অংশগ্রহণমূলক কাজ ২

নবম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৪) - বৌদ্ধধর্ম শিক্ষা - বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্ব | NCTB BOOK

তোমার ও তোমার সবচেয়ে পছন্দের ব্যক্তির গুণাবলি চিন্তা করে লিখে ফেলো এবং তোমার সহপাঠীদের সঙ্গে বিনিময় করো।

তোমার গুণাবলি

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

তোমার সবচেয়ে পছন্দের ব্যক্তির গুণাবলি

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

** এই পৃষ্ঠায় জায়গা না হলে একটি আলাদা কাগজে লিখে কাগজটি বইয়ের পৃষ্ঠার এক পাশে আঠা দিয়ে যুক্ত করতে পারি/খাতায় লিখতে পারি।

বোধিসত্ত্বের পরিচয়

'বোধি' শব্দের অর্থ পরম জ্ঞান বা সত্য। বোধ বা জ্ঞান শব্দ থেকেই বোধি শব্দের উৎপত্তি। 'বোধি' ও 'সত্ত্ব' এ দুটি শব্দের সমন্বয়ে বোধিসত্ত্বের উদ্ভব। বোধি শব্দের অর্থ জ্ঞান বা প্রজ্ঞা, আর সত্ত্ব শব্দের অর্থ হলো প্রাণী বা জীব। বোধি বা জ্ঞান সাধনে যিনি সাধক, সেই ব্যক্তি বা সত্ত্বই বোধিসত্ত্ব নামে অভিহিত। যিনি বোধি বা বুদ্ধত্ব জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে জন্মজন্মান্তরে দশ পারমীর পরিপূর্ণতা সাধন করেন, তাকে বোধিসত্ত্ব বলা হয়। রাজপুত্র সিদ্ধার্থ বুদ্ধত্ত জ্ঞান লাভ করার পূর্ব পর্যন্ত বোধিসত্ত্ব হিসেবে সমাদৃত। বোধিসত্ত্ব পারমীর মূল উদ্দেশ্য বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা। বুদ্ধত্ব জ্ঞানলাভের জন্য বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণ করতে। পারমী পূরণরত বোধিসত্ত্বকে বলা হয় বুদ্ধাঙ্গুর। বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণতা লাভ করা অত্যন্ত কঠিন। বহু জন্মজন্মান্তর পারমী তথা কুশল কর্মের ফলে জগতে বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভ করতে সমর্থ হয়। বোধিসত্ত্ব পারমীর পূর্ণতা অর্জিত হয় বুদ্ধত্ব লাভের মাধ্যমে। জ্ঞান অর্জনের প্রক্রিয়া বিবেচনায় বোধিসত্ত্ব তিন প্রকার;

যেমন- 

ক) শ্রাবক বোধিসত্ত্ব 

খ) প্রত্যেক বোধিসত্ত্ব 

গ) সম্যক বোধিসত্ত্ব

 

ক) শ্রাবক বোধিসত্ত্ব: শ্রাবক, বোধি এবং সত্ত্ব এই তিন শব্দের সমন্বয়ে শ্রাবক বোধিসত্ত্ব গঠিত। এখানে শ্রাবক অর্থ শ্রবণ, বোধি শব্দের অর্থ জ্ঞান আর সত্ত্ব শব্দের অর্থ জীব। বোধিসত্ত্ব পারমী পূরণে শ্রবণের মাধ্যমে বুদ্ধের যে শিষ্য-প্রশিষ্যগণ সাধনায় রত হয়ে জ্ঞান অর্জন করেন, তাঁদের শ্রাবক বোধিসত্ত্ব বলে। বুদ্ধের সময়ে সারিপুত্র ও মৌদ্গল্যায়ন প্রমুখ শ্রাবক বোধিসত্ত্ব হিসেবে আখ্যায়িত।

খ) প্রত্যেক বোধিসত্ত্বঃ গুরুর সান্নিধ্য ছাড়া স্বাধীনভাবে নিজস্ব প্রচেষ্টায় বুদ্ধত্ব জ্ঞান লাভের সাধনায় রত হওয়াকে প্রত্যেক বোধিসত্ত্ব বলে। প্রত্যেক বোধিসত্ত্ব প্রজ্ঞাগুণে নিজে প্রতিষ্ঠিত হলেও তাঁর গুণমহিমার প্রভাব অন্যকে প্রভাবিত করতে পারে না। বুদ্ধের সময়ে অনেক শিষ্য এই গুণমহিমায় অধিষ্ঠিত ছিলেন।

গ) সম্যক বোধিসত্ত্ব: এটি বোধিসত্ত্ব পারমী পূর্ণতার সর্বশেষ প্রক্রিয়া বিশেষ। সকলের কল্যাণে বোধিজ্ঞান লাভের সাধনায় অনুসরণকারীকে সম্যক বোধিসত্ত্ব বলে। এই সাধনায় বোধিচিত্তে জ্ঞানে পূর্ণতা অর্জন করতে পারলে সম্যক সম্বুদ্ধ হন। সম্যক সম্বুদ্ধের বৈশিষ্ট্য হলো- সবার মুক্তির মাধ্যমেই নিজের মুক্তির সাধনায় রত থেকে পারমী পূর্ণ করেন। সাধনার উৎস বিবেচনায় বোধিসত্ত্বকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

 

ক) প্রজ্ঞাধিক বোধিসত্ত্ব 

খ) শ্রদ্ধাধিক বোধিসত্ত্ব 

গ) বীর্যাধিক বোধিসত্ত্ব

ক) প্রজ্ঞাধিক বোধিসত্ত্বঃ প্রজ্ঞা সাধনার মাধ্যমে যে বোধিসত্ত্ব পারমী পূরণের লক্ষ্য অর্জন করেন, তাঁকেই প্রজ্ঞাধিক বোধিসত্ত্ব বলে। প্রজ্ঞা পারমী অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের চিত্তকে পূর্ণতা সাধন করাই এ বোধিসত্ত্বের মূল লক্ষ্য। এই বোধিসত্ত্বগণ সব দিক থেকে প্রজ্ঞা সাধনায় নিজের চিত্তকে নিয়ন্ত্রণ করে অভীষ্ট লক্ষ্যে অগ্রসর হন। তাই এরূপ বোধিসত্ত্বকে প্রজ্ঞা পারমী বোধিসত্ত্ব নামে আখ্যায়িত করা হয়।

খ) শ্রদ্ধাধিক বোধিসত্ত্ব: যে বোধিসত্ত্ব পারমী পূরণে শ্রদ্ধাকে প্রধানভাবে অবলম্বন করেন তাঁকেই শ্রদ্ধাধিক বোধিসত্ত্ব বলে। শ্রদ্ধাধিক বোধিসত্ত্বগণ সবসময় নিজের ব্রত সাধনায় নিবেদিত থাকেন। তাঁরা একবার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলে সে আদর্শ থেকে সহজে লক্ষ্যচ্যুত হন না। সকল পারমী পুরণে শ্রদ্ধার সঙ্গে নিজেকে অটল রাখেন।

গ) বীর্যাধিক বোধিসত্ত্ব: বীর্যাধিক বোধিসত্ত্ব পারমী একটি কঠিন ব্রত সাধনা। বীর্যাধিক বোধিসত্ত্ব পারমী পূরণে কর্মপ্রচেষ্টাকে প্রথমেই স্থান দেন বলে তাঁকেই বীর্যাধিক বোধিসত্ত্ব বলে। এ সাধনায় রত বোধিসত্ত্বগণকে সব সময় সাধনায় অটল থাকতে হয়। তাঁরা বীর্য পারমী অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের চিত্তকে অভীষ্ট লক্ষ্যে চালিত করেন।

Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion