আব্দুর রহমান ও সাজ্জাদ পরস্পর সহপাঠী। আব্দুর রহমান মনে করে ইসলাম একমাত্র পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছুই ইসলামে আছে। অপরপক্ষে তাঁরই বন্ধু সাজ্জাদ মদ, জুয়া, সুদ-ঘুষ ইত্যাদিকে অবৈধ মনে করে না। তার এরূপ মনোভাব জেনে তার এলাকার ইমাম সাহেব বলেন— এর ফলে দুনিয়াতে অনৈতিকতার প্রসার ঘটবে এবং তাকে অনন্তকালের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
সালেহা ও শাহানা এ বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী। সালেহা তার সকল কাজে আল্লাহর কাছে সাহায্য চায়। কেননা সে বিশ্বাস করে- সকল প্রশংসা ও ইবাদত তাঁরই জন্য নির্ধারিত এবং তিনি সকল গুণের আধার। শাহানা রীতিমতো লেখাপড়া করে না। সে মনে করে আল্লাহর পাশাপাশি অপর কোনো গুণসম্পন্ন সত্তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করলেই পরীক্ষায় সফল হওয়া যাবে।
জনাব মনোয়ার ও আনোয়ার একই এলাকার অধিবাসী। সামাজিক প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মনোয়ার আনোয়ার সাহেবের ওপর চড়াও হন। এমনকি তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে তাকে নির্যাতন করেন। পরবর্তীতে আনোয়ার সাহেব প্রতিশোধ নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও মনোয়ার সাহেবকে ক্ষমা করে দেন। পরবর্তীতে আনোয়ার সাহেব ঘোষণা করেন- দাসদাসীদের প্রতি তোমরা সদ্ব্যবহার করবে।” ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে না। স্ত্রীদের সাথে সদয় আচরণ করবে।
আব্দুর রহমান ও সাজ্জাদ পরস্পর সহপাঠী। আব্দুর রহমান মনে করে ইসলাম একমাত্র পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। মানবজীবনের জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছুই ইসলামে আছে। অপরপক্ষে তাঁরই বন্ধু সাজ্জাদ মদ, জুয়া, সুদ-ঘুষ ইত্যাদিকে অবৈধ মনে করে না। তার এরূপ মনোভাব জেনে তার এলাকার ইমাম সাহেব বলেন— এর ফলে দুনিয়াতে অনৈতিকতার প্রসার ঘটবে এবং তাকে অনন্তকালের শাস্তি ভোগ করতে হবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি জনাব বেলাল আহমদ অত্যন্ত উদার ও দয়ালু মানুষ। সম্প্রতি তার এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা আসলে তিনি তাদের পানির অভাব দূর করার জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে অসংখ্য নলকূপ স্থাপন করেন। তাদের মধ্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাছাড়া মসজিদও নির্মাণ করে দেন। তাঁরই ভাই স্থানীয় চেয়ারম্যান মকবুল সাহেব রোহিঙ্গা শিশুদের কান্নার আওয়াজ শুনে রাতের অন্ধকারে ইউনিয়নের তহবিল থেকে আটার বস্তা নিয়ে তাদের মধ্যে বিতরণ করেন। এমনকি রোহিঙ্গা গর্ভবতী মহিলাদের প্রসব বেদনায় সাহায্য করার জন্য তাঁর স্ত্রীকে সেখানে নিয়ে যান।
তাওহিদ নিয়মিত সালাত আদায় করে। একদিন মাগরিবের সালাত আদায়কালে তার কুরআন তিলাওয়াত শুনে তার চাচা বললেন তোমার কেরাত শুল্ক নয়। ফলে তোমার সালাত শুদ্ধ হয়নি। তোমাকে অবশ্যই তিলাওয়াত শুদ্ধ করতে হবে। কেননা তা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। পক্ষান্তরে, তার বন্ধু আকরাম মনে করে শরিয়তের জ্ঞানার্জন সকলের জন্য অপরিহার্য। এর মাধ্যমে জীবনের হালাল-হারাম, ফরজ, ওয়াজিবসহ যাবতীয় বিষয়ের জ্ঞান অর্জন করা যায়।
করিম সাহেব একটি অফিসের একজন খোদাভীরু কর্মকর্তা। তিনি সর্বদা আল্লাহ তার রাসুলের নির্দেশিত পথে চলেন ও নিজেকে সকল প্রকার অন্যায়-অনাচার ও পাপাচার থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করেন। যথাসাধ্য ইবাদত-বন্দেগিও করেন। কিন্তু তার কেরানি কামাল অসৎ চরিত্রের লোক, সে উপরি পাওনা ছাড়া কোনো কাজ করে না বরং মানুষকে হয়রানি করে ।
জনাব আশিক একজন ঔষধ ব্যবসায়ী। তিনি তার দোকানে ন্যায্যমূল্যের সাইনবোর্ড লাগিয়ে মানুষকে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ নিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। অপরদিকে তার বন্ধু জামিল নিয়মিত ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি বছরান্তে সম্পদের হিসাব করে গরিব-মিসকিনদের মধ্যে নির্দিষ্ট অংশ বিতরণের মাধ্যমে তার ওপর অর্পিত ফরজ ইবাদত আদায় করেন।
সালেহা সফিনা দুই সহপাঠী। সালেহার কথাবার্তা, আচার-আচরণ, পোশাক- পরিচ্ছদ ও সর্বক্ষেত্রে লজ্জাশীল। তাই সে সকলের কাছে প্রিয় ও গ্রহণযোগ্য । সালেহার সদগুণ ও গ্রহণযোগ্যতা দেখে সফিনা সালেহার কুৎসা রটনা ও নিন্দা করে বেড়ায়। সফিনার মা তার অবস্থা দেখে তাকে মহানবি (স.)-এর বাণী শোনান। “তিন ব্যক্তির গুনাহ মাফ হয় না। তন্মধ্যে একজন হচ্ছে অন্যের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী।”
সুফিয়ান ও রায়হান দুই বন্ধু। কথা প্রসঙ্গে সুফিয়ান বলল মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য আল্লাহপাক যুগে যুগে অনেক নবি-রাসুল পাঠিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় হযরত মুহাম্মদ (স.) হলেন সর্বশেষ নবি। তার পরে আর কোনো নবি আসবেন না। তা শুনে রায়হান বলল- বৈজ্ঞানিকরাও মানুষকে সঠিক পথ দেখায়। কাজেই তারাও নবিদের পর্যায়ভুক্ত। সুতরাং মুহাম্মদ (স.)- কে সর্বশেষ নবি মানা যায় না। তা শুনে স্থানীয় মসজিদের ইমাম সাহেব বললেন- আল কুরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা দিয়েছেন – “মহানবি (স.) আল্লাহর রাসুল এবং সর্বশেষ নবি।”
জনাব ফারহান ও মারজান দুভাই। ফারহান শহরে চাকরি করে। একদিন অফিসে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন একজন অন্য রাস্তা পার হতে পারছেন না । তিনি তাকে রাস্তা পার করে দেন। আরও কিছুদূর যাওয়ার পর দেখেন একজন পিপাসার্থ পানির জন্য কাতরাচ্ছে। তিনি তার সঙ্গে থাকা পানির বোতল থেকে পিপাসার্থ লোকটিকে পানি পান করান। তারই ছোট ভাই মারজান গ্রামে বসবাস করেন। তার প্রতিবেশী সুধাংশুর মা বর্ষার দিনে মৃত্যুবরণ করলে তাকে দাহ করার জন্য তিনি শুকনো কাঠ দিয়ে সহায়তা করেন। মারজান সাহেবের এরূপ আচরণ দেখে মসজিদের ইমাম সাহেব বলেন- সমাজে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলাম আমাদেরকে নির্দেশ প্রদান করেছে ।
জনাব মিনহাজ হাওড় পাড়ের বাসিন্দা। বিগত বন্যায় ও অতি বর্ষণে হাওড়ের ফসলাদি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি অসহায় হয়ে পড়েন। অভাব অনটনের সংসারে তিনি মেয়ের বিবাহ উপলক্ষে প্রতিবেশী নুমান সাহেবের কাছে দুই লক্ষ টাকা ধার চাইলে বছরান্তে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়ার শর্তে তাকে ধার দেন। তারই ছোট ভাই ফয়সাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে বেকার দিনযাপন করছেন। তিনি তাকে ব্যবসা অথবা চাকরি করার পরামর্শ দিলে সে বলে এগুলো আমার ভালো লাগে না। ফয়সালের এরূপ অবস্থা দেখে তার চাচা বলেন তুমি একসময় সমাজের বোঝা হয়ে যাবে ।