিল কার্বনের সাথে কোন ইলেক্ট্রন দানকারী মূলক যুক্ত না থাকায় এর কার্বনিল কার্বনের ধণাত্মক চার্জ বেড়ে যাওয়ায় 0-H বন্ধন থেকে ইলেক্ট্রন কার্বনিল কার্বনের দিকে ধাবিত হয়। ফলে O – H বন্ধন দুর্বল হয়ে থাকে। তাই H+ দানের প্রবণতা বেড়ে যায়। 

প্রশ্ন: অ্যামাইডসমূহ অ্যামোনিয়ার তুলনায় দুর্বল ক্ষারধর্মী- ব্যাখ্যা কর। (Amides are weakly alkaline compared to ammonia)

উত্তর: প্রোটনীয় মতবাদ অনুসারে যেসব রাসায়নিক সত্ত্বা প্রোটন গ্রহণ করতে পারে তাদেরকে ক্ষার বলে। আবার লুইস মতবাদ মতে যে সব রাসায়নিক সত্ত্বা ইলেকট্রন জোড় দান করতে সক্ষম তাদেরকে ক্ষারক বলে। যার প্রোটন গ্রহণ ক্ষমতা অথবা ইলেক্ট্রন জোড় দান ক্ষমতা বেশী সেটি শক্তিশালী ক্ষারক হবে। অ্যামাইড এবং অ্যামোনিয়ার গঠন নিম্নরূপ-

অ্যামাইডের N পরমাণুতে নি:সঙ্গ ইস্ট্রেন যুগল থাকায় এরা ক্ষারকরূপে আচরণ করে, কিন্তু এ নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন যুগল অ্যামাইডমূলকে সঞ্চারণশীল থাকে বলে তা প্রোটনের জন্য সহজলভ্য নয়। অ্যামাইডের অণুরণন গঠন নিম্নে দেয়া হল-

কিন্তু NH3 তে এ ধরনের কোন অণুরণন না ঘটায় এর N- পরমাণু সহজে প্রোটন গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে ইলেক্ট্রন জোড়ের দানের প্রবণতা বেশী বলেই NH3এর ক্ষারকত্ব বেশী। ক্ষারকত্ব N এর ইলেক্ট্রন প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে বলেই অ্যামাইডের ক্ষারকত্ব অ্যামোনিয়া অপেক্ষা কম। 

প্রশ্ন: “মিথানয়িক এসিডের এসিড ও বিজারণ ধর্ম আছে”- ব্যাখ্যা কর। (Methanoic acid has acid and reduction properties)

উত্তর: মিথানয়িক (HCOOH) এসিডের গঠন নিম্নরূপ- 

উপরের গঠন হতে দেখা যায় HCOOH এসিডে অ্যালডিহাইড এবং কার্বক্সিল মূলক আছে। এ মূলক সমূহের উপস্থিতিতে নিমের পরীক্ষা দ্বারা বুঝা যায়-

(i) অ্যালডিহাইড মূলকের বিজারণ ধর্ম আছে। যেহেতু HCOOH এ অ্যালডিহাইড মূলক আছে সেহেতু HCOOH বিজারণ ধর্ম দেখায়। যেমন-

(ক) HCOOH এসিড ফেলিং দ্রবণে চালনা করা হলে HCOOH ফেলিং দ্রবণকে বিজারিত লাল বর্ণের কিউপ্রাস অক্সাইড (Cu2O) এর অধঃক্ষেপ পড়ে।

HCOOH + 2CuOH2 + 2NaOH → Cu0+ HQ0+ NapCO3

(খ) HCOOH এসিড টলেন বিকারক দ্রবণে চালনা করা হলে HCOOH এসিড টলেন বিকারককে বিজারিত করে সিলভার দর্পন উৎপন্ন করে।

HCOOH + 2AgNH32OH→ NH42CO3 + 2H2O + 2Ag + 2NH3

iiHCOOH এর এসিড ধর্ম: নিমোক্ত বিক্রিয়া হতে HCOOH এর অম্ল ধর্ম প্রকাশ পায়। 

মিথানয়িক এসিড ধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।

2HCOOH + Mg → HCOO2,Mg + H2 

মিথানয়িক এসিড় ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।

HCOOH + NaOH → HCOONa + H2O 

মিথানয়িক এসিড সোডিয়াম বাই কার্বনেটের সাথে বিক্রিয়া করে বুদবুদ আকারে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন করে।

HCOOH + NaHCO3 + HCOONa+ CO2 + H2O

প্রশ্ন: গ্লিসারিন প্রস্তুতির একটি পদ্ধতি লিখ। (A method of preparation of glycerin)

উত্তর : তেল বা চর্বিকে ক্ষারীয় আর্দ্র বিশ্লেষণ করে সাবান প্রস্তুত করার প্রক্রিয়াকে সাবানায়ন বা স্যাপোনিফিকেশন বলে । এসময় উপজাত হিসেবে গ্লিসারিন পাওয়া যায় ।

প্রশ্ন: কিরূপে গ্লিসারিন সনাক্ত করা যায়। (Glycerin detection)

উত্তর: গ্লিসারিনকে নিরুদক KHSO4 বা P2O5 সহ উত্তপ্ত করলে এক অণু গ্লিসারিন হতে দুই অণু পানি অপসারিত হয়ে বিশ্রী গন্ধযুক্ত অ্যাক্রোলিন উৎপন্ন হয়। একে অ্যাক্রোলিন পরীক্ষা বলে।

প্রশ্ন: ডেটল কী? এর সংযুক্তি উল্লেখ কর।  (Dettol and it’s composition)

উত্তর: ডেটল হল একটি বাণিজ্যিক নাম, যা অ্যান্টিসেপটিক এবং পরিষ্কারক কাজে ব্যবহৃত হয়। এর সংযুক্তিগুলো নিমরূপ। 

১. 4.8% ক্লোরোজাইলিনল । এটি ডেটলের প্রধান উপাদান যা এন্টিসেপ্টিক এবং সংক্রামকরোধী ও পচন নিবারক হিসেবে কাজ করে ।

২. আইসোপ্রোপানল 40% । এটি অন্যান্য জীবাণু ধ্বংস করে। 

৩. 10 – 15% পাইন অয়েল। এটি দ্রাবক হিসেবে কাজ করে, এটিতে ক্লোরোজাইলিনল দ্রবীভূত হয়। 

৪. 70 – 75% সাবান পানি। এটি পরিস্কারক হিসেবে কাজ করে। 

এটি পানিতে খুব কম পরিমাণ দ্রবীভূত হয়। এর দ্রাব্যতা হল 330mgL-1

প্রশ্ন: নাইট্রোগ্লিসারিন প্রস্তুতির একটি পদ্ধতি লিখ। (A method of preparation of nitroglycerin)

উত্তর: একটি গোলতলী ফ্লাক্সের মধ্যে 7ml ধূমায়িত H2SO4 এবং 9ml HNO3 এসিড বা নির্দিষ্ট অনুপাতে নিয়ে বরফ শীতল পানিতে শীতল করা হয়। অত:পর এ অবস্থায় ফ্লাক্সের মধ্যে প্রায় 20ml গ্লিসারিনকে ফোটায় যোগ করা হয়। মিশ্রণকে স্থির অবস্থায় তাপমাত্রা 30°C এর নীচে নিয়ন্ত্রণ করে প্রায় 30 মিনিটকাল রেখে দেওযা হয় ফলে নাইট্রোগ্লিসারিন উৎপন্ন হয়। 

পৃথকীকরণ: গোলতলী ফ্লাক্সের উৎপন্ন নাইট্রোগ্লিসারিনসহ মিশ্রণকে পৃথকীকরণ ফানেলের সাহায্যে নাইট্রোগ্লিসারিনের স্তরকে পৃথক করে নেওয়া হয়। অত:পর তাকে 15°C তাপমাত্রার নিচে সংরক্ষণ করা হয়।

 

Promotion