গৃহ পরিবেশে নিরাপত্তা

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গার্হস্থ্য বিজ্ঞান - গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহ সম্পদ | NCTB BOOK

পাঠ ১ - গৃহ পরিবেশে নিরাপত্তা রক্ষায় করণীয় ও প্রাথমিক চিকিৎসা

গৃহ পরিবেশে নিরাপত্তা রক্ষায় করণীয় - গৃহের সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন, নিরাপদে চলাফেরা, আরাম ও
বিশ্রামের জন্য গৃহ পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পরিপাটি থাকা প্রয়োজন। গৃহে এরকম পরিবেশ বজায় রাখলে
গৃহ নিরাপদ আশ্রয় স্থলে পরিণত হয়। গৃহ পরিবেশ যদি নিরাপদ না থাকে তবে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার
সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় -

আসবাবপত্র যথাস্থানে রাখা, যাতে ঘরের মধ্যে চলাফেরায় কোনো অসুবিধা না হয়।

কোনো আসবাবপত্র ভেঙে গেলে সেটা সরিয়ে ফেলা বা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেরামত করা।

গৃহে চলাচলের জায়পায়, সিঁড়িতে, রান্নাঘরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা।

• সিঁড়িতে, ছাদের চারপাশে রেলিং এর ব্যবস্থা রাখা।

• বাথরুম, রান্নাঘর, কলপাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, মেঝে যাতে পিচ্ছিল না থাকে সে জন্য ঝাড়ু বা
ব্রাশ দিয়ে ঘষে শ্যাওলা বা পিচ্ছিল পদার্থ দূর করা।

মেঝেতে কাচের টুকরা, পিন, সুচ ইত্যাদি পড়লে সাথে সাথে তা তুলে ফেলা।

ঘরের মেঝেতে পানি পড়লে সাথে সাথে মুছে ফেলা।

• ছুড়ি, কাঁচি, বটি, দা, নেইল কাটার, নিড়ানী, কোদাল ইত্যাদি সরঞ্জাম কাজ শেষে যথাস্থানে গুছিয়ে
রাখা।

• রান্নাঘরের ময়লা-আবর্জনা ডাস্টবিন বা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা।

• বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে গেলে, সুইচ ভেঙে গেলে সাথে সাথে তা মেরামত করা।

• বৈদ্যুতিক তার, সুইচ ইত্যাদিতে ছোট শিশুরা যাতে হাত দিতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা।

• রান্না শেষে চুলা নিভিয়ে ফেলা।

ঔষধ, কীটনাশক, সার ইত্যাদি ছোট শিশুদের নাগালের বাইরে রাখা।

• নর্দমা বা ড্রেন, ম্যানহোলে ঢাকনা ব্যবহার করা।

পরিবারের সকলের সচেতনতা ও সক্রিয় প্রচেষ্টার মাধ্যমে গৃহ পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। গৃহ
পরিবেশের নিরাপত্তা পরিবারে যাচ্ছন্দ্য, শান্তি ও কল্যাণ নিয়ে আসে ।

প্রাথমিক চিকিৎসা – বাড়িতে, স্কুলে বা খেলার মাঠে হঠাৎ কারও কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে বা কেউ অসুস্থ হলে
তাকে আরাম দেওয়ার জন্য তোমরা কি কোনো ব্যবস্থা নিতে পার? প্রাথমিক চিকিৎসার সাহায্যে এরকম
অবস্থায় আহত বা অসুস্থ ব্যক্তিকে সাময়িকভাবে আরাম দেওয়া যায়। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে
আমাদের ধারণা থাকা দরকার। হঠাৎ করে কোনো দুর্ঘটনা ঘটার সাথে সাথে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার
আগে, আহত ব্যক্তির জীবন রক্ষা বা তাকে সাময়িকভাবে আরাম দেওয়ার জন্য জ্ঞান ও দক্ষতা দ্বারা যে ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হয়, তাই প্রাথমিক চিকিৎসা।

উদ্দেশ্য -

আহত ব্যক্তির জীবন রক্ষা করা, যাতে রোগীর অবস্থা খারাপের দিকে না যায়; যেমন রক্ত
পড়তে থাকলে তা বন্ধের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা,
নাড়ির গতি দেখা ইত্যাদি।

আহত ব্যক্তির অবস্থার উন্নতি করে সাময়িক আরাম দেওয়া।

প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি -

গৃহে ছোট ছোট দুর্ঘটনা মোকাবেলা অথবা
অসুস্থ রোগীর সেবায় প্রাথমিক চিকিৎসার
জন্য কিছু সরঞ্জামাদি রাখা খুবই জরুরি।
সরঞ্জামাদির তালিকা গজ, তুলা, ব্যান্ডেজ,
সরু ধারালো ছুরি, কাঁচি, ডেটল/স্যাভলন,
পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, কার্বলিক অ্যাসিড,
স্পিরিট, ব্যথানাশক ঔষধ ইত্যাদি। প্রাথমিক
চিকিৎসার সরঞ্জামাদি একটি বাক্সে ভরে
নিরাপদ জায়গায় রাখতে হবে, প্রয়োজনের
সময় যাতে সহজেই হাতের কাছে পাওয়া
যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি যে
বাক্সে রাখা হয় তাকে ফার্স্ট এইড বক্স
বলে।

পাঠ ২- বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা

দুর্ঘটনা ছোট ও বড় যে কোনো ধরনের হতে পারে। প্রথমে আমরা ছোট দুর্ঘটনা সম্পর্কে জানব ।
ছোট দুর্ঘটনা – যে দুর্ঘটনাগুলো ঘটলে মারাত্মক আকার ধারণ করে না, প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সহজেই

সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় সেগুলো ছোট দুর্ঘটনা। যেমন-

১। ছোট আঘাত- মাংসপেশিতে চাপ লাগা, নখ কাটতে গিয়ে দেবে যাওয়া, চোখে কিছু পড়া, হাতে গরম
ভাপ লাগা ইত্যাদি ছোট আঘাত হিসাবে ধরা হয়। এই ক্ষেত্রে যা করণীয়-

• মাংসপেশিতে, আঙুলে চাপ লাগলে সেই স্থান নীল হয়ে যায়, তাই চাপ লাগার সাথে সাথে একখণ্ড

বরফ কাপড়ে পেঁচিয়ে ধরতে হবে বা ঠাণ্ডা পানি ঢালতে হবে।

নখের কোণা দেবে গেলে, জীবাণুনাশক ক্রিম বা স্যাভলন দিয়ে মুছে ফেলতে হবে।

চোখে কিছু পড়লে পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুতে হবে।

রান্নার সময় পরম ভাপ লাগলে বরফ, , ঠাণ্ডা পানি, লবণ পানি, নারকেল তেল বা টুথপেস্ট আক্রান্ত
স্থানে লাগাতে হবে।

২। কেটে যাওয়া- দা, ছুরি, বটি, ব্লেড দিয়ে কাজ করতে গেলে অনেক সময় হাত বা পা কেটে যায়। কেটে
-
গেলে যা করণীয়-

কাটা স্থানে ময়লা থাকলে পানি দিয়ে পরিষ্কার করে, কাপড় দিয়ে চাপ দিয়ে ধরতে হবে এবং উঁচু
করে রাখতে হবে, যাতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়।
• জীবাণুনাশক ঔষধ যেমন- স্যাভলন, ডেটল, নেভানল ক্রিম ইত্যাদি লাগিয়ে গজ বা পরিষ্কার কাপড়

দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে।

ক্ষত বেশি হলে প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে ।

৩। কীটপতঙ্গের দংশন – বোলতা, মৌমাছি, পিঁপড়া, ভিমরুল ইত্যাদি কামড়ালে বা হুল ফুটালে যা করণীয় -
সুচের আগা আগুনে পুড়িয়ে স্যাভলন দিয়ে মুছে জীবানুমুক্ত করে তুল তুলে আনতে হবে।

• মৌমাছি, পিঁপড়া কামড়ালে পিঁয়াজের রস বা লেবুর রস ঘসে লাগাতে হবে।

প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৪। কাঁটা ফুটে যাওয়া হাতে-পায়ে কোথাও কাঁটা
ফুটে গেলে অথবা কাঠ বা বাঁশের শাল ঢুকে
গেলে যা করণীয় -

• কাঁটা বা শালের অংশ যদি দেখা যায়
তবে চিমটা দিয়ে তুলে ফেলতে হবে।

যদি না দেখা যায় তবে সুচ আগুনে পুড়িয়ে
জীবাণু মুক্ত করে কাঁটাযুক্ত স্থানের চামড়া
সূচ দিয়ে সরিয়ে শাল বা কাঁটা বের করে
আনতে হবে, এরপর স্থানটি জীবাণুনাশক
দিয়ে মুছে ফেলতে হবে ।

৫। গলায় কিছু আটকে যাওয়া-অনেক সময় মাছের কাঁটা, হাড়ের টুকরা গলায় আটকে যায়। ফলে ঢোক
পিছলে পলায় ব্যথা লাগে, অস্বস্তি বোধ হয়। এই ক্ষেত্রে যা করণীয় -
-

অনেক সময় শুকনা ভাত মুঠা করে না চিবিয়ে গিলে খেলে কাঁটা নেমে যায়।

পাকা কলা খেলেও কাঁটা নেমে যায়।

প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৬। চোখে কিছু পড়া-ধুলা-বালি, চোখের পাপড়ি চোখের ভিতরে ঢুকে গেলে কোনোক্রমেই চোখে হাত দেওয়া
উচিত নয়। ঘষা লাগলে চোখ জ্বালা করবে। চোখের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই যা করতে হবে-

চোখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে, এতে আরাম বোধ হবে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৭। কানে কিছু ঢুকে যাওয়া- কানে পিঁপড়া বা পোকা ঢুকে গেলে খুবই অস্বস্তি লাগে। এই ক্ষেত্রে যা করণীয়-

• কিছু সময় শ্বাস বন্ধ করে রাখলে পিঁপড়া বা পোকা বেরিয়ে আসবে।

প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

পাঠ ৩- বড় দুর্ঘটনা (অজ্ঞান হওয়া, আগুনে পোড়া, সাপে কাটা)

বড় দুর্ঘটনায় মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়, মৃত্যুঝুঁকি থাকে। এইসব দুর্ঘটনায় প্রাথমিক চিকিৎসা ক্ষতির হাত
থেকে আহত ব্যক্তিকে রক্ষা করে সাময়িক আরাম দিতে পারে। তাই বড় দুর্ঘটনা সম্পর্কে সকলের ধারণা থাকা
দরকার। বড় দুর্ঘটনাগুলো হচ্ছে- • অজ্ঞান হওয়া, আগুনে পোড়া, সাপে কাটা, হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া,
পানিতে ডোবা, তড়িতাহত ইত্যাদি ।

বড় দুর্ঘটনাগুলোতে করণীয় -

১। অজ্ঞান হওয়া - অত্যাধিক গরম, ক্ষুধা,
ভয়, দুর্বলতা, দুঃসংবাদ ইত্যাদি কারণে
মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ কমে যায়,
ফলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা
থাকে। কেউ অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে
যা করতে হবে তা হচ্ছে-

অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে চিৎ
করে শুইয়ে দিতে হবে এবং
মস্তিষ্কে অধিকতর রক্ত
সরবরাহের জন্য পা উঁচু করে
রাখতে হবে, শ্বাস-প্রশ্বাস ও নাড়ির
স্পন্দন লক্ষ করতে হবে।

-মানুষের ভিড় কমিয়ে মুক্ত বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

-শরীরের কাপড় ঢিলা করে দিতে হবে।

-রোগীর দাঁতেদাঁত যাতে লেগে না যায়, সে জন্য রুমাল ভাজ করে দুই পাটি দাঁতের মাঝে দিতে
হবে।

-চোখে, মুখে পানির ঝাপটা দিতে হবে।

-হাত ও পায়ের তালু ম্যাসেজ করতে হবে।

-জ্ঞান ফিরলে গরম দুধ বা শরবত খাওয়াতে হবে।

-প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

২। আগুনে পোড়া - অনেক সময় পরিধেয় বসের আগুন ধরে যায়। গরম পানি, তেল, গরম দুধ ইত্যাদি
শরীরে পড়ে শরীর ঝলসে যায়। এই ক্ষেত্রে যা করণীয় তা হচ্ছে -

-পরিধেয় বস্ত্রে আগুন লাগলে তা খুলে ফেলতে হবে।

-কাপড় খুলতে না পারলে মাটিতে গড়াগড়ি দিয়ে আগুন নেভাতে হবে।

-ভারী কাঁথা, মোটা চট বা চটের বস্তা দিয়ে জড়িয়ে ধরলে আগুন নিভে যায়।

-ক্ষত স্থানে ঠাণ্ডা পানি বা বরফ দিলে ফোসকা পড়বে না। পোড়া জায়গায় কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট
পানি ঢালতে হবে। ফোসকা পড়ে গেলে কোনোক্রমেই সেটা গলানো যাবে না।

-প্রচুর পানি খেতে হবে এবং চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

৩। সাপে কাটা – আমাদের দেশে গ্রাম অঞ্চলে যেখানে ঝোপ-জঙ্গল থাকে, সেখানে সাপ থাকার সম্ভাবনা
থাকে। এছাড়া বর্ষাকালে সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পায়। সে সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। তবে
রাস্তা ঘাটে বা হাঁটা-চলার পথে সাপ আক্রমণ করতে পারে। সাপে কাটলে প্রথমে লক্ষ করতে হবে
সাপটি বিষধর কিনা। সাপ কামড়ালে যদি দুটি দাঁতের চিহ্ন '' থাকে তবে বুঝতে হবে সাপটি
বিষধর। আর যদি চারটি দাঁতের চিহ্ন - '' থাকে তবে বুঝতে হবে সাপটি বিষধর নয়।

বিষধর সাপ কামড়ালে যা করণীয়-

-সাপে কাটার সাথে সাথে বিষ রক্ত প্রবাহের
মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে, তাই আক্রান্ত
স্থানের উপরে পর পর দুইটি বাঁধন দিতে
হবে।

-ধারালো ব্লেড বা ছুরি আগুনে পুড়িয়ে, ডেটল
বা স্যাভলন দিয়ে মুছে জীবাণুমুক্ত করে নিতে
হবে।

-দংশিত স্থান হাফ ইঞ্চি বা এক সেন্টিমিটার
গভীর করে কেটে চাপ দিয়ে রক্ত বের করে
ফেলতে হবে।

-বাধন কোনোক্রমেই ৩০ মিনিটের বেশি রাখা
যাবে না, কারণ এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে
বাঁধনের নিচের অংশে পচন ধরতে পারে।

সাপে কাটায় বাঁধন দেয়া

-দংশিত ব্যক্তিকে জাগিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে, তাকে গরম দুধ বা চা খাওয়াতে হবে।

-দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
সাপটি যদি বিষধর না হয় তবে আক্রান্ত স্থানটি জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

পাঠ ৪ - হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া, পানিতে ডোবা, তড়িতাহত

১। হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া পড়ে গিয়ে বা কোনো

১। হাড় ফাটা ও ভেঙে যাওয়া পড়ে গিয়ে বা কোনো
দুর্ঘটনায় শরীরের যে কোনো অংশের হাড় ফেটে বা
ভেঙে যেতে পারে। এতে আহত ব্যক্তি যন্ত্রণায়
ছটফট করে। এই ক্ষেত্রে করণীয় হচ্ছে -

• যে স্থানের হাড় ফেটেছে বা ভেঙে গেছে বলে
মনে হচ্ছে সেই স্থানটি খুব সাবধানে বাঁশের
চটা বা কাঠের তক্তা বা বোর্ডের উপর রেখে
হাল্কাভাবে কাপড় দিয়ে জড়িয়ে চিকিৎসকের
কাছে নিয়ে যেতে হবে।

কোনোক্রমেই হাড় সোজা করার চেষ্টা করা যাবে না।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে ।

২। পানিতে ডোবা – ছোট শিশু, সাঁতার না জানা ব্যক্তি নদী, পুকুর বা ডোবায় পড়ে গেলে ডুবে যায়। কেউ
পানিতে ডুবে গেলে তাকে পানি থেকে তোলার জন্য নিজে কখনো পানিতে নামবে না। যা করতে হবে
তা হচ্ছে -

চিৎকার করে বড়দের সাহায্য চাইতে হবে।

ভেসে থাকা যায় এমন কিছু যেমন-বাঁশ, গাছের ডালপালা, খালি হাড়ি, কলস, তক্তা ইত্যাদি ছুড়ে
মারতে হবে।

বড়দের সাহায্য নিয়ে বড় বাঁশ, গাছের ডাল দিয়ে তাকে কাছে টেনে আনার চেষ্টা করতে হবে।

যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পানি থেকে তুলে এনে শ্বাসক্রিয়া ও নাড়ির স্পন্দন লক্ষ করতে হবে।
পানিতে ডুবে গেলে নাক-মুখ দিয়ে পানি ঢুকে শ্বাসনালী ও ফুসফুসে চলে যায় ফলে শ্বাসক্রিয়া বন্ধ
হয়ে যায়।

যদি দেখা যায় নিঃশ্বাস পড়ছে না
তাহলে মাথা নিচু ও কাত করে শুইয়ে
দিতে হবে, মুখের চোয়াল দুই পাশ
থেকে শক্ত করে ধরে মুখ হাঁ করে
শ্বাসনালী খুলে দেওয়ার জন্য দুটি
আঙুলে পরিষ্কার কাপড় পেঁচিয়ে মুখের
ভিতরে ঢুকিয়ে পেট ও বুকে চাপ দিতে
হবে। এতে ভিতরের পানি গলা দিয়ে
বের হয়ে আসবে। অতপর চিত্রের মতো
কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস প্রশ্বাস চালুর চেষ্টা
করতে হবে।

দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কৃত্রিমভাবে শ্বাসক্রিয়া চালানো হচ্ছে

৩। তড়িতাহত - আমরা অনেক সময় অসাবধানতা বা অজ্ঞতার কারণে তড়িতাহত বা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হই।
তড়িতাহত বা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হলে কোনোক্রমেই তাকে খালি হাতে স্পর্শ করবে না। স্পর্শ করলে তুমিও
বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হবে। অনেক সময় ঝড়ে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যায়। ছেঁড়া তারে বিদ্যুৎ প্রবাহ থাকলে সে
ভারের সংস্পর্শে আসলে বিদ্যুৎ সৃষ্ট হতে হয়। কেউ তড়িতাহত হলে তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে বা
গৃহের ডাঙা সুইচে হাত দিলেও বিদ্যুৎ সৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এ ক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হচ্ছে -

-তড়িতাহত হওয়ার সাথে সাথে মেইন সুইচ বন্ধ করে দিতে হবে।

-কোনো কারণে সুইচ বন্ধ করতে না
পারলে শুকনা কাঠ বা বাঁশ দিয়ে
তড়িতাহতকে ধাক্কা দিতে হবে।

-হাতে রাবারের দস্তানা, পায়ে রাবারের
স্যান্ডেল পরে তড়িতাহতকে উদ্ধার
করতে হবে।

-শ্বাসক্রিয়া চলছে কিনা তা দেখে মুখে
মুখ লাগিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাসক্রিয়া
চালাতে হবে।

তড়িতাহতকে রক্ষা

-কাঠের উপর শুইয়ে দিয়ে মালিশ করে রক্ত চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে।

-চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

-কাজ তড়িতাহত হলে কী করতে হবে তা দলগতভাবে অভিনয় করে দেখাও ।

অনুশীলনী

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১. জীবাণুনাশক দ্রব্য কোনটি?

ক. গজ

গ. স্পিরিট

২. পরিবারের উদ্দেশ্যই হলো সদস্যদের-

1. চাহিদা পূরণ

ii. লক্ষ্য অর্জন

iii. নিরাপত্তাদান

নিচের কোনটি সঠিক

ক. i ও ii

গ. ii ও iii

খ. স্টিকিং

ঘ. ব্যান্ডেজ

খ. I ও iii

ঘ. i, ইইইইই

গার্হস্থ্য বিজ্ঞান

নিচের অনুচ্ছেদটি পড় এবং ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও

গ্রীষ্মের সকালে রানা সুস্থ শরীরে খাওয়া-দাওয়া করে স্কুলে আসে। বিদ্যালয়ে দুই ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ
নেই। ব্যবহারিক ক্লাস করতে করতে হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যায় রানা। ক্লাসের অন্য ছাত্ররা এসে ভিড়
জমায়। রানার বন্ধু রনি ছাত্রদের ভিড় করতে মানা করে।

৩. রানার অজ্ঞান হওয়ার কারণ কী?

ক. ক্ষুধা

খ. গরম

গ.

৪. রানার জন্য রনির করনীয়-

চিৎ করে শুইয়ে দেওয়া

II. বাতাসের ব্যবস্থা করা

iii. চোখে-মুখে পানির ঝাপটা দেওয়া

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. ७॥

গ. ii ও iii

সৃজনশীল প্রশ্ন

১. রোকসানা বেগমের গৃহে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র প্রায় এখানে-সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। গত মাসে
রোকসানা বেগমের ছোট ছেলে জাওয়াদ বাথরুমে পিছলে পড়ে হাত ভেঙে ফেলে। এছাড়া একদিন আগে
মেঝেতে পড়ে থাকা ব্লেডের সাহায্যে তার মেয়ে মিতুর পা কেটে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়। মা হাতের
কাছে থাকা জীবাণুনাশক দ্রব্য এবং পরিষ্কার কাপড় দিয়ে বেঁধে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন। পরবর্তীতে মা
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

ক. গৃহের কোন পরিবেশ ক্লান্তি দূর করে?

খ. “গৃহ আমাদের স্বস্তির সম্বল”- বুঝিয়ে লেখ।

গ. মিতুর দুর্ঘটনায় মায়ের গৃহীত ব্যবস্থাটি কী নামে পরিচিত? তা ব্যাখ্যা কর।

রোকসানার গৃহ পরিবেশ নিরাপদ কী? বিশ্লেষণ কর।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion