কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে দেশে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের অভাব দেখা দিলে জনাব 'ক' ভেজাল কেমিক্যাল মিশিয়ে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রস্তুত করে দেশে বাজারজাত করে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে তার প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে নকল মালামাল জব্দ করে এবং ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় তার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জনাব ‘খ’ জনৈক কর্মকর্তাকে গোপনে কিছু টাকা প্রদানের প্রস্তাব করে জরিমানা মওকুফের চেষ্টা করে।
জনাব আদনান মেয়র নির্বাচিত হয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। একদিন তিনি জানতে পারেন, তাঁর বড় ছেলে আফনান এলাকার বখাটে ছেলেদের সাথে মিশে মদ পান করছে। সাথে সাথে তিনি নিজের ছেলেকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনেন। অন্যদিকে তাঁর ছোট ছেলে আতিক এ বছর কৃতিত্বের সাথে এইচ এস সি পাস করলে তার বাবা তাকে ভবিষ্যতে কী হতে চায় জিজ্ঞেস করলে উত্তরে সে বলে, “আমি মধ্যযুগে বিজ্ঞানের সকল শাখায় বিচরণকারী বিখ্যাত চিকিৎসকের মতো চিকিৎসক হতে চাই। যাকে শল্য চিকিৎসার দিশারি বলে বিবেচনা করা হয়।”
নওশাদ একজন তরুণ সমাজ বেসক। তিনি একদা তাঁর এলাকায় একটি পাঠাগার স্থাপনকে কেন্দ্র করে দু' পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার উপক্রম হলে তিনি অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান দিয়ে অনিবার্য সংঘর্ষ থেকে গ্রামবাসীকে রক্ষা করেন। সমাজ সেবায় এরূপ ভূমিকা রাখায় এলাকাবাসী তাঁকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। উদ্বোধনী ভাষণে তিনি জনগণকে রাসুল (সঃ) এর একটি ঐতিহাসিক ভাষণের মর্মবাণী ধারণ করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এ ভাষণে রয়েছে বিশ্বমানবতার সার্বিক দিক নির্দেশনা।
আমিনা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে কথা বার্তায়, চাল-চলনে ও পোশাক-পরিচ্ছদে অত্যন্ত ভদ্র, নম্র ও সভ্য। তার আচরণে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই মুগ্ধ। সবাই তাকে পছন্দ করে এবং ভালোবাসে। এতে তার বান্ধবী রোমানা খুবই অসন্তুষ্ট ও বিরক্ত। তাই আমিনার অনুপস্থিতিতে সে প্রায় সময় অন্য বান্ধবীদের নিকট তার শারীরিক গঠন, পোশাক ও পরিবারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের শ্রেণি শিক্ষক বললেন, “রোমানা তুমি এমনটি করো না। একটি ব্যভিচারের চাইতেও মারাত্মক" ।
জনাব রাফি একজন বিত্তশালী ব্যক্তি। তিনি তার বাসার দারোয়ান, গাড়ীর ড্রাইভার ও গৃহকর্মীর সাথে প্রায়ই খারাপ ব্যবহার করেন। তাদের পারিশ্রমিক যথাসময়ে পরিশোধ করেন না। নির্ধারিত কাজের অতিরিক্ত কাজ করালেও সহযোগিতা করেন না। বিষয়টি দীর্ঘদিন লক্ষ্য করে তাঁর স্ত্রী রাবেয়া বললেন, “মহান আল্লাহ মানুষ ছাড়াও, পশু-পাখি, কীট-পতঙ্গ, গাছপালা তথা সকল সৃষ্টির প্রতি সদয় ব্যবহার করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। এতে মহান আল্লাহ খুবই খুশি হন।”
জনাব 'ক' বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নেন এবং নির্দিষ্ট সময়ান্তে কিছু বাড়তি টাকাসহ তা আবার ফেরত দেন। তার বাবা কাজটি হারাম হবে বলতে গেলে তিনি বাধা দিয়ে বলেন, “সমাজে এভাবে সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান চলছে তাই বিষয়টি অবশ্যই হালাল।" মা তাকে বলল, “এসব খারাপ কাজের হিসাব একদিন আল্লাহর কাছে দিতেই হবে। তোমার বাবার এ বিশ্বাস আছে বলেই পুরো জীবনটা সততার মধ্যে অতিবাহিত করেছেন।”
দরিদ্র কৃষক পরিবারে মিজানের জন্ম। চরম কষ্ট ও দরিদ্রতার মধ্য দিয়ে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। পরবর্তীতে পত্রিকা বিক্রি করে পড়ালেখার খরচ চালিয়ে উচ্চ শিক্ষা সমাপ্ত করে বর্তমানে বিসিএস কর্মকর্তা। তাঁর জীবনে এখন সুখ আর সুখ। তিনি অফিসের প্রথম দিনে সহকর্মীদের পরিপাটি দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেন, এরূপ পরিপাটি ও শারীরিক সৌন্দর্যের সাথে সাথে আমাদের কাজগুলোও সুন্দর হতে হবে। কারণ আমাদের সৎকাজ যেমন আমাদেরকে সম্মানিত করে তেমনি মন্দ কাজ আমাদেরকে নিচু পর্যায়ে নামিয়ে অপমানিতও করতে পারে।
সাদিক সাহেব আজ সকালে উঠে এমন কিছু সুরা তিলাওয়াত করলেন যেখানে সালাত, যাকাত ও হজ এর নানা বিধি-বিধান আলোচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে তার সহকর্মী আবিদ অন্য একটি সুরা তিলাওয়াত করে উপলব্ধি করতে পেরেছে পিতৃহারাদের প্রতি সদাচরণ করা আল্লাহর নির্দেশ। তাই তিনি তার মৃত বড় ভাইয়ের সন্তানদের যথেষ্ট সহায়তা করেন। এমনকি প্রয়োজনীয় ছোট খাট বিষয়াদির প্রতিও খেয়াল রাখেন।
রায়হান সাহেব সর্বদা সম্মিলিতভাবে আদায় করা একটি ইবাদতের প্রতি বিশেষ যত্নশীল। কারণ তিনি জানতে পারেন উক্ত ইবাদতের ব্যাপারে কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম হিসেব নেয়া হবে। অপরদিকে তার বড় ভাই রাফসান নির্দিষ্ট মাসের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে নির্ধারিত কয়েকটি স্থানে কিছু কর্মসম্পাদনের মাধ্যমে আরেকটি ইবাদত পালন করেন। কিন্তু তিনি, একটি ওয়াজিব কাজ আদায় করতে ভুলে যান। তার সহযাত্রী জনৈক ব্যক্তি তাঁকে তা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি ততক্ষণাৎ অতিরিক্ত একটি কুরবানি দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
বিদ্যালয়ের বার্ষিক মিলাদ মাহফিলে বিশেষ অতিথি একটি ইবাদতের তাৎপর্য সম্পর্কে বলেন, আল্লাহ তাহালা নির্দিষ্ট একটি মাসে সকল সৎকাজের প্রতিদান দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। অপরদিকে প্রধান অতিথি অন্য একটি ইবাদতের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বিত্তশালীদের সম্পদে নিঃস্বদের জন্য আল্লাহতাআলা একটি অংশ নির্ধারণ করে দিয়েছেন। এটা তাদের প্রতি কোনো দয়া নয়।
মুনির তার বন্ধুদের সাথে মিলে একটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। এতে মাহিকে যোগ দিতে বললে মাহি বলে, আল্লাহ আমাদের প্রতিটি কর্মকাণ্ড দেখছেন, তাঁকে আমাদের পক্ষে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব নয়। একথা শুনে মুনিরের মনে ভয় চলে আসে এবং এই নিন্দনীয় কাজ থেকে বিরত থাকে। পরে মাহিকে সব বন্ধু মিলে কথা দেয় তারা আর মন্দকাজে লিপ্ত হবে না। কথা অনুযায়ী তারা এখন সৎ জীবন যাবন করছে। কিন্তু রাহি নামে তাদের অন্য আর এক বন্ধুর কাছে তাদের কিছু টাকা গচ্ছিত ছিল। সে না জানিয়ে তা নিজের প্রয়োজনে খরচ করে ফেলে।