কুসুমপুরের শফিক মিয়ার পূর্বপুরুষগণ মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত ছিলেন। তাই শফিক মিয়াও এসএসসি পাসের পর মৃৎশিল্পের সাথে জড়িত হন। তিনি বিভিন্ন রকম হাঁড়ি- পাতিল, পুতুল ও খেলনাসামগ্রী তৈরি করে বাজারজাত করেন। দীর্ঘদিন ধরে তার ব্যবসা ভালোই চলছিল। কিন্তু সম্প্ৰতি COVID 19 ভাইরাসের কারণে দেশের মানুষের আয়-রোজগার ও সঞ্চয় কমে যায়। তাই তার ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। নতুনভাবে অর্থসংস্থানের মাধ্যমে ব্যবসায় সচল রাখতে চাইলেও শফিক মিয়া তা পারলেন না। অবশেষে তার ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যায়।
উচ্চ শিক্ষিত ইব্রাহীম সাহেব যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হন। অনেকদিন বেকার থাকার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ও কম্পিউটার চালনায় প্রশিক্ষণ কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করেন। তার পর বুড়িচং উপজেলার প্রাণকেন্দ্র “মা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার' নামে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। তিনি উক্ত প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য জুয়েল নামে একজন কর্মচারীকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিয়োগ দেন। ফলে জুয়েলের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারসহ অন্যান্য সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
জনাব শাহ আলম একজন সবজি বিক্রেতা। তিনি চান্দিনা পাইকারি বাজার হতে বিভিন্ন ধরনের সবজি কম দামে ক্রয় করে তা কুমিল্লা শহরে ভোক্তাদের নিকট বেশি দামে বিক্রয় করেন। তিনি আলুর মৌসুমে একটন আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে অধিক দামে বিক্রয় করে লাভবান হয়েছেন। তাই তিনি এই বছর ২০ টন আলু সংরক্ষণের চিন্তা-ভাবনা করে ব্যাংকে একলক্ষ টাকা ঋণ করেন। যথাসময়ে ঋণ না পাওয়ায় তার টার্গেট পূরণ হয়নি।
শাহেদ ও ৮ বন্ধু স্বেচ্ছায় সংঘবদ্ধ হয়ে ২০১৫ সালে একটি টেক্সটাইল মিল প্রতিষ্ঠা করেন, যার শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য নয়। প্রতিষ্ঠানটি হয় বেতনভুক্ত একটি কর্তৃপক্ষ দ্বারা। তিন বছর পর ব্যবসায়ের কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়টি সম্প্রসারণের জন্য অতিরিক্ত মূলধনের প্রয়োজন হয়। ফলে তারা শেয়ার ও ঋণপত্র জনগণের নিকট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় শেয়ারহোল্ডারগণ যে পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করবেন, তারা শুধু সে পরিমাণ অর্থের জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।
জনাব হাছান একজন কৃষিবিদ। তিনি তার স্বল্পশিক্ষিত বন্ধু জনাব আজাদকে গরুর খামার করার পরামর্শ দেন। তিনি তাঁকে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নিতে বলেন। জনাব হাছানের পরামর্শ মতো জনাব আজাদ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নিজেদের অব্যবহৃত এক একর জমিতে গরু পালনের খামার প্রতিষ্ঠা করেন। সুষ্ঠুভাবে গরুর পরিচর্যার কারণে তার খামারের দিন দিন উন্নতি হচ্ছে।
বিধী, তিথি ও মনি একত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নিজেদের মধ্যে মূলধন ও মুনাফা সমান অনুপাতে বণ্টনের নিমিত্তে একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানের কার্য পরিচালনার ৬ মাস পর বিথী মারা গেলে তার ১২ বছরের মেয়ে সীমাকে বিথীর পরিবর্তে ব্যবসায়ে নেওয়া হয়। অপরদিকে, রিমি ও রিনি আইনসৃষ্ট একটি এবং সংশ্লিষ্ট প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও। যেকোনো সাতটি প্রশ্নের উত্তর । প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠানের নাম 'মাইশা এন্ড কোং ও মূলধন সারে উপায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের অফিসে ফি জমা দিয়ে আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি।
মি. শিপন একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর। তিনি ভীষণ বাস্তব জ্ঞানের অধিকারী। প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্য সবসময় তাঁর নখদর্পণে থাকে। প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মী অর্পিত দায়িত্বকে আদর্শ মনে করে যথাযথভাবে পালন করে। নি শিপনের কাছ থেকে কোনো আদেশ পাওয়া মাত্র তারা তা পালনে বাধ্য হয়ে ওঠে। কারণ, কে আদেশ দিয়েছে তার তুলনায় কী আদেশ দেওয়া হয়েছে- সেটিই তাদের নিকট প্রধান বিষয়। প্রতিষ্ঠানের যেকোনো সমস্যা তিনি ধার স্থিরভাবে সমাধান করেন। তাছাড়া মি. শিপনের মার্জিত ব্যবহার সকলকে মুগ্ধ করেছে। তিনি নারী-পুরুষের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি ও সামাজিক অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থেকে নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।
রামিসা আনান টিভিতে মডেল হিসেবে কাজ করেন। তিনি মনে করেন নতুন নতুন পণ্য ও সেবাসামগ্রী ক্রয়ে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য এবং বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য তার এই কাজের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। অপরদিকে সামিহা আনান একটি বৃহদাকার শপিং মলে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করেন। ক্রেতাদের সাথে সুন্দর আচরণ, আত্মবিশ্বাস, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা ইত্যাদি কারণে সামিহার বিক্রয়ও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
'রুবি এন্টারপ্রাইজ' এর মালিক মি. ফজল। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের নেতা কর্মীদের উপর দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকেন। নিজে কাজ করতে পছন্দ করেন না। সুনির্দিষ্ট আদেশও দেন না। ফলে দিনদিন ব্যবসায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অপরপক্ষে 'শঙ্খা এন্টারপ্রাইজের মালিক মি. সুমন নারী-পুরুষ নির্বিশেষে কর্মীদেরকে সমভাবে মূল্যায়ন করেন। প্রতিষ্ঠানের সকল বিষয়ে তাঁর দক্ষতা থাকার কারণে কর্মীদেরকে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব বণ্টন করেন। এতে কর্মীরা প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়।
জনাব রুহুল আমিন বিভিন্ন ধরনের খেলনাসামগ্রী তৈরি করেন এবং সেগুলোকে মান অনুযায়ী ভাগ করেন। অতঃপর আকার ও গুণাগুণ অনুযায়ী পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে প্যাকেটিং করে গুদামে সংরক্ষণ করেন, পরবর্তীতে তিনি তার পণ্য বড় বড় ব্যবসায়ীদের নিকট বিক্রয় করেন, যারা অল্প অল্প করে ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় এভাবে জনাব রুহুল আমিনের পণ্যসমূহ ভোক্তাদের নিকট পৌঁছে।
জনাব আতিক একজন প্রভাষক। তিনি তার এলাকার জনগণকে সাহিত্যে উৎসাহিত করার জন্য একটি পাঠাগার স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। অপরপক্ষে তার বন্ধু সাজু যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে পোলট্রি ও ডেইরি ফিড তৈরির কারখানা গড়ে তোলেন, এতে অনেক লোকের কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এখন সে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী।