জনাব সিকদার প্রতিষ্ঠানের সকল ক্ষমতা নিজের কাছে কেন্দ্রীভূত করে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। অধীনস্থদের মতামতের কোনো গুরুত্ব দেন না। ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অধীনস্তদের দ্বারা কাজ করিয়ে প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জন করেন। জনাব সিকদারের ভবিষ্যৎ উপলব্ধি ও অনুমান করার সামর্থ প্রবল হওয়ায় সময় উপযোগী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম হন। ফলে উল্লিখিত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে তিনি যোগ্য ও সফল ব্যবস্থাপক হিসেবে বিবেচিত।
বিক্রয় ব্যবস্থাপক শামীম নিজের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়ের কাজ বারবার সম্পাদন করতে হয়। তাই শামীমকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তিনি নগদে না বাকিতে পণ্য বিক্রি করবেন। অভিজ্ঞতার আলোকে পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে তিনি বাকিতে পণ্য বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
জনাব মাহিন ও রবিন একটি মোবাইল সেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন ব্যবস্থাপক। জনাব মাহিন তার অধীনে কর্মরত কর্মীদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন। তিনি কর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন না, শাস্তিও প্রদান করেন না । অপরদিকে জনাব রবিন কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন, ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন ও শাস্তির ভয় দেখিয়ে কাজ আদায়ের চেষ্টা করেন।
“বিটা লিঃ” এ কর্মীদের জন্য ক্লাব ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে কর্মীরা অবসর সময়ে পেপার দেখেন, টিভি দেখেন এবং গল্প করেন। কর্মীরা এ সময় প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সমস্যা নিয়েও আলোচনা করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ অধস্তন কর্মীদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করেন। অধস্তনগণও নির্ভয়ে তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। প্রতিষ্ঠানটিতে এরূপ যোগাযোগের ক্ষেত্রে কর্তৃত্ব প্রবাহের দিক থেকে কে কার অধীন তা বিবেচনা করা হয় না ।
আরবার সিরামিক্স-এর প্রধান কার্যালয় মানিকগঞ্জে। সাভার ও আশুলিয়ায় এর আরো দুইটি কারখানা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ব্যবস্থাপকের জারীকৃত নির্দেশনা সাভার ও আশুলিয়ায় পৌঁছাতে প্রায়ই বিলম্ব হয়। এতে উৎপাদন সমন্বয়ে অসুবিধা হয় ৷ বর্তমানে পত্রবাহক বা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে নির্দেশনা পাঠানো হয়। এজন্য উৎপাদন ব্যবস্থাপক তিনটি ফ্যাক্স মেশিন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনও বিষয়টি অনুমোদন করেন নি, কারণ সম্বয়ের নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানের জন্য ফ্যাক্স মেশিন ক্রয়ের বিধান নেই। ফলে উৎপাদন ব্যবস্থাপক গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারছেন না ।
সোনালী লিঃ একটি উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০১৮ সালে ১,০০,০০০ একক পণ্য উৎপাদিত হয়। প্রতি একক পণ্য উৎপাদনে কাঁচামাল প্রয়োজন ১,০০০ টাকা এবং এককপ্রতি মজুরি ২০০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির বিল্ডিং ভাড়া ২,৫০,০০০ টাকা, বিদ্যুৎ বিল ৫০,০০০ টাকা এবং কর্মকর্তাদের বেতন ৫,০০,০০০ টাকা । প্রতিটি পণ্যের বিক্রয় মূল্য ২০০০ টাকা ।
জনাব নাসির একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থপক। তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে দিন রাত কাজ করেন। নির্ভুল ও যথাসময়ে কাজ করায় তিনি ব্যস্ত। প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধানের নাসির কর্মীদের মতামতকে গুরুত্ব দেন। পক্ষান্তরে ফাহিম অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার। তিনি আন্তরিকতার সাথে কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনা করেন। তার ধারণা কর্মীরা দক্ষ ও আন্তরিক হলে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে ৷
জনাব তামিম প্রতিষ্ঠানের নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা গ্রহণ ও কৌশল নির্ধারণ সংক্রান্ত কাজের সাথে জড়িত। মাঝে মধ্যে তিনি কর্মীদের নির্দেশনাও দিয়ে থাকে। তাঁর প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু তামিমের পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত জ্ঞান নেই । তাই তিনি জনাব তিতুমিরকে বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। তিতুমির প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্তৃত্ব বা ক্ষমতা ভোগ করেন না ।
PQ একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। PQ এর বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে যথা মানব সম্পদ, ঋণ, বৈদেশিক লেনদেন, সাধারণ ব্যাংকিং ইত্যাদি। জনাব রবিন PQ ব্যাংকে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। তাঁকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন বিভাগে কাজের জন্য পদায়ন করা হয়। জনাব রবিন ব্যাংক থেকে প্রত্যাশিত বেতন-ভাড়া পেয়ে থাকেন। তাছাড়া তাঁর চাকরিও স্থায়ী হয়েছে। তাই তিনি এখন আত্মীয়-স্বজন ও অন্যদের সাথে মিলেমিশে চলতে চান এবং সকলের ভালোবাসা চান ।