ঘটনা-১: সাবিনা বানু 'ক' জুয়েলারির নিকট থেকে একটি গহনা তৈরি করেন। গহনায় ২২ ক্যারেট মানের সোনা দেয়ার চুক্তিতে তিনি গহনাটি কিনেন এবং স্বর্ণকারকে যথারীতি মূল্য পরিশোধ করেন। কিছুদিন পর গহনাটি সংস্কার করার জন্য 'খ' জুয়েলারি দোকানে নিয়ে যান। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তিনি জানতে পারেন যে, গহনাটি ১৮ ক্যারেট মানের সোনা দিয়ে তৈরি। সাবিনা বানু বুঝতে পারলেন, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ঘটনা-২: মকসেদ সাহেব ভীষণ অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য তিনি ডাক্তারের কাছে যান। ভক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাকে নির্দিষ্ট নিয়ম ও মাত্রায় কিছু ওষুধ সেবন করতে দেন। মকসেদ সাহেব ডাক্তারের পরামর্শ না মেনে নিজের খেয়াল-খুশিমতো ওষুধ সেবন করেন। এতে তার অসুখের মাত্রা আরও বেড়ে যায় এবং তিনি মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পতিত হন।
খালেদ, রফিক ও যায়েদ ঢাকা থেকে কক্সবাজার সফরে যায়। সেখানে খালেদের মানিব্যাগ চুরি হবে। যায়। তখন সে বিপদে পড়ে যায়। থাকা খাওয়া ও বাড়ি ফেরার খরচ মেটানোর জন্য সে রফিকের কাছে ৫,০০০ টাকা ধার চায়। রফিক বলে, তোমার মোবাইল বন্ধক রেখে টাকা নিতে পার। এমতাবস্থায় খালেদ যায়েদকে একান্তে ডেকে তার কাছে টাকা ধার চায়। সরল বিশ্বাসে যায়েদ তৎক্ষণাৎ তার পকেট থেকে খালেদকে ৫,০০০ টাকা ধার দেয়। বাড়ি ফিরে এসে টাকা ফেরত চাইলে খালেদ বিষয়টি অস্বীকার করে।
রাজেন্দনগর গ্রামের খাদেম মণ্ডল যাদু-টোনা, বান ইত্যাদি করে থাকে। একদা এলাকার মসজিদের খতিব সাহেব জুমআর খুতবায় যাদু-টোনা করা, বান মারা বিষয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এ ধরনের কর্মকে হারাম ফতোয়া দেন। এতে গ্রামের মানুষ খাদেম মণ্ডলকে ভৎসনা করতে লাগে। তখন খাদেম মণ্ডল বলে, “সুলাইমান নবি তো যাদু করতেন, হারুত মারুত ফেরেশতারা ও যাদুর তালিম দিতেন।"
শহরপুর এলাকায় সালামত সাহেব একজন মানাবর ব্যক্তি। এ এলাকায় একসময় ঝগড়া- ফাসাদ, মামলা-মকদ্দমা লেগেই থাকতো। সালামত সাহেবের সংস্পর্শে এসে সবাই এখন ভাই ভাই হয়ে মিলেমিশে বসবাস করছে। এলাকার দু'পাড়ার লোকেরা এক জায়গায় বসে একদিন নিজ নিজ গ্রামের নানা কীর্তির কথা বলাবলি করছিল। এ নিয়ে এক পর্যায়ে উভয় পাড়ার লোকনের মধ্যে পূর্বেকার হিংসা-বিদ্বেষ আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এ সংবাদ পেয়ে সালামত সাহেব ঘটনাস্থলে ছুটে এসে উভয়ের মাঝে মিলমিশ করে দেন। পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাস করতেন সালেহা নামে একজন মহীয়সী নারী। বিবাহোত্তর সন্তান সম্ভবা হলে তিনি মানত করলেন, তার গর্ভস্থিত সন্তানকে তিনি মাদরাসায় পড়াবেন এবং তাকে দীনের খেদমতে উৎসর্গ করবেন। সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে দেখা গেল এক কন্যা সন্তানের জন্য হয়েছে। সালেহা ভাবনায়। পড়ে গেলেন, তিনি তার মানত কীভাবে পূর্ণ করবেন। তখন তাকে বলা হল, এখন মেয়েদের অনেকেই মাদরাসায় পড়ছে এবং ইসলামের নানামুখী খেদমত করছে। কখনো কখনো ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা আরও বেশি ভাল করছে।
করিমপুর গ্রামের মসজিদের খতিব সাহেব কোনো এক জুমাপূর্ব আলোচনায় বলেন, ঈসা (আ.) ছিলেন আল্লাহ তায়ালার কুদরতের অন্যতম নিদর্শন। আল্লাহ তাকে পিতার সংস্পর্শ ছাড়া শুধু মাতার মাধ্যমে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন। কাফেরদের ষড়যন্ত্র থেকে বাঁচিয়ে আল্লাহ তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নিয়েছেন। একথা শুনে এক মুসল্লি দাঁড়িয়ে বলল, এমন আজগুবি কথা না বলাই ভাল। এমতাবস্থায় খতিব সাহেব চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমি আমার পরিবার-পরিজনসহ মাঠে গিয়ে কসম করে আমার কথা বলতে পারব।
খায়রুল তার এলাকার দশজন যুবককে নিয়ে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি সমাজসেবা সংঘ কারেম করে। সংঘের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে খায়রুলকে তাদের নেতা নির্বাচন করে। নেতা হওয়ার পরই খায়রুল সংঘের বিভিন্ন কাজে একাই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ চালিয়ে যায়। একদা বার্ষিক সভায় মামুন নামের এক সদস্য খায়রুলের স্বেচ্ছাচারিতার সমালোচনা করে। তখন খায়রুল তাকে গালমন্দসহ অনেক শক্ত কথা বলে। এ আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে মামুন বলে, একজন নেতার আচরণ এমন হওয়া কাম্য নয়। অতঃপর সে তার সমর্থকদের নিয়ে সংঘ ছেড়ে চলে যায়।
একদা ইসলামের নানা দিক নিয়ে আশরাফ ও আতাউর এর মধ্যে আলোচনা হয়। আলোচনায় নারী নির্যাতন ও তাদের প্রতি সহিংসতার নানা দিক উঠে আসে। আশরাফ বলে, এটা বন্ধের উপায় হল, নবি মুহাম্মদ (সা.) এর দেখানো প্রক্রিয়ার যথার্থ অনুসরণ। আলোচনার এক পর্যায়ে অন্য এক প্রসঙ্গে আতাউর বলে, বিজ্ঞানের এ যুগে সবক্ষেত্রে ইসলাম টেনে আনা উচিত নয়। কারণ ইসলামের আগমন দেড় হাজার বছর আগে। যুগ- যমানা বদলে গেছে। বদলে গেছে আরও অনেক কিছু। সুতরাং বর্তমানে সামগ্রিক জীবনের পরিপূর্ণতার জন্য ইসলামের পাশাপাশি আরও অনেক কিছুর সংযোজন-বিয়োজন আবশ্যক।
খাজুরা গ্রাম নিবাসী রতন মোল্লা একজন বিত্তশালী মানুষ। বিপদাপদে গ্রামের অসহায় মানুষকে তিনি টাকা দিয়ে থাকেন। এর সাথে তিনি ১০% অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন। বিষয়টি অবগত হয়ে এলাকার ইমাম সাহেব রতন মোল্লার বাড়িতে যান। তিনি রতন মোল্লাকে বলেন, এটি সুদি কারবার। রতন মোল্লা বলে, আমি ঋণ ব্যবসা করি। আর ইসলামে ব্যবসা জায়েজ। ইমাম সাহেব বললেন, "সুদ ও ব্যবসার মাঝে পার্থক্য আছে।”
মাওলানা আব্দুল আলিম একদা মসজিদে কুরআন তেলাওয়াতের গুরুত্বের উপর বয়ান করেন। তার বয়ান শুনে আকরাম ও আরমান মুগ্ধ হয় এবং কুরআন পড়তে মনস্থ করে। মাওলানা সাহের একদিন লক্ষ করলেন, মসজিদে বসে দুই ভাই কুরআন তেলাওয়াত করছে। কাছে গিয়ে দেখলেন, আকরাম তাজভিদ সহকারে তাড়াতাড়ি কুরআন তিলাওয়াত করছে। আর আরমান তাজভিদের কোনো নিয়ম-কানুন না মেনেই কুরআন পড়ে যাচ্ছে।