চন্দ্রপুর গ্রামে সেদিন ভীষণ যুদ্ধ হচ্ছিল। দুপক্ষে প্রচণ্ড গোলাগুলি চলছে। পাকবাহিনী সেদিন ছিল সুবিধাজনক অবস্থায়। ফলে বাংকারে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের পিছু হটা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু কেউ একজন ব্যাকআপ না দিলে অন্যদের পক্ষে নিরাপদে সরে যাওয়া সম্ভব ছিল না। তখন নির্ভয়ে এগিয়ে এলো সবার ছোট কিশোর যুক্তিযোদ্ধা আবু সালেক। তার ছোট্ট কাঁধে তুলে নিল বিশাল এক দায়িত্ব। ক্রমাগত গুলি করতে লাগল পাকবাহিনীর ক্যাম্প লক্ষ্য করে। আর সেই অবসরে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেল অন্য মুক্তিযোদ্ধারা।
দরিদ্রতার কারণে কুসুমের বাবা মেয়ের পড়ালেখার খরচ আর চালাতে পারছেন না। তাই তিনি কারো মতামত না নিয়েই পাশের গ্রামের বয়স্ক ও বিপত্নীক রজব মিয়ার সাথে তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ের বিয়ে ঠিক করে আসেন। পড়ালেখায় আগ্রহী কুসুম এমন বিয়েতে প্রবল আপত্তি জানালেও কেউ তার ইচ্ছার গুরুত্ব দেয় না। কুসুমের স্কুল-শিক্ষক সব ঘটনা জানতে পেরে বিয়ের দিন ৯৯৯-এ কল করে প্রশাসনের সহায়তায় কুসুমের বাল্যবিয়ে ঠেকাতে সক্ষম হন। সেই সাথে তিনি কুসুমের পড়ালেখার যাবতীয় খরচ নিজে বহন করার আশ্বাস দেন ।
প্রতিবছর বন্যায় বাঁধ ভেঙ্গে গ্রাম প্লাবিত হয়। রক্ত পানি করা সোনার ফসল, মানুষ, গরু সব বন্যায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়। দৈববিশ্বাসের ওপর ভর করে গ্রামের মাতব্বর রহিম সর্দার এবার বাঁধ রক্ষার জন্য চাষিদেরকে একজন নামকরা পীরের শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দেন। পক্ষান্তরে গ্রামের শিক্ষিত যুবক মতি মাস্টার একদল লোক নিয়ে প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি সহ্য করে। রাতের মধ্যেই মাটি কেটে বাঁধ মজবুত করে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পায় গ্রামের মানুষের কষ্টের সোনার ফসল।