মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন নবাব সলিমুল্লাহ।

তিনি ১৯০৬ সালে ঢাকায় মুসলিম লীগ গঠনের উদ্যোগ নেন। মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ ভারতে মুসলিমদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থ রক্ষা করা।

মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা, যা ব্রিটিশ ভারতে মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের রাজনৈতিক অধিকার সুরক্ষার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল। এর প্রতিষ্ঠা ও ইতিহাস বিস্তারিতভাবে নিচে আলোচনা করা হলো:

মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠার পটভূমি:

১৯ শতকের শেষ দিকে এবং ২০ শতকের শুরুর দিকে ব্রিটিশ ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিকভাবে অনেকটা পিছিয়ে ছিল। মুসলিমরা ব্রিটিশ শাসনামলে প্রশাসনিক, শিক্ষাগত এবং রাজনৈতিক সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। মুসলিমদের অধিকার রক্ষায় এবং তাদের স্বার্থ বজায় রাখার জন্য একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম প্রয়োজন ছিল।

মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠা:

নবাব সলিমুল্লাহ ছিলেন মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠার মূল উদ্যোক্তা। ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় এক গুরুত্বপূর্ণ সভায় মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ এবং অন্য মুসলিম নেতাদের প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।

প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান লক্ষ্য:

• ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করা।
• মুসলিমদের অধিকার এবং সুযোগ সুরক্ষার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সাথে সহযোগিতা করা।
• মুসলিম সম্প্রদায়ের শিক্ষাগত, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করা।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা:

• নবাব সলিমুল্লাহ: ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
• আগা খান: মুসলিম লীগের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্যার আগা খান।
• সৈয়দ আমীর আলী: তিনি মুসলিমদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

মুসলিম লীগের ভবিষ্যৎ:

মুসলিম লীগ প্রথমদিকে মুসলিমদের অধিকার রক্ষার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছিল। তবে ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের মাধ্যমে মুসলিম লীগ ভারত উপমহাদেশে মুসলমানদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্রের দাবি তোলে, যা পরবর্তীতে পাকিস্তান সৃষ্টির পথ প্রশস্ত করে।

মুসলিম লীগের লক্ষ্য ও প্রভাব:

• মুসলিম লীগ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধিতা করেছিল, কারণ তারা মনে করত কংগ্রেস পুরো ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে না এবং মুসলিমদের স্বার্থে কাজ করছে না।
• ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের মাধ্যমে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়, এবং মুসলিম লীগই এর নেতৃত্ব দেয়।

এইভাবে, মুসলিম লীগ উপমহাদেশের মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করে।