কার্বোহাইড্রেট (পাঠ ২)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্যবিজ্ঞান খাদ্য, পুষ্টি ও স্বাস্থ্য | - | NCTB BOOK
133
133

আমরা দৈনিক যে খাদ্য গ্রহণ করি তার বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের মধ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। শরীরে তাপ ও শক্তি সরবরাহের জন্য এদের গুরুত্ব বেশি। সকল কার্বোহাইড্রেটই কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন- এই তিনটি মৌলিক পদার্থের সমন্বয়ে গঠিত।

কার্বোহাইড্রেটের শ্রেণিবিভাগ- কার্বোহাইড্রেটকে ভাঙলে সরল চিনি অণু পাওয়া যায়। সরল চিনি অণুর উপর ভিত্তি করে কার্বোহাইড্রেটকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

১। মনোস্যাকারাইড- যেসব কার্বোহাইড্রেট একটিমাত্র সরল চিনির অণু দিয়ে গঠিত তাকে মনোস্যাকারাইড বলে। যেমন- গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, গ্যালাকটোজ।
২। ডাইস্যাকারাইড- যেসব কার্বোহাইড্রেটকে ভাঙলে ২টি মনোস্যাকারাইড বা সরল চিনি পাওয়া যায় তাকে ডাইস্যাকারাইড বলে। যেমন- সুক্রোজ, ল্যাকটোজ ও মলটোজ।
৩। পলিস্যাকারাইড- যেসব কার্বোহাইড্রেটকে ভাঙলে ২-এর অধিক একক মনোস্যাকারাইড পাওয়া যায়, তাকে পলিস্যাকারাইড বলে। যেমন- স্টার্চ, গ্লাইকোজেন ও সেলুলোজ।

কার্বোহাইড্রেটের খাদ্য উৎস

নিচে খাদ্যগুলোকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থেকে কম অনুযায়ী সাজানো হলো-'

১। চিনি, গুড়, মিছরি, ক্যান্ডি, চকলেট, মিষ্টি
২। সাগু, এরারুট
৩। চাল, ভুট্টা, যব, গম
৪। আলু
৫। বিভিন্ন ধরনের শুকনা ফল যেমন- খেজুর, কিশমিশ ইত্যাদি
৬। বিভিন্ন ধরনের ডাল, সয়াবিন, বাদাম
৭। টাটকা ফল, আঙুর, কলা, আপেল, আম, কাঁঠাল, আনারস ইত্যাদি

দৈনিক প্রয়োজনীয় ক্যালরির ৫০ থেকে ৬০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য থেকে গ্রহণ করা উচিত।

বিভিন্ন প্রকার কার্বোহাইড্রেটজাতীয় খাদ্য

কার্বোহাইড্রেটের কাজ
(১) দেহে তাপ বা শক্তি সরবরাহ করাই কার্বোহাইড্রেটের প্রধান কাজ। এজন্য একে জ্বালানি খাদ্য বলে। ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থেকে ৪ কিলো ক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়।
(২) সেলুলোজ জাতীয় কার্বোহাইড্রেট কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
(৩) মস্তিষ্কের কাজ সচল রাখার জন্য একমাত্র জ্বালানি হিসাবে গ্লুকোজ জাতীয় কার্বোহাইড্রেটের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

দেহে কার্বোহাইড্রেটের অভাব হলে
দেহের জন্য প্রয়োজনীয় তাপশক্তির ঘাটতি হয়। ফলে শরীর দুর্বল হয় ও স্বাভাবিক কাজ করার শক্তি কমে যায়।

কাজ ১- তুমি কেন কার্বোহাইড্রেটজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করবে, ব্যাখ্যা করো।
Content added By
Promotion