বাংলাগান ব্যাবহারিক
রবীন্দ্রসংগীত
রাগ: ইমন তাল: অপক
পর্যায়। পুজা
বিপদে
দুঃখতাপে ব্যথিত চিতে নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
দুঃখে যেন করিতে পারি জয়
মোরে রক্ষা করো এ নহে মোর প্রার্থনা- বিপদে আমি না যেন করি ভয়।
সহায় মোর না যদি জুটে নিজের বল না যেন সংসারেতে ঘটিলে ক্ষতি লভিলে শুধু বঞ্চনা,
টুটে-
নিজের মনে না যেন মানি ক্ষয় ।
আমারে
আমার ভার লাঘব করি নাই বা দিলে সান্ত্বনা,
তুমি করিবে ত্রাণ এ নহে মোর প্রার্থনা- তরিতে পারি শকতি যেন রয়।
বহিতে পারি এমনি যেন হয় নম্রশিরে সুখের দিনে তোমারি মুখ লইব চিনে-
দুখের রাতে নিখিল ধরা যে দিন করে বঞ্চনা
তোমারে যেন না করি সংশয়
• ইমন রাগে ও ঝম্পক তালে রচিত ব্রহ্মসংগীত। রবীন্দ্রনাথের পূজা পর্যায়ের গান। গানটি গীতাগুলির অন্তর্গত। ১৩১৩ বঙ্গাব্দে রচিত। ১৩১৪ সালের মাঘোৎসবে প্রথম গীত হয়। স্বরবিতান ২৫তম খণ্ডে এই গানের স্বরলিপি আছে। রবীন্দ্রনাথ ৪৫ বছর বয়সে এই গান রচনা করেন।
রবীন্দ্রসংগীত
পর্যায়: স্বদেশ তাল: দাদরা
তোর আপন জনে ছাড়বে ভোরে,
ও তোর আশালতা পড়বে ছিঁড়ে,
ও তুই বারে বারে জ্বালবি বাতি,
তা বলে ভাবনা করা চলবে না। হয়তো রে ফল ফলবে না আসবে পথে আঁধার নেমে, তাই বলেই কি রইবি থেমে- শুনে তোমার মুখের বাণী আসবে ঘিরে বনের প্রাণী- হয়তো তোমার আপন ঘরে তোরে বারে বারে ঠেলতে হবে, হয়তো দুয়ার টপবে না
হয়তো বাতি জ্বলবে না
পাষাণ হিয়া গলবে না। বন্ধ দুয়ার দেখলি ব'লে অমনি কি তুই আসবি চলে--
* দেশাত্মবোধক গান। স্বদেশ পর্যায়ের অন্তর্গত। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনকালে রবীন্দ্রনাথ গানটি রচনা করেন। বাউল
ঢঙের রচনা। ভাষার পত্রিকায় ১৩১২ বঙ্গাব্দের ভাদ্র-আশ্বিন সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত। স্বরবিতান ৪৬তম খণ্ডে
গানটির স্বরলিপি আছে।
রবীন্দ্রসংগীত
পর্যায়: পূজা তাল: তেওড়া
জগত জুড়ে উদার সুরে আনন্দগান বাজে,
সে গান কবে গভীর রবে বাজিবে হিয়া-মাঝে
বাতাস জল আকাশ আলো সবারে কবে বাসি ভালো,
হৃদয়সভা জুড়িয়া তারা বসিবে নানা সাজে
নয়ন দুটি মেলিলে কবে পরান হবে খুশি
যে পথ দিয়া চলিয়া যাব সবারে যাব তুমি।
রয়েছ তুমি এ কথা কবে জীবনমাঝে সহজ হবে,
আপনি কবে তোমারি নাম ধ্বনিবে সব কাজে
রবীন্দ্রসংগীত
আকাশভরা সূর্য-তারা, বিশ্বভরা প্রাণ, তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান
অসীম কালের যে হিল্লোলে জোয়ার-ভাটায় ভুবন দোলে নাড়ীতে মোর রক্তধারায় লেগেছে তার টান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান
ঘাসে ঘাসে পা ফেলেছি বনের পথে যেতে,
ফুলের গন্ধে চমক লেগে উঠেছে মন মেতে,
ছড়িয়ে আছে আনন্দেরই দান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান।
কান পেতেছি, চোখ মেলেছি, ধরার বুকে প্রাণ ঢেলেছি,
জানার মাঝে অজানারে করেছি সন্ধান, বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান
রবীন্দ্রসংগীত
সংগীত
পর্যায় স্বদেশ তাল: দাদরা
দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা।
ও আমার
তোমাতে
বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা ॥
মিশেছ মোর দেহের সনে,
তুমি
মিলেছ মোর প্রাণে মনে, তোমার ওই শ্যামলবরন কোমল মূর্তি মর্মে গাঁথা
ওগো মা,
তোমার কোলে জনম আমার, মরণ তোমার বুকে।
তুমি
তুমি
তোমার পরেই খেলা আমার দুঃখে সুখে।
অন্ন মুখে তুলে দিলে,
শীতল জলে জুড়াইলে,
তুমি যে
সকল-সহা সকল-বহা মাতার মাতা ॥
অনেক তোমার খেয়েছি গো, অনেক নিয়েছি মা-
জানি নে-যে কী বা তোমায় দিয়েছি মা!
আমার
জনম গেল বৃথা কাজে,
কাটানু দিন ঘরের মাঝে-
বৃদ্ধা আমায় শক্তি দিলে শক্তিদাতা
রবীন্দ্রসংগীত
তাল: কাহারবা পর্যায়। প্রকৃতি (বর্ষা)
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদরদিনে
জানি নে, জানি নে কিছুতেই কেন যে মন লাগে না
এই চঞ্চল সজল পবন- বেগে উদ্ভান্ত মেঘে মন চায়
মন চায় ঐ বলাকার পথখানি নিতে চিনে
মেঘমলারে সারা দিনমান।
বাজে ঝরনার গান ।
মন হারাবার আজি বেলা, পথ ভুলিবার খেলা- মন চায়
মন চায় হৃদয় জড়াতে কার চিরঋণে
নজরুলসংগীত
সংগীত
একি অপরূপ রুপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী। ফুলে ও ফসলে কাদা-মাটি জলে ঝলমল করে লাবণী
রৌদ্রতপ্ত বৈশাখে তুমি চাতকের সাথে চাহ জল, আম-কাঁঠালের মধুর গন্ধে জ্যৈষ্ঠে মাতাও তরুতল; ঝঞ্ঝার সাথে প্রান্তরে মাঠে কভু খেল ল'য়ে অশনি
কেতকী-কদম-যুথিকা কুসুমে বর্ষায় গাঁথ মালিকা, পথে অবিরল ছিটাইয়া জল খেল চঞ্চলা বালিকা। তড়াগে পুকুরে থই থই করে শ্যামল শোভার নবনী
শাপলা-শালুক সাজাইয়া সাজি শরতে শিশিরে নাহিয়া, শিউলি-ছোপানো শাড়ি পরে ফের আগমনী-গীত গাহিয়া।
অঘ্রানে মা গো আমন ধানের সুঘ্রাণে ভরে অবনী শীতের শূন্য মাঠে ফের তুমি উদাসী বাউল সাথে মা, ভাটিয়ালী গাও মাঝিদের সাথে গো কীর্তন শোনো রাতে মা
ফাল্গুনে রাঙা ফুলের আবিরে রাঙাও নিখিল ধরণী
নজরুলসংগীত
সংগীত
তোরা সব জয়ধ্বনি কর। তোরা সব জয়ধ্বনি কর।।
ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল বোশেখীর ঝড় তোরা সব জয়ধ্বনি কর।।
আসলো এবার অনাগত প্রলয়- নেশার নৃত্য-পাগল, সিন্ধুপারের সিংহ দ্বারে ধমক হেনে ভাঙলো আগল!
মৃত্যু-গহন অন্ধকূপে
মহাকালের চণ্ডরূপে
ধূমৰূপে
বন্ধু-শিখার মশাল জ্বেলে আসছে ভয়ংকর।
ওরে ওই আসছে ভয়ংকর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর।।
দ্বাদশ রবির বহি-জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন-কটায়, দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার এক জটায়।
বিন্দু তাহার নয়ন-ঝাে
সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে কপোল-তলে!
বিশ্বমায়ের আসন ভারি বিপুল বাহুর পর
হাঁকে ঐ "জয় প্রলয়ংকর।" তোরা সব জয়ধ্বনি কর।।
মাভৈঃ ওরে মাভৈঃ মাভৈঃ জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে জরায় মরা মুমূর্ষুদের প্রাণ-লুকানো ঐ বিনাশে। আসবে ঊষা অরুণ হেসে
এবার মহা-নিশার শেষে
তরুণ বেশে।
দিগম্বরের জটায় লুটার শিশু-চাঁদের করা
আলো তার ভরবে এবার ঘর। তোরা সব জয়ধ্বনি কর।।
COLUMBIA GE, 7458।। শিল্পী: বাংলার সস্তান দল।। সুরঃ নিতাই ঘটক জাতীয় সংগীত।। তাল: দ্রুত-দার
নজরুলসংগীত
সংগীত
মরুর ধূলি উঠলো রেঙে রঙীন গোলাপ রাগে বুলবুলিয়া উঠলো গেয়ে মক্কার শুল্ বাগে খোদার প্রেমের কোন দিওয়ানা
ধারে ধারে দেয় রে ছানা, নবীন আশার আলোক পেয়ে, ঘুমন্ত সব জাে
এ কোন তরুণ প্রেমিক এলো কা'বার অঙ্গনে সবুজ পাতার নিশান দোলায় শুকনো খেজুর বনে। চির-চাওয়া খোদার হাবীব
এলো নব নীনের নকীব
নিখিল পাপী-তাপী যাঁহার পায়ের পরশ মাগে
TWIN
F.T. 12580 | শিল্পী: আবদুল লতিফ ইসলামী তাল: কাহারবা
নজরুলসংগীত
রুমঝুম রুম্ ঝুম্ কে বাজায়
জল- ঝুমঝুমি । চমকিয়া জাগে-
ঘুমন্ত বনভূমি
দুরন্ত অরণ্যা গিরি-নির্ঝরিণী রঙ্গে সঙ্গে ল'য়ে বনের হরিণী।
শাখায় শাখায় ঘুম ভাঙায়
ভীরু মুকুলের কপোল চুমি ॥
কুহু কুহু কুহরে পাহাড়ী কুহু
পিয়াল ডালে, পরাব বীণা বাজায় ফিরি ফিরি সমীরণ
তারি তালে তালে।
সেই জল ছলছল সুরে জাগিয়া, সাড়া দেয় বন পারে সাড়া দেয়
বাঁশী রাখালিয়া,
পল্লীর প্রান্তর ওঠে শিহরি
বলে "চঞ্চলা কে গো তুমি?"
রাগ: নির্ঝরিণী
আরোহী: স প গ ম প । অবরোহী: স দ প ম গ ম স বাদী: প সম্বাদী । অবরোহীতে 'নিখাদ' (তীব্র) ।
আরও দেখুন...