বেগতিক শব্দে ব্যবহৃত ‘বে' কোন ধরনের উপসর্গ?
বাংলা ভাষায় এমন কতগুলো অব্যয়সূচক শব্দাংশ রয়েছে, যা স্বাধীন পদ হিসেবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না। এগুলো অন্য শব্দের আগে বসে। এর প্রভাবে শব্দটির কয়েক ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়। যেমন-
১. নতুন অর্থবোধক শব্দ তৈরি হয়।
২. শব্দের অর্থের পূর্ণতা সাধিত হয় ।
৩. শব্দের অর্থের সম্প্রসারণ ঘটে।
৪. শব্দের অর্থের সংকোচন ঘটে। এবং
৫. শব্দের অর্থের পরিবর্তন ঘটে।
ভাষায় ব্যবহৃত এসব অব্যয়সূচক শব্দাংশেরই নাম উপসর্গ। যেমন ‘কাজ' একটি শব্দ । এর আগে ‘অ’ - অব্যয়টি যুক্ত হলে হয় ‘অকাজ’ যার অর্থ নিন্দনীয় কাজ। এখানে অর্থের সংকোচন হয়েছে। -
‘পূর্ণ’ (ভরা) শব্দের আগে ‘পরি’ যোগ করায় ‘পরিপূর্ণ' হলো। এটি পূর্ণ শব্দের সম্প্রসারিত রূপ (অর্থে ও আকৃতিতে)। ‘হার’ শব্দের পূর্বে ‘আ’ যুক্ত করে ‘আহার’ (খাওয়া), ‘প্র’ যুক্ত করে ‘প্রহার’ (মারা), 'বি' যুক্ত করে ‘বিহার' (ভ্রমণ), 'পরি' যোগ করে ‘পরিহার' (ত্যাগ), ‘উপ’ যোগ করে ‘উপহার’ (পুরস্কার), ‘সম’ যোগ করে ‘সংহার’ (বিনাশ) ইত্যাদি বিভিন্ন অর্থে বিভিন্ন শব্দ তৈরি হয়েছে।
এ উপসর্গগুলোর নিজস্ব কোনো অর্থবাচকতা নেই, কিন্তু অন্য শব্দের আগে যুক্ত হলে এদের অর্থদ্যোতকতা বা নতুন শব্দ সৃজনের ক্ষমতা থাকে।
বাংলা ভাষায় তিন প্রকার উপসর্গ আছে : বাংলা, তৎসম (সংস্কৃত) এবং বিদেশি উপসর্গ।