অর্থের সময়মূল্য

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং - | NCTB BOOK

অর্থায়নের বেশির ভাগ সিদ্ধান্তের মূলে অর্থের সময়মূল্যের ধারণাটি জড়িত। এখনকার ১০০ টাকা আর ১০ বছর পরের ১০০ টাকা সমান মূল্য বহন করে না। অর্থের সময়মূল্যের এই ধারণা আমাদের দৈনন্দিন অর্থায়নেও প্রয়োজন। গ্রামীণ মহাজন থেকে যদি অর্থ ঋণ নেয়া হয়, তখন সে কী হারে সুদ হিসাব করে, এটা জানা থাকলে আমরা অন্যান্য উৎসের সাথে তুলনা করে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য উৎস বের করে অর্থায়ন করতে পারব। ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে আমাদের ভবিষ্যতে যে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়, তা কীভাবে নির্ধারণ করা হয় এই সংক্রান্ত অংক আমরা এই অধ্যায়ে শিখব। এই অধ্যায়ের অংক করতে আমাদের প্রত্যেকের সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর লাগবে।


এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা -

  • অর্থের সময় মূল্যের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব ।
  • অর্থের বর্তমান মূল্য ও ভবিষ্যৎ মূল্যের মধ্যে সম্পর্ক নির্ণয় করতে পারব।
  • প্রকৃত সুদের হার নির্ণয় করার পদ্ধতির অনুশীলন
  • করতে পারব। ঋণের কিস্তি নির্ণয় করার পদ্ধতি বিশ্লেষণ করতে পারব।
  • সঞ্চয় স্কিমের ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ণয় করতে পারব
Content updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Natural Annually Rate
Normal Annual Rate
Nominal Annual Rate
Nominal Annually Rate

অর্থের সময়মূল্যের ধারণা

ফিন্যান্সের দৃষ্টিতে সময়ের সাথে সাথে অর্থের মূল্য পরিবর্তিত হয় অর্থাৎ এখনকার ১০০ টাকা আর পাঁচ বছর পরের ১০০ টাকা সমান মূল্য বহন করে না, এখনকার ১০০ টাকা অধিকতর মূল্যবান। এটাই অর্থের সময়মূল্য ধারণা। অর্থের সময়মূল্যের মূল কারণ সুদের হার। মনে কর, তুমি তোমার বন্ধুর কাছে ১০০ টাকা পাও, এমতাবস্থায় সে বলল ১০০ টাকা এখন না পরিশোধ করে ১ বছর পর পরিশোধ করবে। অর্থের সময়মূল্য বলে যে এখনকার ১০০ টাকা আর এক বছর পরের ১০০ টাকা সমান মূল্য বহন করে না। ধরা যাক, সুদের হার শতকরা ১০ ভাগ অর্থাৎ তুমি যদি সোনালী ব্যাংকে এখন ১০০ টাকা জমা রাখ, তবে আগামী বছর ব্যাংক তোমাকে ১১০ টাকা দেবে। সুতরাং এখনকার ১০০ টাকা এবং আগামী বছরের ১১০ টাকা অর্থের সময়মূল্য অনুযায়ী সমান মূল্য বহন করে । 

অর্থের সময়মূল্যের গুরুত্ব

ব্যবসায়ের প্রতিটি সিদ্ধান্তের সাথেই অর্থের আন্তঃপ্রবাহ ও বহিঃপ্রবাহ জড়িত থাকে। সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য এই আন্তঃপ্রবাহ ও বহিঃপ্রবাহের মেয়াদভিত্তিক বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। ফলে অর্থের সময়মূল্যের গুরুত্ব বিবেচনায় বলা যায়-

ক) সুযোগ ব্যয় : কোনো একটি প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগ করলে অন্য কোনো প্রকল্পে অর্থ বিনিয়োগের সুযোগকে ত্যাগ করতে হয়। যাকে অর্থায়নে বিনিয়োগের সুযোগ ব্যয় বলা হয়। সুতরাং অর্থের সময়মূল্যের সূত্র প্রয়োগের মাধ্যমে এই সুযোগ ব্যয়ের পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়। উদাহরণস্বরূপ: তোমার এলাকায় জমির মূল্য ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়। পক্ষান্তরে সোনালী ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে সুদের হার ধরা যাক শতকরা ৮ ভাগ। জমি কিনলে সোনালী ব্যাংকে টাকা রাখা যাবে না, তাই জমি ক্রয়ের সুযোগ ব্যয় এ ক্ষেত্রে ৮%। এ ক্ষেত্রে আমরা এই অধ্যায়ের সূত্র নং ১ ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারি যে জমি কেনা উচিত, নাকি সোনালী ব্যাংকে টাকা রাখা উচিত। এ ব্যাপারে একটি সহজ এবং মোটামুটি সঠিক পদ্ধতি রুল ৭২' নামে পরিচিত। টাকা দ্বিগুণ হলে ৭২-কে মেয়াদ দিয়ে ভাগ করলে সুদের হার পাওয়া যায়, আবার ৭২-কে সুদের হার দিয়ে ভাগ করলে মেয়াদ পাওয়া যায়। জমির মূল্য যেহেতু ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়। সুতরাং সুদের হার (৭২/১০) বা ৭.২% সুতরাং জমি ক্রয় না করে সোনালী ব্যাংকে টাকা রাখা যুক্তিসংগত।

খ) প্রকল্প মূল্যায়ন : দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প মূল্যায়নে প্রকল্পের বর্তমান ব্যয়ের সাথে ভবিষ্যৎ আয়ের মধ্যে তুলনা করতে হয়। এই অধ্যায়ে আমরা জেনেছি, টাকার বর্তমান মূল্য ও ভবিষ্যৎ মূল্য সমান নয়। সুতরাং ভবিষ্যৎ সম্ভাব্য আয়কে বর্তমান মূল্যে না এনে আমরা দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প মূল্যায়ন সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। পরবর্তী অধ্যায়ে ক্যাপিটাল বাজেটিং করার সময় আমরা এই ধারণার প্রয়োগ দেখব।

গ) ঋণগ্রহণ সিদ্ধান্ত : ব্যাংক বা যেকোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণের আগে কিস্তি পরিশোধের ক্ষমতা বিবেচনা করতে হয়। ঋণ পরিশোধের বিভিন্ন মেয়াদের ভিত্তিতে কিস্তির পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়। যেমন: ৫ বছর মেয়াদি অথবা ৮ বছর মেয়াদি ঋণের কিস্তি বিভিন্ন হবে, আবার এই বিভিন্ন মেয়াদি হতে পারে যেমন: বার্ষিক, মাসিক ইত্যাদি। সে ক্ষেত্রেও কিস্তির পরিমাণ বিভিন্ন হবে। অর্থের সময়মূল্য নির্ণয় করে আমরা বিভিন্ন পরিমাণ ঋণের বিভিন্ন মেয়াদি কিস্তি বের করতে পারি এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে কী ধরনের মেয়াদে কীভাবে পরিশোধ্য কিস্তিতে কত টাকা ঋণ নেয়া কারবারটির জন্য উপযুক্ত হবে। এ ধরনের পরিকল্পনার অভাবে অনেক কারবার দেউলিয়া হয়ে যায়, কারণ ঋণ গ্রহণের আগে পরিশোধ ক্ষমতা যাচাই করে তবে ঋণ নিতে হয়। মনে রাখতে হবে ঋণের টাকা পরিশোধ করা বাধ্যতামূলক, পরিশোধে ব্যর্থ হলে কারবারটি দেউলিয়া হয়ে যায়।

Content updated By

অর্থের সময়মূল্যের সূত্র

উপরের উদাহরণে আমরা জেনেছি যে সুদের হার শতকরা ১০ ভাগ হলে এখনকার ১০০ টাকা, আগামী বছরের ১১০ টাকা এবং ২ বছর পরের ১২১ টাকার সমান মূল্য বহন করে। এই ১০০ টাকাকে বলা হয় বর্তমান মূল্য এবং ১১০ ও ১২১ টাকাকে বলা হয় ভবিষ্যৎ মূল্য।

ভবিষ্যৎ মূল্য ও বার্ষিক চক্রবৃদ্ধি

বর্তমান মূল্য জানা থাকলে ১নং সূত্র ব্যবহার করে ভবিষ্যটাৎ মূল্য বের করা যায়।

সূত্র -১: ভবিষ্যৎ মূল্য (FV) = বর্তমান মূল্য (১+ সুদের হার) বাৎসরিক মেয়াদ

এখানে FV হচ্ছে Future Value

বর্তমানের ১০০ টাকার ১ বছর পরের ভবিষ্যৎ মূল্য = ১০০(+.১০)

                                                                           = ১০০×.১০

                                                                           = ১১০ টাকা

বর্তমানের ১০০ টাকার ২ বছর পরের ভবিষ্যৎ মূল্য = ১০০(+.১০)

                                                                           = ১০০×.২১

                                                                           = ১২১ টাকা

ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণের জন্য উপরিউক্ত উদাহরণে যে প্রক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয়েছে, তাকে বলা হয়। চক্রবৃদ্ধিকরণ পদ্ধতি। এখানে লক্ষণীয় যে এক বছর পরে ১১০ টাকা ভবিষ্যৎ মূল্যের মধ্যে আসল ১০০ টাকা ও সুদ ১০% হারে ১০ টাকা। একই ভাবে দ্বিতীয় বছর আরও ১০ টাকা সুদ হলে দ্বিতীয় বছরে ভবিষ্যৎ মূল্য হওয়া উচিত ১২০ টাকা কিন্তু দ্বিতীয় বছরের ভবিষ্যৎ মূল্য হয়েছে ১২১ টাকা। এর কারণ দ্বিতীয় বছরের শুরুতে আসল ধরা হয় ১১০ টাকা এবং তাতে করে দ্বিতীয় বছরে ১০% হারে সুদ হয় ১১ টাকা। এভাবে প্রথম বছরের সুদাসলকে দ্বিতীয় বছরের আসল ধরে তার উপর দ্বিতীয় বছরের সুদ ধার্য করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় চক্রবৃদ্ধিকরণ পদ্ধতি। চক্রবৃদ্ধিকরণ পদ্ধতিতে প্রতিবছর সুদাসলের উপর সুদ ধার্য করে ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ করা হয়। অর্থাৎ সুদ আসলের উপর যে সুদ প্রদান করা হয় তাকে চক্রবৃদ্ধি সুদ বলা হয়। কিন্তু সরল সুদের ক্ষেত্রে কেবল আসলের উপর সুদ গণনা করা হয়।

Content updated By

বর্তমান মূল্য ও বার্ষিক বাট্টাকরণ

ভবিষ্যৎ মূল্য জানা থাকলে ২নং সূত্র অনুযায়ী বর্তমান মূল্য নির্ণয় করা যায়। ১নং সূত্রে যে উপাদানটি দিয়ে গুণ করা হয়েছিল, এখানে তা দিয়ে ভাগ করা হবে। এটাকে বলা হয় বাট্টাকরণ প্রক্রিয়া।

সূত্র নং ২ : ভবিষ্যৎ মূল্য/(বর্তমান মূল্য (১ + সুদের হার)^মেয়াদ)

যেমন : ১ বছর পরের ১০০ টাকার বর্তমান মূল্য (PV) = ১০০(+১০)

                                                                               = ১০০(+.১০)

                                                                                  =৯০.৯১টাকা

বর্তমান মূল্য নির্ধারণের জন্য উপরোক্ত উদাহরণটিতে বাট্টাকরণ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছে। বাট্টাকরণ পদ্ধতিতেও ঠিক বিপরীতভাবে প্রতিবছর ভবিষ্যৎ সুদাসলকে সুদের হার দিয়ে ভাগ করে বর্তমান মূল্য নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সুতরাং, তোমার বন্ধু যদি ১ বছর পর ১০০ টাকা দেয়, তবে তার ঐ টাকার বর্তমান মূল্য হলো ৯০.৯১ টাকা। সাধারণত সুদের হারের কারণে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সময়ের মধ্যে অর্থের মূল্যের ঘটে ।

কয়েকটি উদাহরণের মাধ্যমে চক্রবৃদ্ধি ও বাট্টাকরণ পদ্ধতির ব্যবহার করে এককালীন অর্থপ্রবাহের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ণয় করা হলো:

উদাহরণ-১: শতকরা ১০% হারে বর্তমান ১০০ টাকার ৫ বছর পরের ভবিষ্যৎ মূল্য কত হবে?

সূত্র : ১ অনুযায়ী:

এখানে, বর্তমান মূল্য (PV) =১০০টাকা  (PV= Present Value )

সুদের হার (i) =১০%

মেয়াদকাল (n)= ৫ বছর

ভবিষ্যৎ মূল্য (FV)=কত?

FV= PV (+i)n

সূত্রে মান বসিয়ে,

FV =১০০(+.১০)

      =১০০×(.১০)

        = ১০০×.৬১০

        =১৬১ টাকা

 

ধারণা : বর্তমানে ১০০ টাকার যে মূল্য, সুদের হার ১০% হলে ৫ বছর পরের ১৬১ টাকার সমান মূল্য বহন করে।

উদাহরণ-২ : সুদের হার ১০% হলে ৫ বছর পরের ১০০ টাকার বর্তমান মূল্য কত? সূত্র নং ২ ব্যবহার করে আমরা বর্তমান মূল্য বের করব।

এখানে, ভবিষ্যৎ মূল্য (FV) = ১০০ টাকা

সুদের হার (i)= ১০%

মেয়াদ ( n)= ৫ বছর

অতএব, বর্তমান মূল্য (PV)= FV(+i)n

সূত্রে মান বসিয়ে, PV= ১০০(.১০) = ৬২.০৯ টাকা।

ধারণা : ৫ বছর পরের ১০০ টাকার বর্তমান মূল্য প্রায় ৬২ টাকা। সুতরাং তোমার বন্ধু যদি ১০০ টাকা এখন পরিশোধ না করে ৫ বছর পরে পরিশোধ করে, তাহলে বর্তমান মূল্য অনুযায়ী তোমার ক্ষতি হয় (১০০-৬২) = ৩৮ টাকা।

সুদের হার ২০% হলে ৫ বছর পরের ১০০ টাকার বর্তমান মূল্য (PV)= ১০০(.২০)

                                                                                                   = ৪০.১৮৭ টাকা।

এখানে লক্ষণীয় সুদের হার ১০% হতে ২০% দ্বিগুণ হলেও ৫ বছর পরের ১০০ টাকার বর্তমান মূল্য ৬২ টাকা হতে কমে অর্ধেক হবে না। অর্থাৎ সুদের হারের সাথে অর্থের সময় মূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধির সম্পর্কটি সমানুপাতিক নয়।

Content updated By

বছরে একাধিকবার চক্রবৃদ্ধিকরণের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ মূল্য নির্ধারণ

উপরের উদাহরণে ধরে নেয়া হয়েছে যে বছরে একবার চক্রবৃদ্ধি হবে কিন্তু কখনো কখনো বছরে একধিকবার চক্রবৃদ্ধি হতে পারে। যেমন : ব্যাংকে টাকা রাখলে মাসিক ভিত্তিতে চক্রবৃদ্ধি হয়। অর্থাৎ বছরে ১২ বার চক্রবৃদ্ধি হয়। সেক্ষেত্রে সূত্রটিতে দুটি পরিবর্তন করতে হবে। বছরে যদি বারবার চক্রবৃদ্ধি হয়, তাহলে প্রথমত সুদের হারকে ১২ দিয়ে ভাগ করতে হবে এবং দ্বিতীয়ত মেয়াদকেও ১২ দিয়ে গুণ করতে হবে। একটি উদাহরণের মাধ্যমে সূত্রটির প্রয়োগ দেখানো হলো।

উদাহরণ-৩: যদি তুমি ১০% চক্রবৃদ্ধি সুদে ১০০ টাকা ব্যাংকে জমা রাখ এবং তুমি জানো বছরে ১২ বার চক্রবৃদ্ধি হবে, তবে ১ বছর পর তুমি কত টাকা পাবে? এর সমাধানের জন্য তোমাকে নিচের সূত্রটি ব্যবহার করতে হবে।

সূত্র ৩ : FV=PV(+im)(m×n)

এখানে, বর্তমান মূল্য (PV)= ১০০টাকা

সুদের হার (i)= ১০%

বছরে চক্রবৃদ্ধির সংখ্যা (m)= ১২

বছরের সংখ্যা (n) = ১ বছর

ভবিষ্যৎ মূল্য (FV)= কত ?

সূত্রে মান বসিয়ে, FV = ১০০(+.১০১২)×১২

                                 = ১১০.৪৬ টাকা।

ধারণা : শতকরা ১৩.৫% হারে মাসিক চক্রবৃদ্ধিতে ৫০,০০০ টাকা ব্যাংকে এখন জমা রাখলে ১০ বছর পরে কত টাকা পাওয়া যাবে?

 FV = PV(১+im)(n×m)

এখানে, বর্তমান মূল্য (PV)= ৫০,০০০ টাকা

সুদের হার (i)= ১৩.৫%

বছরে চক্রবৃদ্ধির সংখ্যা (m)= ১২

বছরের সংখ্যা (n)= ১০ বছর

ভবিষ্যৎ মূল্য (FV)= কত?

সত্রে মান বসিয়ে, FV=৫০০০০(+.১৩৫১২)১০×১২ 

৫০০০০×(.০১১)১২০

= ৫০০০০x৩.৮২৮

= ১,৯১,৪২৩.০২ টাকা ।

ধারণা : সুতরাং এখনকার ৫০,০০০ টাকা এবং উক্ত পলিসির ১০ বছর পরের ১,৯১,৪২৩.০২ টাকা সমানমূল্য বহন করে।

Content updated By

বছরে একাধিকবার বাট্টাকরণের মাধ্যমে বর্তমান মূল্য নির্ধারণ

উপরের উদাহরণ ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আমরা বর্তমান মূল্য সম্পর্কে এই ধারণা লাভ করতে পারি যে ১০ বছর পরের ১৯১,৪২৩ টাকার বর্তমান মূল্য হলো ৫০,০০০ টাকা। সুতরাং ভবিষ্যৎ মূল্য জানা থাকলে আমরা বর্তমান মূল্য বের করতে পারি। একে বলে বাট্টাকরণ প্রক্রিয়া। একাধিকবার চক্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ মূল্য থেকে আমরা বাট্টাকরণের মাধ্যমে বর্তমান মূল্য নির্ণয় করবো। একটি উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটি তুলে ধরা হলো:

উদাহরণ-৫: ৫ বছর পর ৫০,০০০ টাকা পাওয়ার আশায় তুমি বর্তমানে কিছু টাকা জমিয়ে ব্যাংকে রাখতে চাও। একটি ব্যাংক তোমাকে বার্ষিক ১০% হারে সুদ প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে এবং আর একটি ব্যাংক তোমাকে ৯.৫% হারে মাসিক চক্রবৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে। এমতাবস্থায় তুমি কোন্ ব্যাংকে টাকা জমা রাখবে? এ সিদ্ধান্তটির জন্য আমরা দুটি প্রস্তাবেরই বর্তমান মূল্য নির্ধারণ করব।

ব্যাংক-'ক' (বার্ষিক ১০% বাট্টাকরণ হারে)

সূত্র : PV = FV(+i)n

এখানে ভবিষ্যৎ মূল্য (FV)= ৫০,০০০ টাকা 

সুদের হার (i)= ১০%

বছরের সংখ্যা (n)= ৫ বছর

বর্তমান মূল্য (PV)= কত?

সূত্রে মান বসিয়ে, PV= ৫০,০০০(.)= ৩১,০৪৬.০৭ টাকা।

ব্যাংক-'খ' (মাসিক ৯.৫% হারে চক্রবৃদ্ধি সুদে)

PV= FV(+im)m×n

এখানে ভবিষ্যৎ মূল্য (FV)= ৫০,০০০টাকা

সুদের হার (i)= ৯.৫%

বছরে চক্রবৃদ্ধির সংখ্যা (m) =১২

বছরের সংখ্যা (n)= ৫ বছর

বর্তমান মূল্য (PV)= কত?

সূত্রে মান বসিয়ে, PV=৫০,০০০(+.০৯৫১২)×১২

=৫০,০০০(.০০৭)৬০

=৫০,০০০.৬০৫০

=৩১,১৫২.৬৪ টাকা।

ধারণা : অর্থাৎ ৫ বছর পর ৫০০০০ টাকা পাওয়ার জন্য ব্যাংক-'ক'-এ বর্তমানে ৩১,০৪৬.০৭ টাকা জমা দিতে হবে আর ব্যাংক- 'খ'-এ ৩১,১৫২.৪০ টাকা জমা দিতে হবে। ফলে ব্যাংক-'ক' লাভজনক প্রস্তাব।

Content updated By

প্রকৃত সুদের হার

গ্রামীণ মহাজন থেকে সাপ্তাহিক ১% হারে চক্রবৃদ্ধি সুদে ঋণ গ্রহণ করলে বার্ষিক বা নামিক সুদের হার হয় ৫২ অর্থাৎ বছরে ৫২% কিন্তু ৫২ বার চক্রবৃদ্ধি হলে প্রকৃত সুদের হার ভিন্ন হয়। নিম্নলিখিত সূত্রটির মাধ্যমেঃ

সাপ্তাহিক ১% হারে চক্রবৃদ্ধির প্রকৃত সুদের হার নির্ণয় করা হলো :

সূত্র-৫ : EAR = (+im)m-                         (EAR=Effective Annual Rate)

 

এখানে, সাপ্তাহিক সুদের হার (r)= ১%

বার্ষিক সুদের হার (i)= ৫২%

বছরে চক্রবৃদ্ধির সংখ্যা(m)= ৫২

বছরের সংখ্যা (n)= ১

প্রকৃত সুদের হার (EAR)= কত?

সূত্রে মান বসিয়ে, EAR= (+.৫২৫২)৫২-

=(.০১)৫২-

= ১.৬৭৭৬৮ -১

= ৬৭.৭৬৮%

ধারণা: অর্থাৎ বার্ষিক ৬৭.৬১% সুদের হার এবং সাপ্তাহিক ১% সুদের হার একই কথা।

Content updated By

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

Please, contribute by adding content to বহুনির্বাচনি প্রশ্ন.
Content

সৃজনশীল প্রশ্ন

Please, contribute by adding content to সৃজনশীল প্রশ্ন.
Content
Promotion