পূর্ব পাঠে আমরা জেনেছি প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীবজগতের সাথে মানুষের জীবন নিবিড়ভাবে জড়িত। কিন্তু নানা কারণে ও নানাভাবে তা নষ্ট হচ্ছে। সৃষ্টিলগ্ন থেকে ঈশ্বর মানুষকে দায়িত্ব দিয়েছেন তা সুরক্ষা করতে ও যত্ন নিতে। আমরা কীভাবে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীবজগৎ সুরক্ষা করতে পারি, সে বিষয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। যখন-তখন গাছ না কেটে বরং গাছ লাগাতে ও যত্ন নিতে হবে। বিনা প্রয়োজনে পশুপাখি হত্যা না করা। জমিতে নানারকম বিষ প্রয়োগ বন্ধ করা। কলকারখানার বর্জ্য ফেলে নদ-নদী ও সমুদ্রের পানি নষ্ট না করা। বরং সচেতনভাবে পরিবেশ ও জীবজগতকে সুরক্ষা করে ও যত্ন নিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
পথে চলতে চলতে যখন কোনো গাছের উপরে বা মাটিতে এমন কোনো পাখির বাসা দেখতে পাও যে, যার মধ্যে বাচ্চা বা ডিম আছে, এবং সেই বাচ্চা বা ডিমের উপরে পাখিরা তা দিচ্ছে, তবে তুমি বাচ্চাদের সঙ্গে পাখিকে ধরবে না। তুমি সেই বাচ্চাগুলিকে নিজের জন্য নিতে পারবে, কিন্তু পাখিকে নিশ্চয়ই ছেড়ে দেবে, যেন তোমার মঙ্গল ও দীর্ঘ পরমায়ু হয়। (দ্বিতীয় বিবরণ: ২২: ৬-১১)।
প্রকৃতি ও জীবজগৎ যেভাবে নষ্ট হচ্ছে তা দেখে, ক্যাথলিকমণ্ডলীর প্রধান ধর্মগুরু পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস খুব চিন্তিত ও বিচলিত হয়ে পড়লেন। তিনি 'তোমার প্রশংসা হোক' নামে একটি সর্বজনীন পত্র লিখেছেন। এই পত্রে তিনি আমাদের অভিন্ন বসতবাটির যত্ন কীভাবে নিতে হবে তার নির্দেশনা দিয়েছেন। ধরিত্রীমাতা, বিশ্বপ্রকৃতি ও জীবজগৎকে রক্ষা ও যত্ন করার জন্য সকলের প্রতি তিনি আকুল আবেদন জানিয়েছেন। বিশ্বব্যাপী মানুষের কাছে এই পত্রটি গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেছে। পৃথিবীর এই সংকটকালে এর প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব কত বেশি তা বুঝেছে। এই পত্রে তিনি লিখেছেন-
ঈশ্বর নিজে মানুষকে প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীবজগৎ সুরক্ষা ও যত্ন করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়ে বাইবেল ও মণ্ডলীর শিক্ষা সম্পর্কে জেনেছি। কীভাবে প্রকৃতি, পরিবেশ ও জীবজগতের যত্ন নিতে পারি তা শিখেছি।
ক) সঠিক তথ্য দিয়ে খালি জায়গা পুরণকরি।
i) মানুষকে ঈশ্বর দায়িত্ব দিয়েছেন সৃষ্টি সুরক্ষা ও ______ করতে।
ii) জগতের সমস্ত কিছুই পরস্পর ______ ।
iii) ঈশ্বরের সৃষ্ট জীববৈচিত্র্য নষ্ট করার অপরাধে ______ অপরাধী।
iv) পানি, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য সম্পদ ব্যবহারে ______ হবো।
ⅴ) প্রকৃতি ও জীবজগতের বিরুদ্ধে পাপ করা মানে ______ ও ______ বিরুদ্ধে পাপ করা।
খ) নিজে করি।
i) নিজের বাড়িতে ও বিদ্যালয়ে গাছ লাগাবো।
ii) সবাই মিলে বিদ্যালয়ের আঙিনা পরিষ্কার করবো।
iii) কী করে প্রকৃতি ও জীবজগৎ রক্ষা করা ও যত্ন নেয়া যায় তা আলোচনা করবো।
গ) একসাথে প্রার্থনা করি।
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর,
তুমি সমস্ত বিশ্বে সকল সৃষ্টি ও প্রাণীর মধ্যে উপস্থিত আছো।
বিশ্বসৃষ্টির সৌন্দর্যে তোমাকে ধ্যান করতে আমাদের শেখাও।
তোমার সবকিছুর জন্য আমাদের অন্তরে তোমার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগিয়ে দাও।
আমরা যেন বিশ্বসৃষ্টির সবকিছুর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বুঝতে পারি।
শক্তি দাও, আমরা যেন আমাদের আবাসভূমি পৃথিবীর যত্ন নিতে পারি।
এই প্রার্থনা করি তোমার পুত্র যীশুর নামে। আমেন।।