Summary
নীতিমালা বা Principles হলো সমবায় সংগঠনের পরিচালনার মূল ভিত্তি। সমবায় সংগঠন কিছু নীতি বা আদর্শ মেনে চলে, যেমন:
- একতা (Unity): সম্পূর্ণ সদস্য একত্রিত হলে সাফল্য অর্জন করা সম্ভব।
- সততা (Honesty): সদস্যদের মধ্যে সততা থাকলে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।
- স্বেচ্ছাকৃত মিলন (Voluntary Association): সদস্যদের স্বাধীনভাবে যোগ দেওয়া উচিত।
- সহযোগিতা (Co-operation): পারস্পরিক কল্যাণের জন্য সহযোগিতা অপরিহার্য।
- গণতন্ত্র (Democracy): সদস্যদের মধ্যে ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
- সমঝোতা (Understanding): পারস্পরিক বোঝাপড়া অপরিহার্য।
- সাম্য (Equality): সমজাতির সকল সদস্যের সমান মর্যাদা থাকা উচিত।
- সেবা (Service): সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করা হয়।
- নৈকট্য (Proximity): সদস্যদের মধ্যে নৈকট্য বজায় রাখতে হবে।
- সম-ভোটাধিকার (Equal right of votes): সকল সদস্যের ভোটাধিকার সমান।
- নিরপেক্ষতা (Secularism): ধর্ম ও রাজনীতির নিরপেক্ষতা বজায় রাখা হয়।
শেষে বলা যায়, সমবায়ে সফলতার জন্য উপরে উল্লিখিত নীতিগুলি মেনে চলা আবশ্যক।
নীতিমালা শব্দটির ইংরেজি শব্দ হলো Principles একে guidence for action বলা যায়। সমবায় সংগঠনও কিছু নীতি বা আদর্শ মেনে চলে। একটি ভিন্নধর্মী ব্যবসায় সংগঠন হিসেবে সমবায় সংগঠন সমাজের মধ্য ও নিবিত্ত, সম্পন্ন মানুষের নানান সীমাবদ্ধতা নিয়ে পারস্পারিক অর্থনৈতিক কল্যাণের লক্ষ্যে গঠিত ও পরিচালিত হয়। যেসব আদর্শ বা নীতিমালা মেনে সমবায় সমিতি পরিচালিত হয় সেগুলো নিম্নে বর্ণিত হল-
১। একতা (Unity): একতাই বল। সমাজের দরিদ্র ব্যক্তি একতাবদ্ধ হলে ধনীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে অনায়াসে দাঁড়াতে পারে। একতাই মূলত সমবায়ের সাফল্যের মূল স্তম্ভ।
২। সততা (Honesty): সমবায় সমিতিতে সততা একান্ত প্রয়োজন। প্রতিষ্ঠানে সততা বিরাজমান হলে সদস্যদের মনে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ ব্যবসায়িক সাফল্য লাভ করতে হলে সততা একান্ত অপরিহার্য।
৩। স্বেচ্ছাকৃত মিলন (Voluntary Association): সমবায় সমিতির সদস্যদের মধ্যে সর্বাধিক ব্যক্তি স্বাধীনতা দেয়া হয়। কোনো প্রকার হুমকি বা প্ররোচনা ছাড়া তারা সমবায়ের মাধ্যমে স্বেচ্ছায় মিলিত হতে পারে ।
৪। সহযোগিতা (Co-operation): সহযোগিতা সমবায়ের একটি অন্যতম নীতি। পারস্পরিক কল্যাণের লক্ষ্যে সমবায়ের সদস্যদের মধ্যে ‘দশে মিলে করি কাজ' অথবা ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে' এরূপ মনোভাব থাকা প্রয়োজন। কেননা একমাত্র সহযোগিতাই সাফল্য লাভের অন্যতম চাবিকাঠি।
৫। গণতন্ত্র (Democracy): সমবায় সমিতিতে সর্বদাই গণতান্ত্রিক রীতিনীতি অনুসৃত হয়। এ সমিতির ‘পরিচালক কমিটি’ সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। সিদ্ধান্তও ভোটের মাধ্যমে গৃহীত হয়। সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক সদস্য স্বাধীনভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে।
৬। সমঝোতা (Understanding): সমবায়ের উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য সমঝোতা অপরিহার্য। কারণ ত্যাগের মনোভাব ছাড়া সমবায় সমিতি টিকে থাকতে পারে না। আর এজন্য প্রয়োজন পারস্পরিক সমঝোতা ।
৭। সাম্য (Equality): সমবায় সমিতি সাম্যের আদর্শে অনুপ্রাণিত। এর সদস্যরা সামাজিক, অর্থনৈতিক বা পারিবারিকভাবে যাই হোক না কেন সমবায়ের সদস্য হিসেবে তারা সবাই সমান সামাজিক মর্যাদার অধিকারী। নিজেদের মধ্যে এধরনের সাম্য প্রতিষ্ঠা করা না গেলে সমবায় সাফল্য লাভ করতে পারে না ।
৮। সেবা (Service): সমবায়ের মূলকথা হলো ‘সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে' । একে অপরের সহযোগিতার ভিত্তিতে এ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই বলা যায়, প্রত্যেকের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকা আবশ্যক ।
৯। নৈকট্য (Proximity): সমবায় সমমনা ব্যক্তিবর্গের সংগঠন। তাই এর প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নৈকট্যের বিষয়টি বিবেচনা করতে হয় । সদস্যরা সমমনা না হলে প্রতিষ্ঠান চালাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হতে হয় ।
১০। সম-ভোটাধিকার (Equal right of votes): সম-ভোটাধিকার সমবায় সমিতির অন্যতম মূলনীতি । প্রতিষ্ঠানে যে যত বিনিয়োগ করুক না কেন সবার ভোটাধিকার সমান। এক্ষেত্রে সকলে একটি করে ভোট প্রদান করে কার্যকরী কমিটি নির্বাচন করে থাকেন ।
১১। নিরপেক্ষতা (Secularism): সমবায়ের ক্ষেত্রে ধর্ম ও রাজনৈতিক মতাদর্শের নিরপেক্ষতা বজায় থাকে। ফলে ধর্ম ও রাজনৈতিক মত নির্বিশেষে সকলেই এর সদস্য হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায় যে, সমবায়ে সফলতা অর্জন করতে হলে উক্ত মূলনীতি বা আদর্শসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করা উচিত। এর অধিকাংশই একে অন্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত কার্যক্ষেত্রে এর সবগুলো সমানভাবে অনুসরণ করতে হয়। যে সমবায় উক্ত আদর্শসমূহ যত বেশি অনুসরণ করতে পারে বাস্তবে তার পক্ষেই তত সফলতা অর্জন সম্ভব হয়।
# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন
Read more