প্রতিসরণের ব্যবহার

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - পদার্থবিজ্ঞান - আলোর প্রতিসরণ (Refraction of Light) | NCTB BOOK

আলোর প্রতিসরণের নানা ধরনের ব্যবহার রয়েছে। আমাদের জীবনের নানা ক্ষেত্রে যে ব্যবহারগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে তোমাদের সেরকম কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে: 

 

Content added By

অপটিক্যাল ফাইবার

নতুন পৃথিবীর যোগাযোগের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক তারকে অত্যন্ত সরু কাচের তন্তু দিয়ে পাল্টে দেওয়া হয়েছে। আগে যেখানে বৈদ্যুতিক সিগন্যাল দিয়ে তথ্য পাঠানো হতো এখন সেখানে আলোর সিগন্যাল দিয়ে তথ্য পাঠানো হয়। মুক্ত অবস্থায় আলো সরলরেখার যায় কিন্তু ফাইবারে আলো আটকা পড়ে যায় বলে সেটাকে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে যেকোনো দিকে নেওয়া সম্ভব।

 

অপটিক্যাল ফাইবার অত্যন্ত সরু কাচের তন্তু, এর ভেতরের অংশকে বলে কোর (core), বাইরের অংশকে বলে ক্ল্যাড (clad)। দুটিই একই কাচ দিয়ে তৈরি হলেও ভেতরের অংশের (কোর) প্রতিসরণাঙ্ক বাইরের অংশ থেকে বেশি। এ কারণে আলোকে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে কোরের মাঝে আটকে রেখে অনেক দূরে নিয়ে যাওয়া যায়। (চিত্র 9.10) অপটিক্যাল ফাইবার দিয়ে আলো শত শত কিলোমিটার নিয়ে যাওয়া যায়, কারণ এই কাচের তন্তুতে আলোর শোষণ হয় খুবই কম। দৃশ্যমান আলো হলে শোষণ বেশি হতো বলে ফাইবারে লম্বা তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের ইনফ্রারেড বা অবলাল রশ্মি ব্যবহার করা হয়। 

শেষ অধ্যায়ে এডোস্কোপি নামের চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি প্রক্রিয়ায় কীভাবে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করা হয় সেটি বর্ণনা করা হয়েছে। 

Content added By
Content updated By

পেরিস্কোপ ও বাইনোকুলার

আমরা সবাই জানি সাবমেরিনে পেরিস্কোপ থাকে এবং সেই পেরিস্কোপ দিয়ে পানির নিচ থেকে পানির উপরের দৃশ্য দেখা সম্ভব। সাধারণ আয়না দিয়ে যে ধরনের পেরিস্কোপ তৈরি করা যায় তার থেকে অনেক বেশি কার্যকর পেরিস্কোপ তৈরি করা হয় প্রিজম এবং তার পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন দিয়ে। বাইনোকুলারের দৈর্ঘ্য কমানোর জন্যও এর ভেতরে প্রিজম দিয়ে পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলন করা হয়ে থাকে। 

Content added By
Content updated By

কোনো স্বচ্ছ মাধ্যমের দুই পৃষ্ঠ সমান্তরাল না হলে তাকে গ্রিজম বলে। স্বচ্ছ সমান্তরাল মাধ্যমে বেদিকে আলো প্রবেশ করে সেই দিকের সাথে সমান্তরাল হয়ে আলোক রশ্মি বের হয়ে যায়। দিক অপরিবর্তিত থাকলেও আলোক রশ্মি মূল রশ্মি থেকে খানিকটা সরে যায়। প্রিজমের বেলায় আলোক রশ্মির দিক পাল্টে যায়। প্রথম পৃষ্ঠ দিয়ে আলোক রশ্মিটি প্রবেশ করার সময় লম্বের দিকে বেঁকে যায়। যেহেতু দ্বিতীয় পৃষ্ঠটি সমান্তরাল নয় তাই সেই পৃষ্ঠ দিয়ে আলো বের হবার সময় লম্ব থেকে সরে গেলেও সেটি আর মূল দিকে ঘুরে যেতে পারে না। 

প্রিজমে আলোর দিক পাল্টে যাবার ঘটনা ঘটলেও সেটি অন্য একটি কারণে আরো বেশি পুরুত্বপূর্ণ। প্রিজমে একটি আলোক রশ্মি প্রবেশ করার পর সেটি মূল দিক থেকে কতটুকু বেঁকে যাবে সেটি প্রিজমের প্রতিসরণাঙ্কের ওপর নির্ভর করে। আমরা আগেই বলেছি প্রতিসরণাঙ্ক আসলে আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য বা রঙের ওপর নির্ভর করে। তাই ভিন্ন ভিন্ন রঙের জন্য প্রতিসরণাঙ্ক ভিন্ন, কাজেই একই আলোক রশ্মিতে ভিন্ন ভিন্ন রং থাকলে প্রিজমের ভেতর দিয়ে যাবার সময় সেই রঙের আলোগুলো ভিন্ন ভিন্ন কোণে দিক পরিবর্তন করবে। কাজেই আমরা দেখব প্রিজম থেকে আলো বের হবার সময় তার রংগুলো আলাদা হয়ে গেছে, নিউটন যেটি প্রথম দেখিয়েছিলেন। 

Content added By
Content updated By

 

আলোর প্রতিসরণ ব্যবহার করে লেন্স তৈরি করা হয়। এই লেন্স দিয়ে চশমা থেকে শুরু করে টেলিস্কোপ বা মাইক্রোস্কোপের মতো সূক্ষ্ম অপটিক্যাল যন্ত্রপাতি তৈরি করা হয়। ভিডিও প্রজেক্টর বা ক্যামেরাতেও লেন্স ব্যবহার করা হয়। এই অধ্যায়ে আমরা বিস্তৃতভাবে লেন্স, লেন্সের প্রকারভেদ এবং তার ধর্ম নিয়ে আলোচনা করব। 

Content added By
Promotion