জনাব রবিউল ইসলাম একজন স্বনামধন্য ডাক্তার। তিনি সপ্তাহের বিশেষ একটি দিনে নিজ এলাকায় গিয়ে বিনা ফি'তে রোগী দেখেন এবং ওষুধ সরবরাহ করেন। তিনি শহরেও নিজস্ব চেম্বারে রোগীদের সেবা প্রদান করেন। তিনি বর্তমানে তাঁর উপার্জিত আয় দ্বারা নিজ গ্রামে একটি দাতব্য চিকিৎসালয় খোলার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এটি দরিদ্র গ্রামবাসীদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ ভূমিকা রাখবে এবং নতুন ধরনের ব্যবসায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে।
জনাব ইকবাল সিলেটে থাকেন। তিনি শ্রমিকের সহজলভ্যতার কারণে পঞ্চগড়ে জমি কিনে ৫টি চা বাগান প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় পদ্ধতি ও পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে তার চা-এর মান তত ভালো হয় না। এতে মুনাফাও কম হয়। তার এক বন্ধুর পরামর্শে তিনি আধুনিক মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে চা-এর গুণগত মান বৃদ্ধি করেন। বর্তমানে তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের মাধ্যমে প্রচুর বৈদিশিক মুদ্রার্জন করছেন।
জনাব মানিক তার ২০ জন বন্ধুকে সাথে নিয়ে সমঝোতার ভিত্তিতে 'রাজশাহী ট্রেডার্স' নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান চালু করেন। প্রতিষ্ঠানটি চালুর কিছুদিন পরই তাদের মধ্যে দায়িত্ব পালন, মুনাফা বণ্টন ও হিসাব সংরক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১০ জন সদস্য ব্যবসায় ছেড়ে চলে যায়। মানিক অবশিষ্ট বন্ধুদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে নতুন ব্যবসায় গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন ব্যবসায়টির নিবন্ধনপত্র সংগ্রহ করেই তারা কার্যক্রম শুরু করে দেয়।
দোলন অর্থনীতি বিষয়ে পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র। দোলনের ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শেষ করে পিতার ন্যায় আসবাবপত্রের ব্যবসায় করবেন। বন্ধু আতিকের নিকট থেকে কিছু অর্থ ধার নিয়ে নিজ দায়িত্বে তিনি গঞ্জে আসবাবপত্রের দোকান দেন। পরবর্তীতে আতিক তার অর্থ ফেরত চায়। তাই তিনি সমঝোতার ভিত্তিতে মুনাফা প্রদানের শর্তে আতিকের নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করেন। আতিক ব্যবসায় পরিচালনার কিছু সময় দেয়ায় তাদের ব্যবসায়টি এখন ভালো চলছে।
হাফিজ পেশায় একজন রিক্সা চালক। সে এলাকার ২০ জন রিক্সা চালককে একত্রিত করে নিজেদের অর্থনৈতিক কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। এখানে তারা প্রতি সপ্তাহে ২০০ টাকা করে সঞ্চয় হিসেবে জমা দেয়। জমাকৃত টাকা তারা বিনিয়োগ করে। নিজেরাও সেখান থেকে প্রয়োজনে ঋণ নেয়। ২০২১ সালে তারা ৬০,০০০ টাকা মুনাফা করে এবং ৪৫,০০০ টাকা লভ্যাংশ হিসেবে বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেয় ৷
সাইফুল সাহেবের নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান "মিলেনিয়াম ফার্নিচার লিমিটেড।” ১৫ বছর আগে তিনি একাই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেছিলেন। পরে আরও ৬ জন ব্যক্তির সমন্বয়ে আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রতিষ্ঠানটিকে কোম্পানিতে রূপান্তর করেন। জনগণের নিকট শেয়ার বিক্রি করে সংগৃহীত মূলধনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম অনেক বিস্তৃত হয়েছে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে সাইফুল সাহেব ছাড়া বাকি সবাই শেয়ার বিক্রি করে চলে গেছেন।
জনাব মতিন একজন সবজি ব্যবসায়ী তিনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যে মৌসুমে যে সবজি উৎপাদিত হয় তা সংগ্রহ করেন এবং সিলেটের বিভিন্ন বাজারে বিক্রয় করেন। এতে বেশ মুনাফা হয়। কিন্তু একবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে তার সংগ্রহকৃত সবজির অধিকাংশই পচে যায়। তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং কীভাবে এ ধরনের বিপর্যয় এড়ানো যায় তা নিয়ে ভাবনা শুরু করেন।
সোহেল এমবিএ পাশ করার পর তার পাঁচ বন্ধুকে নিয়ে 'রাজশাহী টেক্সটাইল' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। প্রথম অবস্থায় প্রতিষ্ঠানটির মোট মূলধনের পরিমাণ ছিল ১০ কোটি টাকা। তাদের সঠিক পরিচালনার ফলে প্রতিষ্ঠানটি দ্রুতই সফলতা লাভ করে। সোহেল ও তার বন্ধুরা প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত নেয়। তারা নিজেরা প্রতিষ্ঠানে আর অর্থ দিতে পারবেন না এবং সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চান না। এমতাবস্থায় তাদের মূলধনের প্রয়োজন ।
জনাব রায়হান, রিহান ও রিয়াদ মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে একটি অংশীদারি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। তিনজনের মূলধনের পরিমাণ সমান। তারা সমান হারে মুনাফা ভোগ করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জনাব রিয়াদ শুধু মূলধনের সমপরিমাণ দায় বহন করে। সম্প্রতি জনাব রাব্বানী নামে একজন দেনাদার প্রতিষ্ঠানের দুই লক্ষ টাকা পরিশোধে গড়িমসি করছে। এজন্য অংশীদারগণ পাওনা আদায়ে আদালতের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছে।
জনাব রুহুল আমিন একজন তৈরি পোশাক বিক্রেতা। তিনি স্বল্প পুঁজির কারণে ব্যবসায়ে সাফল্য লাভ করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে তিনি করিমকে অংশীদার হিসেবে ব্যবসায়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। করিম ব্যবসায়ে শুধুমাত্র মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের শর্তে অংশীদার হতে সম্মত হন। শর্ত মোতাবেক করিম মূলধন বিনিয়োগ করেন তবে ব্যবসায়ের পরিচালনায় তিনি অংশগ্রহণ করেন না। ব্যবসায় কিছুদিন চলার পর জনাব রুহুল আমিন দেউলিয়া হয়ে পড়েন।