জনাব সোহেল ও রুবেল দুইজন রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী। জনাব সোহেল ব্যবসায়ের বিগত বছরের আয় ব্যবহার করে রড-সিমেন্টের পাশাপাশি ঢেউটিন ও সিমেন্ট সিটের ব্যবসায় শুরু করেন । অপরদিকে, জনাব রুবেলের ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জ্ঞান ও উপযুক্ত আর্থিক পরিকল্পনার অভাবে তিনি তার ব্যবসায়ের অর্জিত মুনাফার সবটুকু প্রতিষ্ঠানে পুনঃবিনিয়োগ না করে পরিবারের ভোগ-বিলাসী পণ্যদ্রব্য ক্রয়ের জন্য খরচ করেন।
মি. সোহরাব একটি প্রকল্পে ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে চান। তার সামনে 'শাপলা' ও 'পদ্মা' দুটি প্রকল্প রয়েছে। শাপলা প্রকল্প হতে আগামী চার বছরে অবচয় ও করপূর্ব আয় (সম্ভাব্য) যথাক্রমে ১৫ লক্ষ টাকা, ১৮ লক্ষ টাকা, ২০ লক্ষ টাকা ও ২২ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হয়। 'শাপলা' প্রকল্পের পে-ব্যাক সময় ৩.০৯ বছর নির্ধারণ করা হয়। অপরদিকে, 'পদ্মা' প্রকল্প থেকে আগামী চার বছরে যথাক্রমে ১.০৫ লক্ষ টাকা, ১.৭৫ লক্ষ টাকা, ৮.৭৫ লক্ষ টাকা ও ১২.২৫ লক্ষ টাকা কর পরবর্তী নিট মুনাফা পাওয়া যাবে বলে অনুমান করা হয়। উভয় প্রকল্পের ক্ষেত্রে কোম্পানির কর হার ৩০% ।
X কোম্পানির মোট মূলধন, ১০০ কোটি টাকা যার মধ্যে ৪০% সাধারণ শেয়ার এবং ৬০% ঋণ মূলধন বিদ্যমান। এক্ষেত্রে কোম্পানির ঋণ মূলধন ব্যয় ১৩% এবং কর হার ৩০%। কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় সাধারণ শেয়ার মূলধন ২০% এবং ঋণ মূলধন ৮০% রাখার সিদ্ধান্ত হয়। অপরদিকে, Y কোম্পানির প্রতিটি ৫০০ টাকা মূল্যের ১০ লক্ষ সাধারণ শেয়ার মূলধন রয়েছে। তবে বর্তমানে প্রতিটি শেয়ারের বাজারমূল্য ৭৫০ টাকা। এ কোম্পানিটি গত বছরে শেয়ারপ্রতি ১২% হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল। এ লভ্যাংশের হার প্রতিবছর গড়ে ৫% হারে বৃদ্ধি পায়।
খান অ্যান্ড কোং বিগত কয়েক বছর ধরে শেয়ারপ্রতি ১০ টাকা হারে লভ্যাংশ প্রদান করছিল। কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ প্রতিবছর ওঠানামা করে। বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রতিবছর মুনাফার একটি নির্দিষ্ট অংশ লভ্যাংশ হিসেবে প্রদান করার পক্ষে। অনেকে যত দেন। আবার, অনেকে কমপক্ষে ১২% হারে লভ্যাংশ ঠিক রেখে অর্জিত মুনাফা অনুসারে বাড়তি লভ্যাংশ প্রদান করার পক্ষেও মত প্রদান করেন। উক্ত কোম্পানিতে মি. জামান জামানতের বিপরীতে ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। কিন্তু সভায় কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি মতামত দিতে পারেন না।
মিসেস ফারিহা সুলতানা একজন সরকারি চাকরিজীবী। তিনি অবসরকালীন সময়ে প্রাপ্ত অর্থ অন্বেষা কোম্পানির বন্ডে ১৫% সুদে পাঁচ বছরের জন্য বিনিয়োগ করেন। কিন্তু হঠাৎ তার ছেলে আসিফ অসুস্থ হওয়ায় টাকার প্রয়োজন হলে তিনি উক্ত বন্ডটি বাজারে বিক্রয় করতে পারেন নি। পরবর্তীতে মেয়াদপূর্তিতে উক্ত অর্থ হাতে আসলে তিনি 'স্বপ্ন' ও 'আশা' নামক দুটি প্রকল্পে উক্ত অর্থ বিনিয়োগ করতে চান। ‘স্বপ্ন' প্রকল্পের বিগত ছয় বছরের আয়ের হার যথাক্রমে ১০%, ২০%, ৫%, ১৫%, ৮%, ০%। আশা প্রকল্পের ঝুঁকির পরিমাণ ১২.৬২% গড় আয়ের হার ৮%।
রংপুর বিভাগের কৃষি উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে 'গোমতি ব্যাংক' নামে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে উক্ত ব্যাংকটি কৃষকদের সার, বীজ ও কীটনাশক ক্রয়ের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। পরবর্তীতে ব্যাংকটি সাধারণ ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে জনগণকে ঋণদান ও আদায়ে মানুষের আস্থা অর্জন করে। সম্প্রতি শাহীন নামের এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাময়িক অর্থ সংকটে পড়লে 'গোমতি ব্যাংক এর নিকট আবেদন করে। ব্যাংক তার আর্থিক অবস্থা ভালোভাবে যাচাই না করে এবং কোনো প্রকার জামানত ছাড়াই বড় অঙ্কের ঋণ প্রদান করে। পরবর্তীতে ঋণের টাকা যথাযথভাবে আদায় করতে পারছে না বিধায় তাঁর সাথে ব্যাংকের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
কুমিল্লা শহরে বর্ণা, অর্ণা ও স্বর্ণা নামে তিনটি ব্যাংকের শাখা রয়েছে। ব্যাংকগুলো প্রতিদিন মক্কেলদের সাথে হাজারো লেনদেন করে থাকে। এক ব্যাংকের চেক, ড্রাফট, পে-অর্ডার অন্য ব্যাংকের নিকট জমা হয়, যাহা অর্পি ব্যাংক বর্ণা, অর্ণা ও স্বর্ণা ব্যাংকের প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে তাদের মধ্যকার লেনদেন সম্পাদন করে থাকে। অর্পি ব্যাংক দেশে নতুন নতুন ব্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে বহুলোকের কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ১ ডলার ক্রয় করার জন্য আমাদের দেশের কত টাকার প্রয়োজন হবে তা নির্ধারণ করে দেয়।
জনাব আব্দুল করিম একজন ব্যবসায়ী। তিনি বেশিরভাগ লেনদেন 'করতোয়া' মাধ্যমে করেন। আব্দুর রহিম নামক একজন ব্যক্তিকে ব্যবসায়িক কাজে একটি চেক প্রদান করেন। চেকের উপরে বাম কোণে আড়াআড়ি দুইটি রেখা টেনে রেখাদ্বয়ের মধ্যে A/C Payee লিখে দিলেন। তার একজন দেনাদার জনাব মামুন তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকার একটি বান্ডেল দিলেন। পরের দিন উক্ত টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার পূর্বেই তিনি বান্ডেলের ভেতর ৫০০ টাকার দুইটি জাল নোট দেখতে পেলেন। ফলে তিনি নিজের পকেট হতে দুইটি পাঁচশত টাকার উক্ত টাকা ব্যাংকে জমা দিলেন। তিনি ব্যবসায়ের কাঁচামাল ক্রয়ের জন্য ব্যাংক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়ে যথাসময়ে পরিশোধ করেন।
জামাল সাহেব একজন চাকরিজীবী। তিনি প্রতিমাসে কিছু অর্থ জমা রাখার উদ্দেশ্যে ১০ বছর পূর্বে তার বাসার কাছের মমতা ব্যাংকে একটি হিসাব খোলেন। ব্যাংকটিতে তিনি দ্রুততম সময়ে সেবা পেয়ে থাকেন এবং একই ব্যাংকে সবধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধাও পেয়ে থাকেন। কিন্তু বাড়ি নির্মাণের জন্য ২০ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে মমতা ব্যাংকে গেলে তাকে ঋণ প্রদান করা হয়নি। তাই তিনি ঋণের জন্য সমতা ব্যাংকে গেলেন। সমতা ব্যাংকের ম্যানেজার তাকে ২০ লক্ষ টাকা ঋণ দিতে রাজি হলেন। শর্ত হিসেবে উক্ত ব্যাংকে একটি হিসাব খুলে চেকের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় অর্থ তুলে খরচ করার পরামর্শ দিলেন।
নিলীমা ব্যাংক লি. একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যাংক। ব্যাংকটি জনগণের নিকট থেকে বিভিন্ন হিসাবের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে ব্যাংকিং কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। সম্প্রতি ব্যাংকটি জনাব আদিব নামে একজন ব্যবসায়ীকে কিছু টাকা ঋণ মঞ্জুর করে। উক্ত ঋণের টাকা জনাব আদিব ব্যাংকে একটি হিসাব খুলে উক্ত হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। তাছাড়া নিলীমা ব্যাংক লি. জনাব আদিবকে বিদেশ থেকে পণ্য ক্রয়ের সময় রপ্তানিকারককে অর্থ প্রদানের বিভিন্ন রকম নিশ্চয়তাপত্র দিয়ে থাকে। ফলে জনাব আদিবের ব্যবসায়িক কার্যক্রম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।