or
or
নাসিক্য ধ্বনি তৈরি হয় কীভাবে?
ধ্বনি উচ্চারণ করতে যেসব প্রত্যঙ্গ কাজে লাগে, সেগুলোকে একত্রে বাগযন্ত্র বলে। মানবদেহের উপরিভাগে অবস্থিত ফুসফুস থেকে শুরু করে ঠোঁট পর্যন্ত ধ্বনি উৎপাদনে ব্যবহৃত প্রতিটি প্রত্যঙ্গই বাগযন্ত্রের অন্তর্ভুক্ত। বাগযন্ত্রের বিভিন্ন অংশ নিচের ছবিতে দেখানো হলো এবং এগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচয় পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো।
ধ্বনি সৃষ্টিকারী বায়ুপ্রবাহের উৎস ফুসফুস। ফুসফুস শ্বাস গ্রহণ ও ত্যাগ করে। মূলত শ্বাস ত্যাগের মাধ্যমে ধ্বনি উৎপন্ন হয়।
ফুসফুস থেকে বাতাস শ্বাসনালি হয়ে মুখবিবর ও নাসারন্ধ্র দিয়ে বের হয়ে আসে।
শ্বাসনালির উপরের অংশে স্বরযন্ত্রের অবস্থান। মেরুদণ্ডের ৪, ৫ ও ৬ নং অস্থির পাশে থাকা এই অংশটি নলের মতো। বাতাস স্বরযন্ত্রের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসে বলে ধ্বনির সৃষ্টি হয়। অধিজিহ্বা, স্বররন্ধ্র, ধ্বনিদ্বার ইত্যাদি স্বরযন্ত্রের অংশ।
মুখগহ্বরের নিচের অংশে জিভের অবস্থান। বাগ্যন্ত্রের মধ্যে জিভ সবচেয়ে সচল ও সক্রিয় প্রত্যঙ্গ। জিভের উচ্চতা অনুযায়ী, সম্মুখ-পশ্চাৎ অবস্থান অনুযায়ী এবং মুখগহ্বরের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে জিভের স্পর্শের প্রকৃতি অনুযায়ী ধ্বনির বৈচিত্র্য তৈরি হয়।
মুখগহ্বরের কোমল তালুর পিছনে ঝুলন্ত মাংসপিণ্ডের নাম আলজিভ। ধ্বনি উচ্চারণের সময়ে কোমল তালুর সঙ্গে আলজিভ নিচে নেমে এলে বাতাস মুখ দিয়ে পুরোপুরি বের না হয়ে খানিকটা নাক দিয়ে বের হয়। এর ফলে নাসিক্য ধ্বনি তৈরি হয়।
মুখবিবরের ছাদকে বলা হয় তালু। তালুর দুটি অংশ কোমল তালু ও শক্ত তালু। অনুনাসিক স্বরধ্বনি - উচ্চারণে কোমল তালু নিচে নামে। কোমল তালু ও জিভমূলের স্পর্শে কণ্ঠ্যধ্বনি উচ্চারিত হয়। দন্তমূলের শুরু থেকে কোমল তালু পর্যন্ত বিস্তৃত অংশকে বলা হয় শক্ততালু।
শক্ত তালু ও উপরের পাটির দাঁতের মধ্যবর্তী উত্তল অংশকে মূর্ধা বলে। কোনো কোনো ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণের সময়ে জিভ মূর্ধাকে স্পর্শ করে।
দাঁতের গোড়ার নাম দন্তমূল। উপরের পাটির দন্তমূল ও দাঁতের সঙ্গে জিভের স্পর্শে বেশ কিছু ধ্বনি উৎপন্ন হয়।
বাকপ্রত্যঙ্গের সবচেয়ে বাইরের অংশের নাম ওষ্ঠ বা ঠোঁট। ওষ্ঠের মধ্যকার ফাঁকের কম-বেশির ভিত্তিতে স্বরধ্বনিকে সংবৃত ও বিবৃত এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। এছাড়া ব্যঞ্জনধ্বনি উচ্চারণ করতে ওষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মুখগহ্বরের পাশাপাশি নাসিকা বা নাকের ছিদ্র দিয়ে বাতাস বের হয়েও ধ্বনি উৎপন্ন হয়।
