খণ্ডবাক্য: স্বাধীন খণ্ডবাক্য ও অধীন খণ্ডবাক্য (৬.২)

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - বাংলা ব্যকরণ ও নির্মিতি - বাক্য | NCTB BOOK
4.6k
Summary

খণ্ডবাক্য হলো বাক্যের একটি অংশ, যা সাধারণত দুটি অংশে বিভক্ত: উদ্দেশ্যবিধেয়

  • উদ্দেশ্য: বাক্যে যার সম্পর্কে বলা হয়। উদাহরণ: শিমুল মাঠে খেলতে গেল।
  • বিধেয়: উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয়। উদাহরণ: শিমুল মাঠে খেলতে গেল।

যদি উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের ক্রিয়ার সমষ্টি একটি স্বাধীন বাক্য না হয়ে অন্য কোনো বৃহত্তর বাক্যের অংশ হয়, সেটাকে খণ্ডবাক্য বলা হয়। উদাহরণ: যারা ভালো ছেলে, তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে। এখানে দুইটি খণ্ডবাক্য আছে:

  1. যারা ভালো ছেলে
  2. তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে

খণ্ডবাক্য দুটি ধরনের:

  • স্বাধীন খণ্ডবাক্য: অন্য খণ্ডবাক্যের ওপর নির্ভর না করে নিজের অর্থ প্রকাশ করে। উদাহরণ: 'তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে' আলাদাভাবে লেখা যেতে পারে।
  • অধীন খণ্ডবাক্য: যে খণ্ডবাক্যটির অর্থ পূর্ণরূপে প্রকাশের জন্য স্বাধীন খণ্ডবাক্যের ওপর নির্ভর করা প্রয়োজন। উদাহরণ: 'যারা ভালো ছেলে' আলাদাভাবে লিখলে সম্পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় না।

অধীন খণ্ডবাক্য তিন প্রকার:

  • বিশেষ্যস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য: স্বাধীন খণ্ডবাক্যের যেকোনো পদের অধীন থেকে বিশেষ্যের কাজ করে। উদাহরণ: আমি বাড়ি গিয়ে দেখলাম, সবার খাওয়া হয়ে গেছে।
  • বিশেষণস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য: স্বাধীন খণ্ডবাক্যের অন্তর্গত বিশেষ্য বা সর্বনামের দোষ, গুণ প্রকাশ করে। উদাহরণ: যে পরিশ্রম করে, সে-ই সুখ লাভ করে।
  • ক্রিয়া-বিশেষণস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য: ক্রিয়াপদের স্থান, কাল ও কারণ নির্দেশ করে। উদাহরণ: যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে।

খণ্ডবাক্য

প্রতিটি বাক্যের দুটি অংশ থাকে :

১. উদ্দেশ্য : বাক্যে যার সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য বলে। যেমন :

            শিমুল মাঠে খেলতে গেল৷

২. বিধেয় : বাক্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা বলা হয়, তাকে বিধেয় বলে। যেমন :

            শিমুল মাঠে খেলতে গেল।

একটি উদ্দেশ্য ও একটি বিধেয় ক্রিয়ার (সমাপিকা) সমষ্টি যদি নিজে একটি স্বাধীন বাক্য হিসেবে ব্যবহৃত না হয়ে অন্য কোনো বৃহত্তর বাক্যের অংশরূপে ব্যবহৃত হয়, তাকে খণ্ডবাক্য বলে। যেমন :

            যারা ভালো ছেলে, তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।

–এ বাক্যে দুটি খণ্ডবাক্য আছে :

     ১. যারা ভালো ছেলে 

     ২. তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।

দুটি বাক্যই যেহেতু একটি বড় বাক্যের অংশ, সেহেতু বাক্যাংশ দুটি বড় বাক্যের খণ্ডবাক্য। খণ্ডবাক্যে একটিমাত্র সমাপিকা ক্রিয়া থাকে এবং তা অন্য একটি বাক্যের অংশরূপে ব্যবহৃত হয়।

খণ্ডবাক্য দু রকমের হয়। যথা : ১. স্বাধীন খণ্ডবাক্য ২. অধীন খণ্ডবাক্য

 

১. স্বাধীন খণ্ডবাক্য : একটি বড় বাক্যের অন্তর্গত যে খণ্ডবাক্য তার নিজের অর্থ প্রকাশের জন্য অন্য কোনো খণ্ডবাক্যের ওপর নির্ভরশীল নয়, তাকে স্বাধীন বা প্রধান খণ্ডবাক্য বলে। যেমন :

           যারা ভালো ছেলে, তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।

এ বাক্যের ‘তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে'— এ খণ্ডবাক্যটিকে আলাদা বাক্য হিসেবেও লেখা যেতে পারে । স্বাধীন খণ্ডবাক্যকে সম্পূর্ণ বাক্য থেকে তুলে নিয়ে আলাদাভাবে লিখলেও তার পূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায়।

 

২. অধীন খণ্ডবাক্য : একটি বড় বাক্যের অন্তর্গত যে খণ্ডবাক্যটি তার অর্থ সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ করার জন্য স্বাধীন খণ্ডবাক্যের ওপর নির্ভরশীল, তাকে অধীন খণ্ডবাক্য বা আশ্রিত বা অপ্রধান খণ্ডবাক্য বলে। অধীন খণ্ডবাক্যকে সম্পূর্ণ বাক্য থেকে তুলে নিয়ে আলাদাভাবে লিখলে তার পরিপূর্ণ অর্থ প্রকাশ পায় না, আকাঙ্ক্ষা থেকে যায়। যেমন :

           যারা ভালো ছেলে, তারা শিক্ষকের আদেশ পালন করে।

এ বাক্যের ‘যারা ভালো ছেলে' খণ্ডবাক্যকে আলাদা করে লিখলে ‘আকাঙ্ক্ষা' গুণের বিঘ্ন ঘটে।

 

অধীন খণ্ডবাক্য তিন রকমের :

ক. বিশেষ্যস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য : যে অধীন খণ্ডবাক্য স্বাধীন খণ্ডবাক্যের যেকোনো পদের অধীন থেকে বিশেষ্যের কাজ করে, তাকে বিশেষ্যস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য বলে। যেমন :

         আমি বাড়ি গিয়ে দেখলাম, সবার খাওয়া হয়ে গেছে।

খ. বিশেষণস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য : যে অধীন খণ্ডবাক্য স্বাধীন খণ্ডবাক্যের অন্তর্গত কোনো বিশেষ্য বা সর্বনামের দোষ, গুণ, অবস্থা প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য বলে। যেমন :

         যে পরিশ্রম করে, সে-ই সুখ লাভ করে। (অধীন খণ্ডবাক্যটি ‘সে-ই' সর্বনামের অবস্থা প্রকাশ করছে)

গ. ক্রিয়া-বিশেষণস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য : যে অধীন খণ্ডবাক্য ক্রিয়াপদের স্থান, কাল ও কারণ নির্দেশক অর্থে ব্যবহৃত হয়, তাকে ক্রিয়া-বিশেষণস্থানীয় অধীন খণ্ডবাক্য বলে। যেমন :

        ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে। ’

Content added || updated By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...