স্বদেশি পণ্য কিনে হউন ধন্য' এর উপর ভিত্তি জনাব কেরামত মোল্লা উত্তরাধিকারে প্রাপ্ত তাঁতের শাড়ির ব্যবসায়টি পরিচালনা করছেন। গতানুগতিক ডিজাইন পরিহার করে শাড়ির গুণগত মান ও ডিজাইনে নতুনত্ব আনার তার এক বন্ধুর পরামর্শে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ব্লক বাটিকের উপর কোর্স সমাপ্ত করেন। অনুকূল পরিবেশ বিরাজমান থাকায় ব্যবসায়ে আশাতীত সাফল্য লাভ করেন।
একটি সরকারি সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে রহিমা ব্যক্তিগত কিছু সম্পত্তি বিক্রি করে গ্রামের কয়েকজন মহিলাকে কাজে লাগিয়ে একটি গরুর খামার স্থাপন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। প্রতিবেশী শামীমাও রহিমাকে অনুসরণ করে নিয়ে নিজের জমানো টাকা ও কিছু ঋণ নিয়ে ১০টি সেলাই মেশিন ক্রয় করেন ও ১০ জন কর্মী নিয়ে একটি টেইলারিং দোকান দেন। ব্যবসায়ে মুনাফা ও ঝুঁকি তিনি একাই বহন করেন। তার সুদক্ষ কর্মপ্রচেষ্টা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণে পরবর্তীতে তিনি ‘শামীমা ফ্যাশন হাউজ’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সক্ষম হন।
নিজের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরির চিন্তা মাথায় রেখে জনাব হাবিব নিজ গ্রামের বাজার সংলগ্ন স্কুলের পাশে একটি কুটিরশিল্পের দোকান স্থাপন করেন। তিনি যে সকল পণ্য বাজারজাতকরণে আগ্রহী উক্ত পণ্যের গ্রহণযোগ্যতা নিরূপণ ও কর্মী বাছাইয়ের বিষয়টি বাজার জরিপের সাহায্যে সম্পাদন করেন। কিছুদিন পর তিনি লক্ষ করলেন পণ্যের বিক্রির পরিমাণ অত্যন্ত কম। অনুসন্ধান করে জানতে পারলেন, তার উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান অত্যন্ত নিম্নমানের। তাই ব্যবসায়ে গতিশীলতা আনয়নের জন্য কর্মীদের সরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে হাতে কলমে শেখার ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
বিদেশ ফেরত রফিক, শফিক, করিম তিন বন্ধু সমঝোতার মাধ্যমে একটি ব্যবসায় স্থাপন করেন। প্রথম বছরে ব্যবসায়ে ভালো মুনাফা হয়। কিন্তু হঠাৎ করে রফিক সিদ্ধান্ত নেন, তিনি বিদেশে স্থায়িভাবে বসবাস করবেন এবং বিষয়টি শফিক ও করিমকে জানিয়ে দেন। ফলে ব্যবসাটির বিলোপসাধন ঘটে। পরবর্তীতে শফিক ও করিম প্রচুর মুনা লাভের আশায় নতুন আরেকটি ব্যবসায় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে জনগণের মাঝে উচ্চ হারে সুদের ঋণের পরিবর্তে শেয়ার বিক্রয় করে মূলধন সংগ্রহ করবেন। আর ইচ্ছা হলেই বিলোপ ঘটানো যাবে না।
'লোটাস' মোটরগাড়ি শো-রুমের মালিক। তিনি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি চীন থেকে আমদানি করে তার শো-রুমে মোটর সাইকেল তৈরি করে। বিক্রি করেন। অন্যদিকে 'ওমেগো' ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানি বর্তমানে সর্বোচ্চ মুনা প্রতিষ্ঠান, দেশের সর্বত্র ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করছে এবং এই ডিলারগণ তাদের নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে বিভিন্ন অবস্থিত দোকানগুলোতে তৈরিকৃত পণ্য সরবরাহ করে। শহরে অবস্থিত দোকানগুলোতে তৈরিকৃত পণ্য সরবরাহ করে।
বেকার যুবক মুশফিক তার নিজ গ্রামে পরিত্যক্ত একটি পুকুরে হ্যাচারি ব্যবসায় শুরু করে। সুলভ মূল্যে উন্নত পোনার জন্য অন্যান্য স্থান থেকেও অনেক পাইকারি পোনা বিক্রেতা তার হ্যাচারিতে আসতে শুরু করে। সুদক্ষ পরিকল্পনা ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে সে তার ব্যবসায়কে আরও সম্প্রসারণের লক্ষ্য নিয়ে নিজেদের বাড়ির একপাশের জমিতে একটি মুরগির খামার গড়ে তোলে। খামার দেখাশোনা করার জন্য সে প্রায় ১০ জন যুবককে নিয়োগ দেয়। বর্তমানে মুশফিক একজন সফল ব্যবসায়ী এবং তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে গ্রামের অন্যান্য যুবকরাও তাকে অনুসরণ করছে।
জনাব আশিফ ময়মনসিংহে নতুন বাজারে অবস্থিত একটি শপিং মলের স্বত্বাধিকারী। তিনি বছরের শুরুতেই প্রতিষ্ঠানের মুনাফা সর্বোচ্চকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন। একজন সুপারভাইজারের দায়িত্বে বিভিন্ন বিভাগকে এমনভাবে ভাগ করেন যাতে প্রত্যেক কর্মচারী একে অপরের সাথে সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ থাকে। কিছুদিন পর দেখা গেল তার প্রতিষ্ঠানটি কাঙ্ক্ষিত ফল লাভে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই তিনি প্রতিষ্ঠানে শূন্যপদের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন কিছু লোক নিয়োগদানের ব্যবস্থা করেন।
রাফিদ, রাশিক ও রাকিব মৌখিক সমঝোতার ভিত্তিতে দেশ এন্টারপ্রাইজ' নামক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। ব্যবসায় শুরুর কিছুদিন পরে রাকিবের মৃত্যু হলে তার ১৫ বছরের সন্তান সানিকে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যবসার আওতায় নিয়ে আসা হয়। অন্যদিকে ‘সতেজ এন্টারপ্রাইজের মালিক রিমন 'দেশ এন্টারপ্রাইজ' হতে ১৫,০০০ টাকা পণ্য বাকিতে ক্রয় করে কিন্তু বার বার তাগাদা সত্ত্বেও পাওনা পরিশোধে গড়িমসি করছে। এই কারণে এন্টারপ্রাইজ', 'সডেজ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে পাওনা পরিশোধের জন্য -মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রশীদ ত্রয়ী গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ' এর বিপণন ব্যবস্থাপক। তার প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত গুণে ও মানে উন্নত হওয়া সত্ত্বেও চাহিদা কম। তাই তিনি জরিপ করেন। ক্রেতাদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারলেন অন্যান্য প্রসাধীন সামগ্রীর গল্প, রং, আবৃত্ত কাগজটি তাদের বেশি আকৃষ্ট করে। তাই তার পণ্যসামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পাশাপাশি ব্যবসায়ের পরিধি বৃদ্ধির জন্য প্রিন্ট মিডিয়ার সাহায্য নেন এবং পোস্টারিং-এর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
'মাইশা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপক জনাব মহসিন প্রতিষ্ঠানের নিয়ম-কানুনের ব্যাপারে উদাসীন। তিনি কর্মীদের কাজ দিয়ে নিশ্চুপ থাকেন। ফলে কর্মীদের স্বেচ্ছাচারিতা মনোভাব দেওয়ায় কাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রথমদিকে সমস্যা হলেও পরে দেখা গেল কর্মীদের কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। কর্মীদের উপর নির্ভর না করে জনাব মহসিন। নিজেই নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাছাড়া তিনি তার প্রতিষ্ঠানের কোন কাজের জন্য কে উপযুক্ত তা বাছাই করে দায়িত্ব বণ্টন করছেন। বর্তমানে কর্মীরা তার প্রতি সন্তুষ্ট এবং প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ও মুনাফার পরিমাপও বৃদ্ধি পেয়েছে।