বার্ষিক গতির ফল হলো— (১) দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি, (২) ঋতু পরিবর্তন।
দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধি পৃথিবীর দিবারাত্রির হ্রাস-বৃদ্ধির প্রকৃত কারণ- (ক) পৃথিবীর অভিগত গোলাকৃতি, (খ) পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ, (গ) পৃথিবীর অবিরাম আবর্তন ও
পরিক্রমণ গতি। (খ) পৃথিবীর মেরুনেরাখার সর্বনা একই মুখে অবস্থান। (ঙ) পৃথিবীর কক্ষপথে কৌণিক অবস্থান। সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় পৃথিবী আপন মেরুরেখায় কক্ষপথের সঙ্গে ৬৬.৫° কোণে হেলে থাকে । পৃথিবী ৬৬.৫° কোণ করে চলার কারণে ২১এ মার্চ সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। এরপর ধীরে ধীরে সূর্যের কিরণ উত্তর গোলার্ধের দিকে যেতে থাকে। সূর্যকে পরিক্রমণ করতে করতে ২১এ জুন পৃথিবী এমন এক জায়গায় আসে যে তখন সূর্যের রশ্মি ভূপৃষ্ঠের ২৩.৫° উত্তর অক্ষাংশে অর্থাৎ কর্কটক্রান্তির উপর লম্বভাবে পড়ে (চিত্র ২.১৭)। এ সময় উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্য থেকে সবচেয়ে বেশি দূরে থাকে। সে কারণে এই সময় উত্তর গোলার্ধে দিনের দৈর্ঘ্য ও তাপমাত্রাও বেশি হয়ে থাকে। উত্তর গোলার্ধে 214 জুন দীর্ঘতম দিন ও ক্ষুদ্রতম রাত হয়। ২১এ জুন সূর্য উত্তরায়ণের শেষ সীমায় পৌঁছায়, একে কর্কটসংক্রান্তি বলে।
২৩০ সেপ্টেম্বর পুনরায় ২১এ মার্চের মতো সূর্য নিরক্ষরেখার উপর লম্বভাবে কিরণ দেয়। সেদিন সর্বত্র দিবারাত্রি সমান থাকে। ২৩এ সেপ্টেম্বর থেকে আবার সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে কিরণ বেশি দিতে থাকে। ২২৫ ডিসেম্বর এমনভাবে কোণ করে থাকে তাতে দক্ষি গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন এবং উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন হয়।
২২এ ডিসেম্বর সূর্য দক্ষিণায়নের শেষ সীমায় পৌঁছায়, একে মকরসংক্রান্তি বলে। এ সময় সূর্যের রশ্মি ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ অর্থাৎ মকরক্রান্তির উপর লম্বভাবে পতিত হয়।
২১৭ মার্চ এবং ২৩এ সেপ্টেম্বর নিরক্ষরেখার উপর সূর্য লম্বভাবে কিরণ দেয়। এই দুদিন পৃথিবীর সর্বত্র দিবারাত্রি সমান হয়। সেদিনকে বিষুব (Equinox) বলে। ২১এ মার্চ উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল তাই একে বাসন্ত বিষুব (Veral equinox) বলে। ২৩এ সেপ্টেম্বর উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল। তাই ঐ দিনকে শারদ বিষুব (Autumnal equinox) বলে।
আরও দেখুন...