কামালের বাবা একজন সুনাগরিক। তিনি তার আদর্শে সন্তানকে গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে দু'টি বিষয় অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। প্রথম বিষয়টি সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার পাশাপাশি রাষ্ট্র, সরকার, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। আর দ্বিতীয় বিষয়টি রাষ্ট্রের অতীত ঘটনাবলির আলোকে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে সহায়তা করবে।
মিঃ "M" একজন প্রবীণ সংবাদকর্মী। তিনি একদিন একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রবন্ধ পাঠ করছিলেন। প্রবন্ধটিতে দেখা যায় 'ক' নামক রাষ্ট্রের রাজনীতিতে কিছু উন্নয়ন হলেও দেশটি আইনের শাসন, রাজনৈতিক স্থিতিহীনতা, স্বজনপ্রীতি, যথাযথ শিক্ষার অভাব ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। অন্যদিকে 'খ' নামক রাষ্ট্রে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি আইনের শাসন বিদ্যমান।
"X" রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমসমূহ অনলাইনের মাধ্যমে সম্পাদিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভর্তি ও ফরম পূরণ, ঢাকরির আবেদন, টেন্ডার, গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির বিল, কর পরিশোধসহ সকল প্রকার লেনদেন হয়ে আসছে। জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন, অফিস-আদালতসহ প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া সম্প্রসারিত হয়েছে। জনগণ ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো তথ্যের আদান-প্রদান করতে পারে।
শিবলী দীর্ঘদিন 'ক' রাষ্ট্রে কর্মরত। ছুটিতে আসার সময় সে তার মালিককে নিয়ে দেশে বেড়াতে আসে। ইতোমধ্যে দেশে জাতীয় নির্বাচনের দিন ধার্য হয়। শিবলী ও তার স্ত্রী যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেয়। এছাড়া শিবলী কর অফিসে গিয়ে করও প্রদান করে। নির্বাচনে লাইনে দাঁড়িয়ে নারী- পুরুষ সমানভাবে ভোট দিতে দেখে তার মালিক খুব আশ্চর্য হয়। তাদের দেশে নারীদের 'ভোটাধিকার সীমিত। কর্মক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে ।
'ক' ও 'খ' দুটি সংগঠনের সদস্য। 'ক'-এর সংগঠনটি দেশের সমস্যাসমূহ চিহ্নিতপূর্বক তা সমাধানের লক্ষে কিছু সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি বিভিন্ন উপায়ে জনসম্মুখে তুলে ধরে। জনসমর্থন নিয়ে তার সংগঠন ক্ষমতায় গিয়ে জনসেবা করতে চায়। অপরদিকে 'খ'-এর সংগঠন গোষ্ঠীস্বার্থকে প্রাধান্য দেয় এবং তা আদায়ের লক্ষ্যে সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে।
মিনা ও রিনা দুই বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে। মিনার বাবা জনগণের ভোটে নির্বাচিত একজন প্রতিনিধি আর রিনার বাবা সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। মিনা ও রিনা তাদের বাবার কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করছিল। মিনা বলল তার বাবা সরকারি আইন প্রণয়নে অংশগ্রহণ করে। রিনা বলল তার বাবা সরকারি নীতি ও আইন প্রণয়নে সহযোগিতা এবং বিচার বিভাগীয় সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের ভূমিকা রাখেন। তারা দুজনে একমত হন যে, সরকারের মেয়াদ শেষ হলে মিনার বাবার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় কিন্তু রিনার বাবার দায়িত্ব শেষ হয় না।
জনাব 'ক' একটি সংগঠনের সদস্য। যার কর্মকাণ্ড সারা দেশে বিস্তৃত। উক্ত সংগঠন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, জাতীয় সমস্যা বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরার পাশাপাশি সমাধানের জন্য কর্মসূচি প্রণয়ন করে। ৮ অন্যদিকে ‘ক' এর বন্ধু অন্য একটি সংগঠনের সদস্য। সংগঠনটি মুনাফা লাভের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমকে ব্যবহারে সচেষ্ট থাকে ।
দক্ষিণ সুদান, সুদানের একটি অংশ ছিল। দক্ষিণ সুদানের জনগণ অধিকাংশই খ্রিস্টান। আর উত্তর সুদানসহ সমগ্র সুদানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। দক্ষিণ সুদানের জনগণ আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দাবি করে। অনেক সংঘাত ও দ্বন্দ্ব শেষে জাতিসংঘের উদ্যোগে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। জনগণ আলাদা রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে মত দিলে সুদান সরকার তা মেনে নেয়। দক্ষিণ সুদান আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে।