Blockchain কী এবং এর প্রয়োজনীয়তা

Blockchain কী?

ব্লকচেইন একটি বিতরণকৃত লেজার প্রযুক্তি (Distributed Ledger Technology - DLT), যা একটি ডিজিটাল ডাটাবেস হিসেবে কাজ করে যেখানে একাধিক নোড বা কম্পিউটার একত্রে কাজ করে ডেটা রেকর্ড করে এবং তা সকলের কাছে স্বচ্ছভাবে প্রদর্শিত হয়। প্রতিটি ডেটা বা লেনদেন একটি ব্লক হিসেবে রেকর্ড হয়, এবং এই ব্লকগুলো একটির সাথে অন্যটি সংযুক্ত থাকে, যা একটি চেইন তৈরি করে। এই কারণেই একে ব্লকচেইন বলা হয়।

ব্লকচেইন প্রযুক্তির বিশেষত্ব হলো এটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক (Central Authority) ছাড়াই কাজ করতে সক্ষম। এটি একটি বিকেন্দ্রীকৃত (Decentralized) সিস্টেম, যেখানে ডেটা একক কোনো কেন্দ্রে সংরক্ষিত না হয়ে নেটওয়ার্কের সকল নোডে ছড়িয়ে পড়ে। এটি একটি নিরাপদ, অপরিবর্তনীয় এবং স্বচ্ছ ডেটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের উদাহরণ।

Blockchain-এর প্রয়োজনীয়তা

ব্লকচেইন প্রযুক্তির কিছু মৌলিক প্রয়োজনীয়তা এবং সুবিধা রয়েছে, যা নিচে আলোচনা করা হলো:

১. নিরাপত্তা বাড়ানো

ব্লকচেইন প্রযুক্তি ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে ডেটা সুরক্ষিত রাখে। প্রতিটি ব্লক একটি হ্যাশ ফাংশন দ্বারা এনক্রিপ্টেড থাকে, যা ব্লকগুলোর মধ্যে সংযোগ বজায় রাখে। ফলে, কোনো ডেটা পরিবর্তন করা বা হ্যাক করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।

২. বিকেন্দ্রীকরণ (Decentralization)

ব্লকচেইন একটি বিকেন্দ্রীভূত ব্যবস্থা, যা কোনো একক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। নেটওয়ার্কের সকল নোড সমানভাবে ডেটা অ্যাক্সেস এবং যাচাই করতে পারে। এটি কেন্দ্রভিত্তিক সিস্টেমের তুলনায় বেশি নির্ভরযোগ্য এবং স্বচ্ছ।

৩. স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা (Transparency and Trustworthiness)

ব্লকচেইনে সকল লেনদেনের রেকর্ড প্রকাশ্যে থাকে এবং নেটওয়ার্কের সকল অংশগ্রহণকারী এটি দেখতে পারে। এর ফলে, এটি একটি স্বচ্ছ সিস্টেম তৈরি করে যেখানে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করা হলেও পুরো সিস্টেমটি সবার কাছে উন্মুক্ত থাকে। এটি বিশেষ করে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক লেনদেনে বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।

৪. অপরিবর্তনীয়তা (Immutability)

ব্লকচেইনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো অপরিবর্তনীয়তা। একবার ডেটা ব্লকে রেকর্ড হয়ে গেলে তা পরিবর্তন বা মুছে ফেলা সম্ভব হয় না। প্রতিটি ব্লক পূর্ববর্তী ব্লকের সাথে সংযুক্ত থাকে, এবং কোনো একটি ব্লক পরিবর্তন করার চেষ্টা করলে পুরো চেইনের হ্যাশ পরিবর্তন হয়ে যায়, যা নেটওয়ার্কের সকল নোড শনাক্ত করতে পারে। এটি তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে সহায়ক।

৫. কেন্দ্রীয় মধ্যস্থতাকারী ছাড়া লেনদেন (Peer-to-Peer Transactions)

ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে লেনদেন করার জন্য কোনো মধ্যস্থতাকারী বা তৃতীয় পক্ষের প্রয়োজন হয় না। এটি পিয়ার-টু-পিয়ার (P2P) ভিত্তিতে কাজ করে, যার ফলে লেনদেন দ্রুত এবং সাশ্রয়ী হয়। উদাহরণস্বরূপ, বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করার সময় ব্যাংকের মতো মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন হয় না।

৬. অর্থনৈতিক খরচ কমানো (Cost Efficiency)

ব্লকচেইন ব্যবস্থায় মধ্যস্থতাকারীর প্রয়োজন না থাকায় লেনদেনের খরচ কম হয়। এছাড়া, এটি একটি স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া হওয়ায় এবং মানুষী ত্রুটি কম থাকায় অতিরিক্ত খরচ কমে যায়।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion