বাবার জন্য খাবার সাজিয়ে মা বাক্প্রতিবন্ধী মিনাকে হালচাষরত বাবার কাছে পাঠায়। যেতে যেতে সে নানা ধরনের পাখি দেখে মিটমিট করে হাসে। মিনাকে দেখে কয়েকটি পাখি নির্ভয়ে মিনার কাছে আসে। বাবার কাছে খাবার পৌঁছে দিয়ে গরু দুটির গায়ে হাত বুলোতে থাকে সে। এক পর্যায়ে মাঠের কাজে বাবাকে সাহায্য করতে লাগলো। এসব দেখে পাশের ক্ষেতের মাহফুজ বললো, এভাবে মেয়েটার ভবিষ্যৎ নষ্ট করো না। ওকে শহরের বোবাদের স্কুলে ভর্তি করে দাও, দেখবে একসময় সে শিক্ষিত ও স্বাবলম্বী হবে।
শহরের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তরুণ একজন শিল্পীকে প্রথমেই গান করতে অনুরোধ করা হয়। তরুণ শিল্পীটি চমৎকার কন্ঠে একটি ভাটিয়ালি গান পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের সমন্বয়কারী শিল্পীকে উদ্দেশ্য করে বললো, শহরের জমকালো অনুষ্ঠানে আঞ্চলিক গান কেন? দয়া করে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে গান করুন। সমন্বয়কারীর এমন কথা শোনার সাথে সাথে উপস্থিত শ্রোতারা সমস্বরে চিৎকার করে বলতে লাগলো, আমরা উনার গানই শুনবো। আপনার পছন্দ না হলে আপনি দয়া করে উনার গান শেষ হলে আসুন। শ্রোতাদের অনুরোধে তরুণ শিল্পীটি একের পর এক গ্রাম-বাংলার জনপ্রিয় গান পরিবেশন করেন।
স্তবক-১ : হে রাসুল (স.) তুমি দেখালে আলোর পথ
জগৎবাসী পেল শান্তির মত
হে রাসুল (স.) তোমার আলোয় বিশ্বজাহান ভাসে
হে রাসুল তোমার ডাকেই ঐক্য-শান্তি আসে।
স্তবক-২ : হে রাসুল (স.) কোরআনের বাণী আসলো তোমার কাছে
মক্কার কিছু মন্দ লোক লাগলো তোমার পাছে
নির্ভিক তুমি আনলে অমিয়ধারা
তোমায় নিয়ে বিশ্ববাসী হলো মাতোয়ারা।
স্কুল ছুটির পর রাস্তায় দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে শিক্ষার্থীরা আহত যাত্রীদের উদ্ধারে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তালহা ও তার বন্ধুরা যখন আহত রোগীদের রিক্শা করে হাসপাতালে পাঠাচ্ছিল, তখন কিছু দুষ্ট ছেলে আহত যাত্রীদের মোবাইল ফোন, টাকা- পয়সা ও ব্র্যাগ হাতিয়ে নেয়। এ সময় তালহা ও তার বন্ধুরা দুষ্ট ছেলেদের বাধা দিয়ে বলে পড়াশোনা শিখে তোমরা এমন কাজ করতে পার না। দুষ্ট ছেলেরা জবাবে বলে, এমন সুযোগ খুব কমই পাওয়া যায়। তখন তালহা ও তার বন্ধুরা তাদের আটক করে সমস্ত টাকা-পয়সা ও মালামাল উদ্ধার করে আহতদের স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেয়।
বাড়িতে কাজের জন্য মা ময়না নামের একটি মেয়েকে নিয়ে আসেন। মেয়েটি বাড়িতে এসেই সবাইকে আপন করে নেয়। বাড়ির মানিক, সাগর, রেহানাকে সে পড়া বলে দিলে তারা বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করে তুমি পড়তে পারো ময়না আপা! ময়না সংক্ষেপে উত্তর দেয়, পারিইতো। তখন তারা বলে, তুমি আসলে অনেক ভালো। তাদের কথা শুনে প্রাইভেট টিউটর মাহমুদা বললো, “তোমাকে পড়াতে হবে না ময়না। আর তুমি ওদের সাথে খুব বেশি কথাও বলবে না।” প্রাইভেট টিচারের কথা শুনে ময়না মাথা নিচু করে চলে যায় এবং নিজের কাজে মনোযোগ দেয়।
গভীর রাতে পাকবাহিনীর সদস্যরা রাশেদ সাহেবকে ধরে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে পার্শ্ববর্তী ডোবায় তার লাশ দেখে এলাকাবাসী আতংকিত হয়ে পড়ে। সবাই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে যার যার স্বজনদের কাছে ছুটে যায়। কিশোর মাসুম তার দাদি এবং পরিবারের সদস্যদের শোকাহত দেখে এলাকার কিশোর যুবকদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। জীবন বাজি রেখে চালিয়ে যায় স্বাধীনতার লড়াই। মাসুমদের অপ্রতিরোধ্য লড়াইয়ে একসময় বাংলার আকাশে উত্তোলিত হয় স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা।
আনিস সাহেব তার সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করাবেন। পারিবারিক আলোচনায় ভর্তির বিষয়টি তুলতেই আনিস সাহেবের ছোট ভাই বাছেদ বলে, “ভাইপোকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে চাকুরি ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রে ইংরেজির গুরুত্ব বেশি। তাই তার ইংরেজি ভাষা ভালোভাবে জানা প্রয়োজন।” আনিস সাহেব শেষে বললেন, “জানোতো আগে মাতৃভাষার গাঁথুনি, তারপর বিদেশি ভাষার পত্তন। আমি চাই আমার সন্তান মাতৃভাষা ভালোভাবে জানুক। প্রয়োজনে সে অন্য ভাষাও শিখে নিতে পারবে। তাই তাকে বাংলা মাধ্যম স্কুলে ভর্তি করাতে চাই।”