পেশিতে টান পড়ে কিন্তু ধাক্কা দেয় না (Muscle can Pull but can not Push) : পেশি আমাদের চলন ও ভঙ্গিমা নিয়ন্ত্রণ করে, মানবদেহের স্বাভাবিক কর্মকান্ড পরিচালনায় প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। পেশির ব্যবহার এক-দুদিনের নয়, নিত্যদিনের। প্রতিটি কাজ পেশি নির্ভর। আমরা জার্নি মানবদেহে ৩ ধরনের পেশি আছে। মসৃণপেশি, হৃৎপেশি ও কঙ্কালপেশি।
পেশি কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে আমাদের অনেকেরই স্পষ্ট ধারণা নেই। আমরা প্রত্যেকদিন কাজ করি। যেমন-হাত ভাঁজ করা-সোজা করা বিষয়টি দেখতে যত সহজ সাবলিল মনে হয়, এর গূঢ়তত্ত্ব ঠিক ততোখানি কঠিন। এর মূল রহস্য হচ্ছে সংশ্লিষ্ট পেশিগুলো সংকুচিত হয় ও টান দেয়, কিন্তু ধাক্কা দেয় না বরং প্রসারিত থাকে। মানবদেহের কঙ্কালিক পেশিগুলো জোড়ায় জোড়ায় থাকে, এদের কাজ পরস্পর বিপরীতমুখি (প্রতিপক্ষীয় জোড়, antagonistic pairs)। বাইসেপস (biceps) ও ট্রাইসেপস (triceps) বাহুর অন্যতম প্রধান পেশি। বাইসেপস হচ্ছেনিম্নবাহুর রেডিয়াসের উপরে অবস্থিত পেশি যা কনুই সন্ধিকে বাঁকিয়ে নিম্নবাহুকে ভাঁজ হওয়া নিম্নবাহুকে টেনে সোজা করে উর্ধ্ববাহু থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া। পেশিগুলো এমনভাবেই গঠিত যাতে কেবল সংকুচিত হতে পারে (অর্থাৎ টান দিতে পারে), ধাক্কা দিতে পারে না। পেশি নিজে বাঁকা হয় না, সন্ধিকে টেনে বাঁকিয়ে আনে। এভাবে বাঁকিয়ে এনে সন্ধি-কোণ কমিয়ে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত বাইসেপসকে বাড়িয়ে দিয়ে অর্থাৎ সোজা করিয়ে দেওয়ায় ট্রাইসেপককে এক্সটেন্সর (extensor) বলে । অ্যাকটিন ও মায়োসিন এ দুধরনের প্রোটিন থাকে বলে পেশি টানতে পারে। এসব প্রোটিন পেশিকোষের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত প্রসারিত থাকে। সংশ্লিষ্ট পেশির প্রতিটি কোষ মস্তিষ্কের কোনো অংশ থেকে সংকোচনের সংকেত পেলে মস্তিষ্কের অন্য অংশ থেকে পৃথক বৈদ্যুতিক উদ্দীপনাগুলোকে সমন্বিত করে 'টান' দেওয়ার কাজটি সম্পন্ন করে।
হাড়কে আগের অবস্থানে ফিরিয়ে নিতে বিপরীতধর্মী পেশিও সম্মিলিতভাবে একই কাজ করে অর্থাৎ টেনে সোজা করে দেয়। এ কারণেই বলা হয় যে পেশিতে টান পড়ে কিন্তু ধাক্কা দেয় না ।