জনাব রায়হান ঢাকার বাদামতলী আড়তের একজন সফল ব্যবসায়ী। সারা বছর আপেল, আঙ্গুর, বেদানা, নাসপাতিসহ বিভিন্ন বিদেশি ফল আমদানি করেন। ভরা মৌসুমে রাজশাহীর বিভিন্ন আম বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে সেগুলোকে ছোট- বড় বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে ঝুড়িতে ভরে তা ট্রাকে করে বিক্রির জন্য ঢাকায় নিয়ে আসেন। বিভিন্ন রকম ফল সংগ্রহের জন্য তাকে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। এতে খুচরা ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে ফল কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে ।
জামালপুর জেলার জনাব কার্তিক বাঁশ, খেজুর ও তাল গাছের ওপর ভিত্তি করে ‘রাংতা' নামের একটি কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন । তার প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য যেমন—হাতপাখা, টুপি, শীতল পাটি, মাদুরসহ বিভিন্ন রকম খেলনা সামগ্রী ক্রেতাদের ভীষণভাবে আকৃষ্ট করে। ফলে তার উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে। সময়ের সাথে সাথে চাহিদা বাড়ায় তিনি কারখানাটি সম্প্রসারণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তিনি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছেন না।
হুমায়ুন বিবিএ পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্র। একজন আত্মনির্ভরশীল ব্যক্তি হিসেবে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালানোর জন্য লেখাপড়ার পাশাপাশি অল্প মূলধন নিয়ে বাড়ির পাশেই একটি ফটোকপির ব্যবসায় আরম্ভ করে। ফটোকপির পাশাপাশি ভোক্তা সাধারণকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন পরীক্ষার ফরম পূরণ, রেজাল্ট প্রকাশ, মেইলের তথ্য আদান-প্রদান, টার্ম পেপার প্রস্তুত প্রভৃতি সেবা দিয়ে বেশ ভালোই মুনাফা অর্জন করে। তিনি নিজে ব্যবসায়ের সমস্ত বিষয় সামাল দিতে না পারায় বড় ভাইকে ফটোকপি অংশের দায়িত্ব দিয়েছেন। ফলে হুমায়ুনের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায় সফলতার আলো দেখতে শুরু করেছেন।
সাগুফতা ও শাহীদা দই বান্ধবী বোঝাপড়া করে চুক্তির মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের জন্য একটি বুটিক হাউজ গড়ে তুলেছেন। বুটিক হাউজের ব্যবসায় সফল হওয়ায় তাদের মূলধন কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু তাদের একজন ক্রেতা শারমিনের কাছে পাওনা ১,৫০,০০০ (এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা বার বার তাগাদা দিয়েও আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না । এমনকি আদালতের আশ্রয় নিতেও তারা ব্যর্থ হচ্ছে।
জনাব আহমেদ ও জনাব সিয়াম দুজন শেয়ার বাজার থেকে “হামীম কোম্পানি লি.” এর ১২,০০,০০০ ও ৭,০০,০০০ টাকার শেয়ার কেনেন । জনাব আহমেদ হামীম কোম্পানি লি. এর বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণপত্র পেলেও জনাব সিয়াম কোনো আমন্ত্রণপত্র পাননি। কোম্পানিটি বিলোপের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে জনাব সিয়াম তার বিনিয়োগকৃত ৭,০০,০০০ টাকা ফেরত পেলেও জনাব আহমেদ তার বিনিয়োগ অপেক্ষা ৪,০০,০০০ টাকা কম পান।
সমবায়ের মূলমন্ত্রই হলো “একতাই বল”, “সকলের তরে সকলে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে”। এগুলো সত্যিই আবেদনময়ী কথা! সবার কল্যাণ, ঐক্য, সহযোগিতা ও সাম্য এ বিষয়গুলো অন্য ব্যবসায় সংগঠনের সাথে তেমনভাবে দেখা যায় না। বাংলাদেশের সমবায় সংগঠন তার নির্দিষ্ট আঙ্গিকে ব্যাপকতা লাভ করুক, সফল হোক, এটা অনেকেই বিভিন্ন কারণে প্রত্যাশা করে থাকে। কিন্তু সচেতনতার অভাব, ব্যাপক কারণে প্রত্যাশা করে থাকে। ক প্রচারসহ বিবিধ কারণে বাংলাদেশে সমবায় আন্দোলন তেমনভাবে সফল হয়নি।
বর্তমান সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে উপনীত করার লক্ষ্যে সারা দেশের প্রয়োজনীয় সমস্ত খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে বাংলাদেশ সরকার “বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড” কে সংস্কারের মাধ্যমে আধুনিকায়ন করার সিদ্ধান্ত নেন। তাছাড়া সারাদেশে পাওয়ার স্টেশন স্থাপন, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন নির্মাণসহ বিবিধ কাজ সম্পাদনে বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়। চুক্তির শর্তানুযায়ী উভয়েই মুনাফা লাভ করবে ।
বেগম ফেরদৌসী একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তিনি নিজস্ব প্রচেষ্টায় এমন একটি সফটওয়্যার তৈরি করেন যার মাধ্যমে দেশের যেকোনো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাদের হিসাব ও তথ্য খুব সহজেই সংরক্ষণ করতে পারে। একটি নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে তিনি মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ করেন। কিছুদিন পর ফেরদৌসী তার ভাই ফারহানের কাছে মেধাস্বত্ব হস্তান্তর করেন। ফারহান সাথে সাথে নির্দিষ্ট আইনের মাধ্যমে তা নিবন্ধন করে আইনগত সুরক্ষার ব্যবস্থা নিয়েছেন । এখন তিনি নিরাপদভাবে তার ব্যবসায় পরিচালনা করছেন।
সামীনের বাবা একজন দক্ষ দরজি। ছোটবেলা থেকে । দক্ষ হয়ে উঠেছে। ডিগ্রি পাস করে সামীন বাবার ব্যবসায়টি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সে শুধু দরজি কাজে সীমাবদ্ধ না থেকে সেলাই, এমব্রয়ডারি, বুটিকসহ কাপড়ের বিভিন্ন কাজ করার কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে এসেছে। কিন্তু এজন্য তার মূলধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। সে বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জেনেছে বাবার সাথে থাকতে থাকতে সেও সেলাই ও কাটিং-এর কাজে যে, তার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হচ্ছে এবং বিদেশিরাও এক্ষেত্রে অর্থায়নে এগিয়ে এসেছে। ফলে ঋণ নিয়ে জোরে-শোরে কাজ শুরু করে দিল । সামীন
জনাব শরীফ একজন সমাজসেবী জনহিতৈষী ব্যক্তিত্ব। সমাজের মানুষের উপকার হয়, এমন বিভিন্ন রকম বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করেন। পাড়ায় তিনি একটি পাঠাগার নির্মাণ করেছেন। গরিব মানুষের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় উৎসাহ দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি শিক্ষা সহায়ক ফাউন্ডেশন। সেই সাথে আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কিছু বিত্তবান মানুষকে একত্র করে অংশীদারি ভিত্তিতে গড়ে তুলেছেন একটি বুটিক হাউজ। এখানকার মুনাফার একটি অংশ তিনি সহায়ক ফাউন্ডেশনে নিয়মিত দিচ্ছেন ।
বেগম লায়লা একজন আধুনিক গৃহিণী। ইদানীং পোশাকের কেনাকাটা তিনি তার মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকেন। এতে তার ব্যয় বেশ কমে গেছে। ফেসবুকের কল্যাণে বিভিন্ন রকমের পোশাকের হরেক রকম ডিজাইন ও মূল্য তিনি ঘরে বসেই জানতে পারছেন এবং সঙ্গে সঙ্গে অর্ডারও দিয়ে দিচ্ছেন। ইদানীং আবার ক্রয়কৃত পোশাকের বিল, বিদ্যুৎ বিলসহ নানা রকম আর্থিক লেনদেনের কাজ তিনি ঘরে বসেই সম্পন্ন করে থাকেন। এখন তার দেখাদেখি প্রতিবেশী ও অন্যরাও একই পদ্ধতি অনুসরণ করছে।