Summary
একটি আদর্শ বা সার্থক বাক্য গঠনের জন্য তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য অপরিহার্য:
- আকাঙ্ক্ষা: বাক্যের অর্থ বুঝতে আগ্রহ থাকা। উদাহরণ: "পলাশ মন দিয়ে লেখাপড়া" বললে অজানা থাকে, কিন্তু "পলাশ মন দিয়ে লেখাপড়া করে" বললে পূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।
- আসত্তি: পদগুলোর যথাযথ সাজানো। যেমন: "বাবা বাজার থেকে ইলিশ এনেছেন" বললে অর্থ পরিষ্কার হয়, কিন্তু "বাবা বাজার ইলিশ থেকে এনেছেন" বললে অর্থ অস্পষ্ট হয়।
- যোগ্যতা: পদগুলোর মধ্যে অর্থের সংগতি ও ভাবের মিল। যেমন: "আমরা বড়শি দিয়ে মাছ ধরি" সার্থক, কিন্তু "আমরা বড়শি দিয়ে নারকেল পাড়ি" অসার।
সুতরাং, একটি সার্থক বাক্যের জন্য আকাঙ্ক্ষা, আসত্তি এবং যোগ্যতা অপরিহার্য।
একটি আদর্শ বা সার্থক বাক্য তখনই গঠিত হবে যখন বাক্যটির তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকবে। এ গুণগুলো হচ্ছে:
১. আকাঙ্ক্ষা ২. আসত্তি ৩. যোগ্যতা
১. আকাঙ্ক্ষা : বাক্যের অর্থ পুরোপুরি বোঝার জন্য এক পদ শোনার পর অন্য পদ শোনার ইচ্ছা বা আগ্রহকে আকাঙ্ক্ষা বলে। যেমন :
পলাশ মন দিয়ে লেখাপড়া ...
বললে বক্তার মনের ভাব সম্পূর্ণ বোঝা যায় না। আরও কিছু বলার বাকি থাকে। আরো কিছু শোনার ইচ্ছা জাগে।
যদি বলা হয়—
পলাশ মন দিয়ে লেখাপড়া করে। অথবা
পলাশ মন দিয়ে লেখাপড়া করতো। অথবা
পলাশ মন দিয়ে লেখাপড়া করবে।
তবে শোনার ইচ্ছাটি পূর্ণ হয়। আর এভাবে বাক্যও সম্পূর্ণ হয়।
২. আসত্তি : বাক্যের অর্থসংগতি রক্ষা করে পদগুলোকে যথাযথভাবে সাজিয়ে রাখার নাম আসত্তি। যেমন :
বাবা বাজার ইলিশ থেকে এনেছেন।
—এখানে বক্তা যা বলতে চেয়েছেন তার সব উপকরণ আছে। কিন্তু পদগুলো যথাযথভাবে সাজানো হয় নি। ফলে সুস্পষ্ট কোনো অর্থও প্রকাশ পায় নি। কিন্তু—
বাবা বাজার থেকে ইলিশ এনেছেন৷
এভাবে লেখা হলে বক্তব্যটির অর্থ পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে একটি সুগঠিত বাক্য হতো। তাই সার্থক বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলোর যথাযথ অবস্থানে থাকা আবশ্যক।
৩. যোগ্যতা : বাক্যের অন্তর্গত পদগুলোর মধ্যে অর্থের সংগতি ও ভাবের মিলবন্ধনকে যোগ্যতা বলে। যেমন : আমরা বড়শি দিয়ে মাছ ধরি।
আমরা বড়শি দিয়ে মাছ ধরি।
এটি একটি সার্থক বাক্য। কেননা এখানে পদগুলোর অর্থগত ও ভাবগত মিল রক্ষিত হয়ে তা বিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। কিন্তু-
আমরা বড়শি দিয়ে নারকেল পাড়ি।
বললে বক্তব্যটিতে অর্থ ও ভাবের অসংগতি প্রকাশ পায়। তা বিশ্বাসযোগ্যও হয় না। কারণ বড়শি দিয়ে কেউ নারকেল পাড়ে না। সুতরাং বাক্যে পদগুলোর মধ্যে অর্থের সংগতি ও ভাবের মিল রক্ষা করা আবশ্যক। নয়তো যোগ্যতার অভাবে তা বাক্য হবে না।