জনাব কবীর ‘ঐতিহ্য পরিবহন' নামে একটি যাত্রী পরিবহন ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন যে, এ বছর ঢাকা- ময়মনসিংহ রোডে বিশটি নতুন বাস নামাবেন। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য তিনি কর্মী নিয়োগ দিয়ে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেন। তিনি কর্মীদের জন্য উদ্দীপনামূলক কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তাদের নির্দেশনা দেন। এছাড়াও সঠিকভাবে কাজ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সংশোধনীমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এর ফলে ঐতিহ্য পরিবহনের কর্মীরা যাত্রী ও মালিকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ‘ঐতিহ্য পরিবহন' অল্পদিনেই সুনাম অর্জন করে।
ইউনুস কলেজের একটি বিভাগে সহকারি হিসাবে কাজ করে। একই সাথে তাকে কলেজের অন্য পরিচালনা সংক্রান্ত কাজ করতে হয়। পরীক্ষা কমিটির প্রধান বিভিন্ন সময় আদেশ দেন। এতে সে বিভাগের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারে না। অন্যদিকে তার বেতন কলেজে কর্মরত অন্যানা সহকারীর বেতনের সমান আবার কলেজে প্রতি শুক্রবার বিভিন্ন প্রোগ্রাম থাকার ফলে সে কোনো ছুটি ভোগ করতে পারে না। বিষয়গুলো তাকে প্রায়ই ব্যথিত করে ।
মতিউর সাহেব একজন অভিজ্ঞ কারখানা ব্যবস্থাপক। সিদ্ধান্ত গ্রহণে তিনি আবেগকে গুরুত্ব দেন না। তিনি কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা, বিদ্যুৎ প্রাপ্যতা ও কাঁচামাল সংক্রান্ত তথ্য বিবেচনা করে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেন। তারপর গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে লক্ষ্য বাস্তবায়নে অগ্রসর হন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না তাও তিনি পর্যবেক্ষণ করেন। ফলে মতিউর সাহেব নির্ধারিত ব্যয়ে সঠিক মানের পণ্য উৎপাদন করতে পারছেন ।
মিঃ মামুন সাভারে একটি গেঞ্জী তৈরির কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে তিনি প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের অবস্থা, ক্রেতার চাহিদ, কাঁচামালের প্রাপ্যতা সম্পর্কে সঠিকভাবে অবগত হন এবং তা বিশ্লেষণ করেন। কারখানা প্রতিষ্ঠার প্রথম বছরে এক লক্ষ্য গেঞ্জী তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেন এবং সে অনুযায়ী উৎপাদন ব্যবস্থাপককে নির্দেশ দেন। উৎপাদন ব্যবসথাপক উৎপাদনের যাবতীয় উপকরণের সমন্বয়ে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় উৎপাদনের কর্মপন্থা ঠিক করেন। ফলে বছর শেষে কারখানায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়। মিঃ মামুন উৎপাদিত গেঞ্জী বিক্রয় করে লাভবান হন।
মিঃ আজাদ একটি চামড়াজাত শিল্পের মালিক। তিনি প্রক্রিয়াজাত চামড়া থেকে ব্যাগ তৈরি করে রপ্তানী করেন। একদিন কারখানা ব্যবস্থাপক জানালেন যে, ক্রয়কৃত প্রক্রিয়াজাত চামড়া শতকরা বিশ ভাগ মানসম্মত নয়। এছাড়াও কারখানা ব্যবস্থাপক তার অধীনে ৪ জন ফোরম্যানের মাধ্যমে শ্রমিকদের দিয়ে ত্রুটিমুক্ত পণ্য উৎপাদন করতে পারছে না। ফলে পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে এবং মানও যথাযথ হচ্ছে না। মিঃ আজাদ কারখানা ব্যবস্থাপকের সমপর্যায়ে একজন চামড়াপণ্যে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। এর ফলে কারখানা ব্যবস্থাপক ক্রয়কৃত চামড়ার শতভাগ মান বজায় রাখতে সক্ষম হন এবং উৎপাদন ব্যয়ও অনেক কমে আসে।
মিঃ কামাল তার নতুন প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য একজন অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা খুঁজছেন। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার পুরানো প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞ এক ব্যক্তিকে নিয়োগের কথা বললেন। মিঃ কামাল এতে সম্মত হন। নতুন প্রতিষ্ঠানে কিছু সংখ্যক কনিষ্ঠ নির্বাহী নিয়োগের জন্য পার্শ্ববর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি টানিয়ে দিতে ম্যানেজারকে নির্দেশ দেন।
মিঃ ওয়াসী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক। প্রতিষ্ঠানের মালিক লক্ষ্য করলেন মিঃ ওয়াসী প্রায়ই দেরীতে কর্মস্থলে 8 আসেন এবং কাজে অমনোযোগী । তিনি একদিন মিঃ ওয়াসীকে ডেকে কথা বলেন এবং কাজে উদ্দীপ্ত করার জন্য তার পদের নাম পরিবর্তন করে হিসাব নির্বাহী করে দেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে মিঃ ওয়াসীর কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হয় না। এতে মালিক তাকে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে দেখা গেল মিঃ ওয়াসী ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছেন ।
মিঃ রহমান একটি কৃষি ফার্মের মালিক। বর্তমানে তিনি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কোনো আপোষ করেন না। ফার্মের কর্মীদের সাথে কোনো ধরনের পরামর্শ গ্রহণ না করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কর্মীরা তাদের সুযোগ-সুবিধার ব্যাপারে আলাপ করার জন্য কোনো সাহস পান না। কিন্তু তারপরও কোনো অসন্তোষ তাদের মাঝে নেই। মিঃ রহমান সামনে দাঁড়ালেই সবাই কৃতজ্ঞচিত্রে আপন করে কাজ করতে থাকেন।
মিঃ আতাউরের সাবান তৈরির কারখানায় শ্রমিকদের সাথে সুপারভাইজারের সাপ্তাহিক শ্রমঘণ্টার হিসাব নিয়ে হট্টগোল হয়। মিঃ 8 আতাউর সংবাদ পেয়ে তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মিঃ করিমকে দুপুরের খাবারের সময় শ্রমিকদের কেন্টিনে পাঠায়। মিঃ করিম শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন এবং নিজের মত করে শ্রমিকদের অসন্তুষ্টি দূর করেন। এদিকে মিঃ আতাউর সংবাদ পান কিছু লোক তার সাবান নকল করে বাজারজাতকরণ করেছে। তাৎক্ষণিকভাবে ক্রেতাদের অবগতি করার জন্য প্যাকেটের গায়ে ট্রেডমার্ক দেখে সাবান ক্রয়ের বিজ্ঞাপন টেলিভিশনে প্রচারের ব্যবস্থা নেন।
আব্দুর রহমান একটা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী। প্রতিষ্ঠানটি মিরপুর, ঢাকাতে অবস্থিত। অফিসের মার্কেটিং ম্যানেজার আব্দুর রহমানকে একটি চিঠি ঢাকার উত্তরায় একটি অফিসে দ্রুত দিয়ে আসতে বলে বাইরে চলে গেলেন। একটু পরেই একাউন্টস ম্যানেজার আরেকটি চিঠি তাকে দ্রুত মতিঝিলের একটি অফিসে জমা দিতে বললেন। ইতিপূর্বে প্রতিষ্ঠানের মালিক তার পিয়নকে বলেছিলেন আব্দুর রহমান যেন তার বাসায় যায়, যা পিয়ন আব্দুর রহমানকে বলতে ভুলে গেছে। আব্দুর রহমান দায়িত্ব পালন করতে সমস্যায় পড়লো ।
মিঃ শামীম একটি কাপড় তৈরি কারখানার মালিক। এ বছর তিনি দুই লক্ষ চল্লিশ হাজার মিটার কাপড় সরবরাহের একটি ফরমায়েশ পান। তার কারখানাটির বাৎসরিক কার্যদিবস ৩০০ দিন এবং দৈনিক ৮ ঘণ্টা উৎপাদন থাকে। তিনি কারখানা ব্যবস্থাপককে সেই অনুযায়ী উৎপাদনের নির্দেশ দেন। কিন্তু বছর শেষে হিসাব করে দেখলেন বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুই লক্ষ্য মিটার কাপড় উৎপাদন হয়, যা তিনি পূর্বে গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্য করেন নাই ।