রুনু সুন্দরী ও উচ্চ শিক্ষিতা। পরিবারের চাপে সে নিম্নমধ্যবিত্ত, চাকরিরত মেহরাবের সঙ্গে দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়েতে সম্মত হয়। বিয়ের আব্দ সম্পন্ন হওয়ার পর মেহরাবের চাচা দুলু আকস্মাৎ বললেন, "পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক না পেলে আমরা সহসা পাত্রীকে ঘরে তুলে নেব না।" বিয়ের আসরে যৌতুকের বিষয়টি জানার পর রুনু তার হবু স্বামী মেহরাবকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করতে রাজি হয় না। রুনুর দৃঢ়তায় বিয়েটি ভেঙে যায়। সমাজের চোখে মেহরাব একাধারে ব্যক্তিত্বহীন ও যৌতুকপ্রথার সমর্থক হিসেবে বিবেচিত হয়।
নবম শ্রেণির ছাত্রী রাশিদাকে মাত্র ১৪ বছর বয়সে দরিদ্র বাবা-মা বিয়ে দেয় নিরক্ষর শফিকের সঙ্গে। দেড় বছরের মাথায় রাশিদার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক ছেলে। অকর্মণ্য স্বামী স্ত্রী সন্তানের প্রতি কর্তব্য পালন তো করতোই না, উপরন্তু রাশিদার উপর অকথ্য নির্যাতন চালাতো। জীবনের এই দুর্যোগ মুহূর্তে রাশিদা নিষ্ক্রিয় না থেকে আত্মপ্রত্যয়ের সাথে সেলাইয়ের কাজ শেখে। এরপর সে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প থেকে ঋণ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন কিনে ঘরে বসে কাজ শুরু করে। একনিষ্ঠতা, আন্তরিকতা ও দক্ষতার ক্রমোন্নতিতে রাশিদার কাজের মান ও চাহিদা বাড়তে থাকে এবং বড়ো বড়ো কোম্পানি থেকে তার কাছে অর্ডার আসতে থাকে। অসহায় ও দুঃস্থ প্রায় পঁচিশ জন মহিলাকে সে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজে লাগিয়ে দেয়। অদম্য মানসিকতা ও প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তির জন্য রাশিদা এখন স্বনির্ভর একজন নারী।
সোলেমান মাছ চুরির অপরাধে নিজ গ্রাম শিপপুর থেকে তাড়া খেয়ে কালুপুর গ্রামের লিয়াকত মাস্টারের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করে। লিয়াকত মাস্টার মানবদরদি। সোলেমানের চরিত্র শোধরানোর আশায় লিয়াকত মাস্টার নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেন। ছয় মাস যেতে না যেতেই গভীর রাতে লিয়াকত মাস্টারের মোটর সাইকেল চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক সোলেমানকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। এরপরও লিয়াকত মাস্টার থানায় গিয়ে সোলেমানকে ছাড়িয়ে এনে নিজ জায়গায় নিজ খরচে সোলেমানের বসবাসের জন্য একটা ঘর তৈরি করে দেন।