মি. কায়েশের ‘TQ’ কোম্পানি ভিয়েতনাম থেকে বিভিন্ন ধরনের চাল আমদানি করে বাছাইয়ের পর গ্রেডিং করে। এরপর প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন মানের চাল মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে রপ্তানি করে। মি. কায়েশ টিভি চ্যানেল ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে তার কোম্পানির প্যাকেটজাত চালের তথ্য মধ্যপ্রাচ্যে জনসাধরণের কাছে তুলে ধরেন। এতে তার কোম্পানির প্যাকেটজাত চালের চাহিদা বেড়ে যায়। ‘TQ’ কোম্পানির মুনাফা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ।
ওমর গাজীপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঁচ একর জমি কিনে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পেয়ারার বাগান করেন। অঞ্চলটি পেয়ারা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তার বাগানের পেয়ারা ঢাকার পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যায়। তিনি লক্ষ করলেন, তার বাগানের পাশে প্রচুর উঁচু জমি পতিত অবস্থায় পড়ে আছে। (ব্যাংক, বিমা প্রভৃতি ধরনের প্রতিষ্ঠানের অনুপস্থিতির | কারণে) এসব জমির লাভজনক ব্যবহারের জন্য কেউ আগ্রহ দেখাচ্ছে না ।
জয়িতা তার বান্ধবী প্রতিভা ও অনন্যাকে নিয়ে ঢাকার নিউমার্কেটে ‘বৈশাখী' নামে হস্তাশিল্পের একটি অংশীদারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান করে। প্রতিভা একজন বিখ্যাত চিত্রকর। সে এ ব্যবসায় কোনো মূলধন সরবরাহ করে না এবং কর্মীদের দিয়ে ঘর সাজানোর বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী তৈরি করে। অনন্যা হস্তশিল্পের কাঁচামাল চকবাজার থেকে পাইকারি কিনে থাকে। একদিন অনন্যার হিসাবে গরমিল দেখা দেয়। এতে জয়িতা তাকে সন্দেহ করে। ফলে বিরোধের জের ধরে অংশীদারি ব্যবসাটি বিলুপ্ত হয় ।
ওয়াসী তার বন্ধুদের নিয়ে দশজনের একটি যৌথ মূলধনী কোম্পানি গঠন করেন। কোম্পানির মালিকানাকে দশটি সমানভাগে বিভক্ত করা হয় । প্রত্যেকে একটি শেয়ারের জন্য এক কোটি টাকা করে মোট ১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। কিছুদিন পর ওয়াসী তার শেয়ারটি কোম্পানির বাহিরের এক বন্ধুর কাছে বিক্রি করতে চাইলে আইনগত কারণে তা সম্ভব হয় না। ওয়াসীর এক বন্ধু ঢাকার শেয়ার মার্কেটে নিবন্ধিত বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে। সে গত মে মাসে সম্প্রসারণশীল কোম্পানির শেয়ার কেনে । কোম্পানিটি জুন মাসে প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্যের ১০% নগদ এবং ৮টি শেয়ারের বিপরীতে বিনামূল্যে একটি শেয়ার দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
রংপুরের পঞ্চাশ জন কলাচাষি কলার ন্যায্যমূল্য পাওয়ার জন্য একটি সংগঠন গঠন করে। তারা প্রতি সপ্তাহে ট্রাকে করে ঢাকার পাইকারি বাজারে বিক্রি করে । তাদের আগে তুলনায় অনেক মুনাফা হয়। তাদের দেখে অনেকে জমিতে কলাচাষ উদ্বুদ্ধ হয়। এ সংগঠনটি সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করেছে। সংগঠনে একজন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আছে- যে মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কোনো সুবিধা পায় না ।
শিল্পপতি মি. আহনাফ তার বিদেশি বন্ধুদের নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যান এবং সেখানে সৌখিন মোটেল'-এ রাত্রি যাপন করেন। তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন মোটেলটি একটি সংস্থার অধীন, যা ১৯৭২ সালে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশবলে গঠিত। মোটেলটিতে অনেক সুদক্ষ কর্মী বাহিনীসহ উন্নতমানের সুযোগ-সুবিধা আছে। কক্সাবাজরে দেশীয় ঐতিহ্যের পণ্য নিয়ে অনেক দোকান তৈরি হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকরা এখান থেকে দেশীয় ঐতিহ্যের প্রচুর শখের পণ্য কিনে নেয় ।
মি. কবীর নারায়ণগঞ্জে একটি চামড়াজাত ব্যাগ তৈরি শিল্প স্থাপন করেন। তার শিল্পের বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় বর্জ্য নিম্নাঞ্চলে অবাধে চলে যাচ্ছে। এতে এলাকার মানুষের চর্মরোগসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ এলাকায় এমন অনেক শিল্প আছে, যা প্রচণ্ড শব্দ সৃষ্টি করে, বাতাস ভারি করে এবং মাটির উর্বরতা কমায়। তাই দেশের শিল্প প্রতিষ্ঠিানসমূহ যাতে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ মেনে চলে এবং দেশে পরিবেশবান্ধব শিল্প গড়ে ওঠে, এ ব্যাপারে সরকার সদা তৎপর।
মি. আজাদ একটি ক্ষুদ্র শিল্প স্থাপন করেন। তিনি আখের গুড় দিয়ে টেস্টি স্যালাইন উৎপাদন করেন। তিনি টেস্টি স্যালাইনের মান নিয়ন্ত্রণে খুব সজাগ। বাজারজাতকরণের আগে তিনি মান নিয়ন্ত্রণকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান BSTI-এর অনুমোদন নেন। ভোক্তারা BSTI-এর লোগো দেখে নির্দ্বিধায় টেস্টি স্যালাইন কেনে। এ বছর মি. আজাদ জেলা সদরে চেম্বার অব কমার্স কর্তৃক আয়োজিত শিল্প মেলায় টেস্টি স্যালাইনের একটি স্টল দেন। তার স্টলে প্রচুর দর্শনাথীর কাছে সন্তোষজনক পরিমাণ স্যালাইন বিক্রি করেন।
ব্যবসায় প্রশাসনে উচ্চতর ডিগ্রিধারী মি, রহমান | রাজশাহীতে একটি ফলের জুস তৈরির শিল্প স্থাপন করেন। । তিনি বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বুঝতে পেরেছিলেন- বিশ্ববাজারে ফলের জুসের চাহিদা ক্রমবর্ধনশীল। বাংলাদেশের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা জেলায় প্রচুর আম উৎপাদন হয়। তাই কাঁচামাল হিসেবে আমের সরবরাহ নিয়ে সমস্যা হবে না। সরকার রাজশাহী অঞ্চলে স্থানীয় কাঁচামালের ব্যবহৃত শিল্পে দশ বছরের জন্য কর।
মি. সামি বিদেশ থেকে আধুনিক প্রযুক্তির গৃহস্থালি সামগ্রী আমদানি করে সরাসরি ভোক্তার কাছে বিক্রি করেন। এজন্য তিনি কোনো দোকান না দিয়ে অফিস খুলে ইন্টারনেটে Megina.Com নামে একটি ওয়েবপেজ খোলেন। এই পেজে সব পণ্যের ব্র্যান্ড, মূল্যতালিকা ও ছবি উপস্থাপন করেন। ভোক্তা পছন্দ করে পণ্যের অর্ডার দিলে সরাসরি ভোক্তার ঠিকানায় পণ্য পৌছে দেওয়া হয়। মি. সামি গ্রাহকের চাহিদা ঠিকানায় পণ্য পৌছে দেওয়া হয়। মি. সামি গ্রাহকের চাহিদা নিরূপণ করার পাশাপাশি ঝামেলাহীনভাবে পণ্য সরবরাহে ই- মেইল, ফেসবুক, টুইটার প্রভৃতি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। এতে ক্রেতার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং মি. সামি ও প্রচুর মুনাফা অর্জন করেছেন ।
মি. নাদেরের ABC নামক পোশাকশিল্পটি সাভারে অবস্থিত। শিল্পটিতে ৩০০ জন কর্মী কর্মরত। মি. নাদের কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার চেয়ে উৎপাদনের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। তিনি মনেদ করেন যে, শিল্পটিতে এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অড়ির্জত হলেও আগামী বছর কর্মী অসন্তোষের দরুন উৎপাদন কাজে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আছে। শিল্প মালিক কারখানার বর্জ্য পাশের নদীতে ফেলেন। ফলে তা নদী দূষণের | পাশাপাশি পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।