সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিট
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিট এমন এক ধরনের লজিক সার্কিট যেখানে আউটপুট বর্তমান ইনপুট এবং পূর্ববর্তী আউটপুট বা অবস্থা (স্টেট) উভয়ের উপর নির্ভর করে। এতে মেমরি উপাদান ব্যবহৃত হয় যা পূর্ববর্তী অবস্থা সংরক্ষণ করে এবং সেগুলি নতুন আউটপুট তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটের বৈশিষ্ট্য
- অবস্থার উপর নির্ভরশীল আউটপুট: এই সার্কিটে আউটপুট বর্তমান ইনপুটের পাশাপাশি পূর্ববর্তী অবস্থা বা মেমরির উপরও নির্ভর করে।
- মেমরি উপাদান ব্যবহৃত হয়: সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটে ফ্লিপ-ফ্লপ বা ল্যাচের মতো মেমরি উপাদান থাকে, যা পূর্ববর্তী আউটপুট বা অবস্থা সংরক্ষণ করতে সক্ষম।
- ক্লক সিগন্যালের ব্যবহার: বেশিরভাগ সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটে নির্দিষ্ট সময়ে পরিবর্তন আনার জন্য একটি ক্লক সিগন্যাল ব্যবহৃত হয়।
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটের প্রকারভেদ
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিট দুই প্রকার হতে পারে:
১. সিঙ্ক্রোনাস (Synchronous) সিকোয়েন্সিয়াল লজিক
- সিঙ্ক্রোনাস সার্কিটগুলোতে পরিবর্তন আনার জন্য নির্দিষ্ট ক্লক পালস ব্যবহার করা হয়। এই সার্কিটগুলোতে ফ্লিপ-ফ্লপ ব্যবহৃত হয়, এবং ক্লক পালসের পরিবর্তনে আউটপুটের অবস্থা পরিবর্তিত হয়।
- উদাহরণ: কাউন্টার, রেজিস্টার, শিফট রেজিস্টার ইত্যাদি।
২. অ্যাসিঙ্ক্রোনাস (Asynchronous) সিকোয়েন্সিয়াল লজিক
- অ্যাসিঙ্ক্রোনাস সার্কিটে কোনো নির্দিষ্ট ক্লক পালস ব্যবহৃত হয় না, বরং ইনপুট পরিবর্তনের সাথে সাথে আউটপুটও পরিবর্তিত হয়।
- এই সার্কিটগুলো সাধারণত কমপ্লেক্স লজিক ডিজাইনে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ইনপুট পরিবর্তনের সঙ্গে আউটপুট তাত্ক্ষণিক পরিবর্তিত হতে হবে।
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটের প্রধান উপাদান
ফ্লিপ-ফ্লপ (Flip-Flop): ফ্লিপ-ফ্লপ হল একটি মেমরি উপাদান যা একটি বিট তথ্য সংরক্ষণ করতে পারে। বিভিন্ন প্রকার ফ্লিপ-ফ্লপ রয়েছে, যেমন SR (Set-Reset), JK, D (Data), T (Toggle) ইত্যাদি, যা বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে ব্যবহৃত হয়।
ল্যাচ (Latch): ল্যাচ একটি বেসিক মেমরি উপাদান যা ইনপুটে ১ বা ০ রাখে এবং আউটপুটে দেয়। সাধারণত ল্যাচে ক্লক পালস ব্যবহৃত হয় না, তবে ইনপুটে পরিবর্তন হলে আউটপুটও পরিবর্তিত হয়।
ক্লক পালস (Clock Pulse): ক্লক পালস একটি সিগন্যাল যা নির্দিষ্ট সময়ে অবস্থান পরিবর্তন ঘটায় এবং সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটের সিঙ্ক্রোনাইজেশন নিশ্চিত করে।
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটের উদাহরণ
কাউন্টার: এটি একটি সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট যা নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে গুনে আউটপুট প্রদান করে। এটি একটি বাইনারি সংখ্যা হিসেবে সময় বা ঘটনা গুনে রাখা হয়।
শিফট রেজিস্টার: এটি এমন একটি সার্কিট যা প্রতিটি ক্লক পালসে ডেটা বিটগুলোকে একটি নির্দিষ্ট দিকে সরিয়ে দেয়। এটি ডেটা প্রসেসিং এবং ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
স্মৃতি উপাদান (Memory Elements): র্যাম (RAM), রম (ROM) ইত্যাদি স্টোরেজ ডিভাইসে সিকোয়েন্সিয়াল লজিক ব্যবহার করা হয়, যা ডেটা সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারে সহায়ক।
কন্ট্রোল ইউনিট: মাইক্রোপ্রসেসর এবং মাইক্রোকন্ট্রোলারের কন্ট্রোল ইউনিট সিকোয়েন্সিয়াল লজিক দ্বারা তৈরি করা হয়, যা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটের ব্যবহার
- কম্পিউটার মেমরি ও প্রসেসর ডিজাইন: তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত হয়।
- ডেটা শিফটিং ও সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন: শিফট রেজিস্টারের মাধ্যমে ডেটা সরানো হয়।
- কাউন্টিং অপারেশন: ডিজিটাল ঘড়ি, টাইমার, ইভেন্ট কাউন্টিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
- স্টেট মেশিন: ফিনিট স্টেট মেশিন ডিজাইন করতে এবং জটিল কাজ সম্পাদন করতে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ:
ডিজিটাল ঘড়িতে সেকেন্ড, মিনিট এবং ঘন্টা গুনতে সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিট ব্যবহৃত হয়, যেখানে প্রতিটি সেকেন্ডে ক্লক পালসের মাধ্যমে সময় গণনা করা হয়।
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটের বেসিক ধারণা
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট এমন একটি ডিজিটাল সার্কিট যা ইনপুটের সাথে সাথে পূর্ববর্তী আউটপুট বা অবস্থা (state) স্মরণ করে এবং তার উপর ভিত্তি করে বর্তমান আউটপুট তৈরি করে। এই ধরনের সার্কিটে মেমরি এলিমেন্ট থাকে, যা বর্তমান অবস্থা সংরক্ষণ করে। এটি কম্বিনেশনাল সার্কিট থেকে ভিন্ন, কারণ কম্বিনেশনাল সার্কিটে কোনো মেমরি এলিমেন্ট থাকে না এবং আউটপুট কেবল ইনপুটের উপর নির্ভর করে।
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট ডিজিটাল সিস্টেমের মূল ভিত্তি, যা কম্পিউটার প্রসেসিং, কন্ট্রোল সিস্টেম এবং অটোমেশন ডিজাইন ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটের বৈশিষ্ট্য
১. মেমরি এলিমেন্ট: সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটে মেমরি বা স্টোরেজ এলিমেন্ট থাকে, যা পূর্ববর্তী অবস্থাকে স্মরণ রাখে এবং তা বর্তমান আউটপুটের সাথে যুক্ত হয়। সাধারণত ফ্লিপ-ফ্লপ বা ল্যাচ ব্যবহার করে এই মেমরি তৈরি করা হয়।
২. ফিডব্যাক মেকানিজম: সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটে আউটপুট কিছু অংশ আবার ইনপুটে ফিরে যায়, যাকে ফিডব্যাক বলা হয়। এই ফিডব্যাকের মাধ্যমেই বর্তমান আউটপুট পূর্ববর্তী আউটপুটের উপর নির্ভর করে।
৩. ক্লক সিগন্যাল: অনেক সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটে ক্লক সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়। ক্লক সিগন্যাল সার্কিটকে নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে অবস্থান পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়।
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটের প্রকারভেদ
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট সাধারণত দুই প্রকার:
১. সিনক্রোনাস সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট
- এই সার্কিটে ক্লক সিগন্যাল ব্যবহার করা হয়, যা প্রতিটি ফ্লিপ-ফ্লপ বা মেমরি এলিমেন্টকে নির্দিষ্ট সময়ে আপডেট করতে সহায়তা করে।
- সিনক্রোনাস সার্কিটে সমস্ত ফ্লিপ-ফ্লপ একই ক্লক সিগন্যালের সাথে সিঙ্ক্রোনাইজ থাকে।
- উদাহরণ: কাউন্টার, রেজিস্টার, শিফট রেজিস্টার ইত্যাদি।
২. অ্যাসিনক্রোনাস সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট
- অ্যাসিনক্রোনাস সার্কিটে ক্লক সিগন্যাল থাকে না। এতে আউটপুট ইনপুটের পরিবর্তনের সাথে সাথেই আপডেট হয়।
- এই ধরনের সার্কিটে বিলম্ব বা গ্লিটচ (glitch) হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- উদাহরণ: অ্যাসিনক্রোনাস কাউন্টার।
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটের উদাহরণ
১. ফ্লিপ-ফ্লপ
ফ্লিপ-ফ্লপ হলো একটি মৌলিক মেমরি এলিমেন্ট যা সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটে বর্তমান অবস্থাকে ধরে রাখে। বিভিন্ন ধরনের ফ্লিপ-ফ্লপ আছে যেমন:
- SR ফ্লিপ-ফ্লপ: সেট ও রিসেট কার্যক্রম সম্পাদন করে।
- JK ফ্লিপ-ফ্লপ: SR ফ্লিপ-ফ্লপের উন্নত সংস্করণ।
- D ফ্লিপ-ফ্লপ: একক ইনপুটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট মান ধরে রাখে।
- T ফ্লিপ-ফ্লপ: টগল ফাংশন বাস্তবায়ন করে।
২. কাউন্টার
- কাউন্টার হলো এমন এক ধরনের সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট যা ধারাবাহিকভাবে সংখ্যা গননা করে।
- এটি বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, যেমন আপ কাউন্টার, ডাউন কাউন্টার বা আপ-ডাউন কাউন্টার।
৩. শিফট রেজিস্টার
- শিফট রেজিস্টার সিকোয়েন্সিয়াল ডাটা স্টোরেজ এবং স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- এটি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন সিরিয়াল ইন-প্যারালাল আউট, প্যারালাল ইন-সিরিয়াল আউট ইত্যাদি।
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটের ব্যবহার
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়, যেমন:
- মেমরি ইউনিট: যেখানে তথ্য সংরক্ষণ করা হয়।
- প্রসেসর এবং কন্ট্রোল ইউনিট: যেখানে সিকোয়েন্সিয়াল লজিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
- কাউন্টার এবং টাইমার: সুনির্দিষ্ট সময় বা ক্রমাগত সংখ্যার গননা করতে।
- কমিউনিকেশন ডিভাইস: তথ্য পাঠানো এবং গ্রহণের প্রক্রিয়াকে সিকোয়েন্সিয়াল ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।
সারসংক্ষেপ
সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এগুলো মেমরি সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়া সম্পাদনের মাধ্যমে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইসের কার্যক্রম নিশ্চিত করে। সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিটের মাধ্যমে জটিল ডিজিটাল লজিক ডিজাইন সম্ভব হয়, যা আধুনিক কম্পিউটিং ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোকে কার্যক্ষম করে তুলেছে।
ফ্লিপ-ফ্লপ: SR, JK, D, T ফ্লিপ-ফ্লপ
ফ্লিপ-ফ্লপ (Flip-Flop) হল ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সের একটি মৌলিক মেমরি উপাদান, যা একটি বিট তথ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম। ফ্লিপ-ফ্লপ সাধারণত সিকোয়েন্সিয়াল লজিক সার্কিটে ব্যবহৃত হয় এবং ক্লক পালসের মাধ্যমে অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। এর বিভিন্ন প্রকার রয়েছে, যেমন SR, JK, D, এবং T ফ্লিপ-ফ্লপ।
১. SR ফ্লিপ-ফ্লপ (Set-Reset Flip-Flop)
SR ফ্লিপ-ফ্লপের দুটি ইনপুট থাকে: S (Set) এবং R (Reset)। এটি সাধারণত অবস্থা (স্টেট) সংরক্ষণ বা রিসেট করতে ব্যবহৃত হয়।
কাজের নিয়ম:
- S = 1, R = 0 হলে আউটপুট Q = 1 (Set অবস্থায় থাকে)।
- S = 0, R = 1 হলে আউটপুট Q = 0 (Reset অবস্থায় থাকে)।
- S = 0, R = 0 হলে আউটপুট Q পূর্ববর্তী অবস্থায় থাকে।
- S = 1, R = 1 অবৈধ অবস্থা, কারণ এতে আউটপুট নির্দিষ্ট নয়।
| S | R | Q (Next State) |
|---|---|---|
| 0 | 0 | Previous Q |
| 0 | 1 | 0 |
| 1 | 0 | 1 |
| 1 | 1 | Invalid |
২. JK ফ্লিপ-ফ্লপ
JK ফ্লিপ-ফ্লপ SR ফ্লিপ-ফ্লপের একটি উন্নত সংস্করণ যেখানে অবৈধ অবস্থার সমস্যা দূর করা হয়েছে। এর দুটি ইনপুট থাকে: J এবং K।
কাজের নিয়ম:
- J = 1, K = 0 হলে Q = 1 (Set অবস্থা)।
- J = 0, K = 1 হলে Q = 0 (Reset অবস্থা)।
- J = 0, K = 0 হলে Q পূর্ববর্তী অবস্থায় থাকে।
- J = 1, K = 1 হলে Q অবস্থাটি Toggle (পরিবর্তিত) হয়, অর্থাৎ পূর্ববর্তী Q 1 হলে 0 হয়ে যাবে এবং 0 হলে 1 হয়ে যাবে।
| J | K | Q (Next State) |
|---|---|---|
| 0 | 0 | Previous Q |
| 0 | 1 | 0 |
| 1 | 0 | 1 |
| 1 | 1 | Toggle |
৩. D ফ্লিপ-ফ্লপ (Data or Delay Flip-Flop)
D ফ্লিপ-ফ্লপে একটি ইনপুট থাকে, যা D নামে পরিচিত। এটি সাধারণত ডেটা সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ইনপুট ডেটা সরাসরি আউটপুটে চলে যায়।
কাজের নিয়ম:
- D = 1 হলে আউটপুট Q = 1 হয়।
- D = 0 হলে আউটপুট Q = 0 হয়।
- D ফ্লিপ-ফ্লপ সবসময় ইনপুটের মান আউটপুটে কপি করে, ফলে এটি অবস্থার সংরক্ষণে খুবই কার্যকরী।
| D | Q (Next State) |
|---|---|
| 0 | 0 |
| 1 | 1 |
৪. T ফ্লিপ-ফ্লপ (Toggle Flip-Flop)
T ফ্লিপ-ফ্লপের একটি ইনপুট থাকে, যা T নামে পরিচিত। এটি Toggle (পরিবর্তন) ফাংশনের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে আউটপুট প্রতি ক্লক পালসে পরিবর্তিত হয়।
কাজের নিয়ম:
- T = 0 হলে আউটপুট Q পূর্ববর্তী অবস্থায় থাকে।
- T = 1 হলে আউটপুট Q Toggle হয়।
| T | Q (Next State) |
|---|---|
| 0 | Previous Q |
| 1 | Toggle |
বিভিন্ন ফ্লিপ-ফ্লপের ব্যবহার
- SR ফ্লিপ-ফ্লপ: সাধারণ মেমরি ল্যাচ হিসেবে এবং নির্দিষ্ট অবস্থার সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।
- JK ফ্লিপ-ফ্লপ: ফ্রিকোয়েন্সি বিভাজক ও কাউন্টার ডিজাইনে ব্যবহৃত হয়।
- D ফ্লিপ-ফ্লপ: ডেটা সংরক্ষণ ও রেজিস্টার ডিজাইনে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
- T ফ্লিপ-ফ্লপ: বাইনারি কাউন্টার এবং ঘড়ি সংকেত বিভাজক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ:
ডিজিটাল ঘড়িতে সময়ের গুনতি করতে JK বা T ফ্লিপ-ফ্লপ ব্যবহার করা হয়, যা প্রতি ক্লক পালসে সময় পরিবর্তন ঘটায়।
রেজিস্টার এবং কাউন্টার
১. রেজিস্টার (Register)
রেজিস্টার হল এক ধরনের সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট যা ডেটা সংরক্ষণ এবং স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি একাধিক ফ্লিপ-ফ্লপের সমন্বয়ে গঠিত এবং একটি নির্দিষ্ট বিট সংখ্যা ধরে রাখতে সক্ষম। সাধারণত, রেজিস্টারগুলো D ফ্লিপ-ফ্লপ ব্যবহার করে তৈরি করা হয়, যা একক সময়ে একাধিক বিট সংরক্ষণ করে।
রেজিস্টারের কাজের ধরন:
- স্টোরেজ: এটি একসাথে একাধিক বিট তথ্য সংরক্ষণ করতে ব্যবহৃত হয়, যেমন ৮-বিট, ১৬-বিট, ৩২-বিট, বা ৬৪-বিট রেজিস্টার।
- শিফটিং: কিছু রেজিস্টারে শিফট অপারেশন (ডান বা বামে) করার ক্ষমতা থাকে, যা ডেটা স্থানান্তর ও প্রসেসিং সহজ করে।
- ডেটা প্রসেসিং: রেজিস্টারের মাধ্যমে ডেটা প্রসেসিং (যেমন যোগ-বিয়োগ) কার্য সম্পাদন করা যায়।
রেজিস্টারের প্রকারভেদ:
- সিম্পল রেজিস্টার: শুধুমাত্র ডেটা সংরক্ষণে ব্যবহৃত।
- শিফট রেজিস্টার: ডেটাকে ডান বা বামে শিফট করতে পারে। শিফট রেজিস্টারের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে, যেমন Serial-In Serial-Out (SISO), Serial-In Parallel-Out (SIPO), Parallel-In Serial-Out (PISO), এবং Parallel-In Parallel-Out (PIPO)।
রেজিস্টারের ব্যবহার:
- প্রসেসরের মধ্যস্থ ডেটা সংরক্ষণ: প্রায় সব ধরনের প্রসেসরে কিছু রেজিস্টার থাকে, যা বিভিন্ন ডেটা ও ইনস্ট্রাকশন সংরক্ষণ করে।
- ডেটা স্থানান্তর: বিভিন্ন ডেটা স্থানান্তরের জন্য শিফট রেজিস্টার ব্যবহার করা হয়।
- ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং (DSP): রেজিস্টার ডিজিটাল সিগন্যাল প্রসেসিং এ ব্যবহার করা হয়।
২. কাউন্টার (Counter)
কাউন্টার হল এমন একটি সিকোয়েন্সিয়াল সার্কিট যা নির্দিষ্ট ক্রমানুসারে গুনে বা সংখ্যায়ন করতে সক্ষম। এটি সাধারণত ক্লক সিগন্যাল অনুযায়ী কাজ করে এবং প্রতিটি ক্লক পালসে সংখ্যা বাড়ায় বা কমায়। বিভিন্ন প্রকারের ফ্লিপ-ফ্লপ একত্রিত করে কাউন্টার তৈরি করা হয়।
কাউন্টারের কাজের ধরন:
- উপরিমাপক (Up Counter): প্রতিটি ক্লক পালসে সংখ্যাকে এক ধাপ বাড়ায়।
- অধোগণক (Down Counter): প্রতিটি ক্লক পালসে সংখ্যাকে এক ধাপ কমায়।
- আপ-ডাউন কাউন্টার (Up-Down Counter): এটি উপরে এবং নিচে উভয় দিকেই গুনতে পারে, অর্থাৎ ক্লক পালস অনুযায়ী সংখ্যা বাড়াতে ও কমাতে পারে।
কাউন্টারের প্রকারভেদ:
- সিঙ্ক্রোনাস কাউন্টার: সমস্ত ফ্লিপ-ফ্লপ একই ক্লক পালসের সঙ্গে কাজ করে। এই কাউন্টারে কম জটিলতা ও বেশি গতি পাওয়া যায়।
- অ্যাসিঙ্ক্রোনাস কাউন্টার: প্রতিটি ফ্লিপ-ফ্লপের আউটপুট পরবর্তী ফ্লিপ-ফ্লপের ইনপুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা অপেক্ষাকৃত ধীর এবং কম সঠিক।
কাউন্টারের ব্যবহার:
- ঘড়ি ও সময় নির্ধারণে: ডিজিটাল ঘড়ি ও টাইমার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- ইভেন্ট কাউন্টিং: কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার সংখ্যা গুনতে ব্যবহৃত হয়, যেমন ডিজিটাল ক্যালকুলেটর বা মেশিনে।
- ফ্রিকোয়েন্সি বিভাজক: এটি ইনপুট ফ্রিকোয়েন্সিকে বিভাজিত করতে ব্যবহৃত হয়।
- মেমরি ঠিকানা নির্বাচন: মেমরি সিস্টেমে ডেটার ঠিকানা নির্বাচন করতে কাউন্টার ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ: ডিজিটাল ঘড়িতে সেকেন্ড, মিনিট, এবং ঘন্টা গণনার জন্য উপ-ডাউন কাউন্টার ব্যবহার করা হয়, যা ক্লক পালসের সাথে সময় বাড়ায়। অন্যদিকে, শিফট রেজিস্টার ব্যবহার করে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন করা হয়, যেখানে প্রতিটি ক্লক পালসে ডেটা বিট ডান বা বামে শিফট হয়।
Read more