ব্যবস্থাপনা চক্ৰ

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা - ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্র | | NCTB BOOK

ব্যবস্থাপনা চক্র বলতে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার অধীন কার্যসমূহের চক্রাকারে আবর্তিত হওয়াকে বুঝায় । ব্যবস্থাপনা হলো কতিপয় কার্যের সমষ্টি। এরূপ কার্যাদি একটি ধারাবাহিক কর্মপ্রক্রিয়ার সৃষ্টি করে । প্রতিষ্ঠান যতদিন চলে ততদিন তা অবিরাম আবর্তিত হতে থাকে। ফলে এরূপ প্রক্রিয়ার সর্বশেষ কাজ আবার পরবর্তী প্রথম কাজের ভিত্তি হিসেবে গণ্য হয়। ব্যবস্থাপনার এরূপ ধারাবাহিক কর্মপ্রক্রিয়া ও অবিরাম আবর্তনকে ব্যবস্থাপনা চক্র নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে ।

ব্যবস্থাপনা একটি প্রক্রিয়া । ফলে তা ধারাবাহিক ও পরস্পর নির্ভরশীল কতিপয় কাজের সমষ্টি । পরিকল্পনা একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নেয়া হয় । এর আলোকে সংগঠন প্রতিষ্ঠা, কর্মীসংস্থান, নির্দেশ প্রদান, যোগাযোগ ও তত্ত্বাবধান, উৎসাহ প্রদান, বিভিন্ন ব্যক্তি ও বিভাগের কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন এবং কাজ বা সময় শেষে নিয়ন্ত্রণ বা সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে । নিয়ন্ত্রণ কাজের মধ্য দিয়ে যে নির্দেশনা বা সুপারিশমালা পাওয়া যায় তার আলোকে আবার নতুন পরিকল্পনা নেয়া হয় । এভাবে প্রতিষ্ঠান যতদিন চলে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া বা কার্যচক্রও ততদিন স্বাভাবিক নিয়মেই আবর্তিত হতে থাকে ।
নিম্নে চিত্রের সাহায্যে ব্যবস্থাপনা কার্যচক্র প্রদর্শিত হলো :

চিত্র : ব্যবস্থাপনা কার্যচক্র

বিষয়টিকে একটা উদাহরণের সাহায্যে তুলে ধরা যেতে পারে :

ধরা যাক, মি. খান তার শিল্প প্রতিষ্ঠানে নতুন একটা পণ্য তৈরির চিন্তা করছেন। এজন্য লক্ষ্য নির্ধারণপূর্বক করণীয় নির্ধারণ করা হলো । চিন্তার বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কী কী কাজ করতে হবে এবং প্রতিটা কাজ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা বিভাগের কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা কী হবে তা নির্ধারণ করলেন। প্রতিটা কাজের জন্য কোন কোন মানের জনশক্তির প্রয়োজন হবে তাও নির্ধারিত হলো । যন্ত্রপাতি, কাঁচামাল ইত্যাদি কী লাগবে তাও ঠিক করে প্রথমেই মি. খান প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিলেন। অতঃপর বস্তুগত উপকরণাদি জোগাড় করে দ্রুত উৎপাদনের কাজে মনোযোগী হলেন । জনশক্তিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেয়া, কাজ ঠিকমত হচ্ছে কি না তা দেখা ইত্যাদি. কাজে মি. খান ও ব্যবস্থাপকগণ ব্যস্ত সময় কাটালেন । নতুন কাজে সাফল্য আসলে জনশক্তিকে নানান সুযোগ- সুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হলো । নতুন কাজে উত্তম কর্মপরিবেশ ধরে রাখতে মি. খান খুবই যত্নবান । কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপকগণকে নিয়ে তিনি মাঝে-মধ্যেই বসেন । প্রত্যেকের কাজের অগ্রগতির খোঁজ-খবর নেন । সবাই যাতে একতালে চলে ও সম্মিলিত প্রয়াস জোরদার হয় এজন্য সবাইকে উপদেশ দেন । বছর শেষ- এখন হিসাব করার পালা । যে সকল পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল তার কতভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। দেখা গেল ৮০% বাস্তবায়িত হয়েছে । ২০% কেন বাস্তবায়িত হয়নি তার পর্যালোচনায় কতকগুলো সমস্যা চিহ্নিত হলো । এ সকল সমস্যা দূর করে কাজকে আরও সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্য নতুন পরিকল্পনা নিলেন মি. খান।

Content added By
Promotion