ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে মাদকের পরিণতি (পাঠ ২)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য - স্বাস্থ্যবিজ্ঞান পরিচিতি ও স্বাস্থ্যসেবা | NCTB BOOK
657
Summary

মাদক গ্রহণের সমাজে ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিম্নরূপ:

  1. মানসিক স্বাস্থ্য: মাদকদ্রব্য শেখার ক্ষমতা হ্রাস করে, আবেগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করে এবং মানসিক পীড়ন বাড়ায়।
  2. পারিবারিক ও সমাজজীবন: মাদক সেবনকারীরা পরিবারের সদস্যদের সাথে অস্থির আচরণ করে, যা পারিবারিক শান্তি বিনষ্ট করে।
  3. শারীরিক সুস্থতা: মাদক সেবন শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে, মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ ধ্বংস করে ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে।
  4. রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি: কিছু মাদক HIV ও হেপাটাইটিস-বি সংক্রমণের শঙ্কা বৃদ্ধি করে।
  5. অর্বাচীন নির্ভরতা: মাদক গ্রহণ শারীরিক ও মানসিক নির্ভরতা সৃষ্টি করে, যা থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন।
  6. গম্ভীর রোগ: খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীর ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে।
  7. রক্তনালীর সমস্যা: তামাক শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা হার্ট এটাক ও ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
  8. অর্থনৈতিক ক্ষতি: মাদকীয় আচার-ব্যবহার পরিবারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং অর্থনৈতিক সংকট দেখা দেয়।

মাদকদ্রব্য ও ধূমপান থেকে নিজেদেরকে এবং অন্যদের বিরত রাখা প্রয়োজন, এবং এর কুফলসমূহ সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।

এবার মাদক গ্রহণে সমাজে যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে তা জেনে নাও।

১. মাদকদ্রব্য মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। যেমন- শেখার ও কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস করে, আবেগের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। চাপ সহ্য করার এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে ব্যাহত করে। তাছাড়া মানসিক পীড়ন বাড়িয়ে দেয়।
২. মাদকদ্রব্য পারিবারিক ও সমাজজীবনে নানারকম যন্ত্রণাদায়ক প্রভাব ফেলে। মাদকদ্রব্য সেবনকারী পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে উগ্র আচরণ করে। পরিবারের মানসিক শান্তি বিনষ্ট হয়।
৩. এগুলোর ব্যবহার শারীরিক সুস্থতার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে। মাদকদ্রব্য সেবন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষকে ধ্বংস করে, সূক্ষ্ম অনুভূতি কমিয়ে দেয় এবং খাদ্যাভ্যাস নষ্ট করে।
৪. কিছু কিছু মাদক এইচআইভি ও হেপাটাইটিস-বি এর সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।
৫. মাদক গ্রহণের ফলে এগুলোর ওপর সেবনকারীর শারীরিক ও মানসিক নির্ভরতা তৈরি হয়, যা থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া যায় না।
৬. মাদক গ্রহণ করলে যে সমস্ত জটিল রোগ হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীর ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস ও ব্লাড প্রেসার।
৭. তামাক ও তামাকজাতীয় মাদক শরীরের ভেতর প্রতিটি রক্তনালিতে প্রদাহের সৃষ্টি করে। এর ফলে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রক্ত চলাচল কমে যায়, কখনো রক্ত চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়, কখনো বা রক্তনালি ফেটে যায়। ফলে হার্ট এটাক ও ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে।
৮. এ ছাড়া যারা দীর্ঘসময় ধরে ধূমপান করে তাদের শ্বাসতন্ত্রের ক্ষতি হয়।
৯. মাদক ব্রুয়ে আর্থিক ক্ষতি হয়। নেশার টাকার জন্য পরিবারে চাপ সৃষ্টি করে, কখনো কখনো আক্রমণ করে, রাস্তা-ঘাটে ছিনতাই করে টাকা-পয়সা ও মালপত্র লুট করে। নেশাগ্রস্ত ব্যক্তির চিকিৎসার খরচ যোগাতে গিয়ে সংসারে অভাব দেখা দেয়। এসব ক্ষতিকর দিকগুলো পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে ফেলে। সেজন্য মাদকদ্রব্য ও ধূমপান থেকে শুধু নিজেকে বিরত রাখলেই চলবে না, বন্ধু-বান্ধব, সহপাঠীসহ আশপাশের লোকজনকে এ থেকে বিরত রাখতে হবে। এসবের কুফল সম্পর্কে সকলকে জানাতে হবে এবং এগুলো সেবন না করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

কাজ-১: মাদকদ্রব্য গ্রহণের চারটি কুফল লিখ

১.
২.
৩.
8.

কাজ-২: উপরোক্ত কুফলগুলোর মধ্যে যেটি সবচেয়ে মারাত্মক মনে হয়, সেটি প্রথমে, এর পর ক্রমান্বয়ে অন্যান্য কুফলের তালিকা তৈরি কর। শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে তালিকাগুলো বোর্ডে প্রদর্শন কর।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...